স্টান্ট ডিরেক্টর হিসেবে বলিউডের একাধিক বড় বড় সিনেমায় কাজ করেছেন বলিউড অভিনেতা ভিকি কৌশলের বাবা শ্যাম কৌশল। স্টান্টম্যান হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করলেও অল্প দিনের মধ্যে ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের জায়গা করে নেন শ্যাম। দঙ্গল, বাজিরাও মাস্তানি, পদ্মাবত, কৃশ ৩-র মতো ছবিতে কাজ করেছেন তিনি।
এত সফলতার মধ্যে থাকলেও একটা সময় জীবনের প্রতি ভালোবাসা হারিয়ে ফেলেন শ্যাম। আত্মহত্যার কথাও ভেবেছিলেন তখন। ক্যারিয়ারের দারুণ সাফল্যের সময় ক্যানসার ধরা পড়ে তার শরীরে। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে সেই সময়ের লড়াই নিয়ে কথা বলেন এ গুনীজন।
১৯৯০ সালে মালায়লাম সিনেমায় অ্যাকশন ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করেন শ্যাম। আর বলিউডে অ্যাকশন ডিরেক্টর হিসেবে প্রথম কাজ নানা পাটেকরের `প্রহার`।
২০০৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে পাকস্থলীর ক্যানসার ধরা পড়ে শ্যাম কৌশলের। সে প্রসঙ্গে তিনি এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ``শুট সেরে তখন সবে লাদাখ থেকে ফিরেছি। পেটে সমস্যা শুরু হয়। শ্যাম বেনেগালের `নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোস`-এর কাজ চলছে। দিওয়ালির কারণে একদিন ছুটি ছিল। পেটে অসম্ভব যন্ত্রণা। পরদিন নানাবতী হাসপাতালে ভর্তি হই। ওরা আমার পেটে একটা অপারেশন করে। অনেক জটিলতা ছিল। এর আগে একবার আমি ওই হাসপাতালে গিয়েছিলাম নানা পাটেকরের সঙ্গে অ্যাপেনডিক্স অপারেশনের জন্য। তাই ওরা আমাকে চিনত।
ডাক্তাররা নানা পাটেকরকে ফোন করে। নানাজি তখন পুনেতে শুট করছে, সব ছেড়ে চলে আসেন সোজা হাসপাতালে। আমি তখন অজ্ঞান। আমার পেটে একটা ইনফেকশন ছিল। সেটা কেটে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। দেখা যায় ক্যানসার হয়েছে। আমি নিশ্চিত ছিল না, আমি বাঁচব না মরব। এর আগে এটা নিয়ে কারও সঙ্গে সেভাবে কথা বলিনি। ৫০ দিন হাসপাতালে ছিলাম। তারপর কাজে ফিরেছিলাম। তারপর ১ বছর আমাকে নজরদারিতে রাখা হয়েছিল। সৃষ্টিকর্তার কৃপায় ক্যানসারটা ছড়ায়নি। ওই ঘটনার ১৯ বছর হয়ে গিয়েছে।``
সেইসময় যে মানসিক দ্বন্দ্ব চলছিল মনে তা নিয়েও শ্যাম কৌশল বলেন, ``আমি তো এটাও ঠিক করেছিলাম হাসপাতালের তিন তলা থেকে ঝাঁপ দিয়ে নিজের জীবন দেব। কারণ আমি ওভাবে বাঁচতে চাইনি। কিন্তু পেটের অপারেশনের কারণে সেই সময় বিছানা থেকে ওঠার মতো অবস্থাও আমার ছিল না। আমি ঈশ্বরকে বলি, `এটা শেষ করে দিন দয়া করে। আমার কোনও আফসোস নেই। গ্রাম থেকে এসেছি, আপনার আশীর্বাদে অনেক কিছু করেছি। কিন্তু আপনি যদি আমাকে বাঁচাতে চান এভাবে দুর্বল করে দেবেন না।` এরপর আমার মন শান্ত হয় অনেকটা।``