• ঢাকা
  • সোমবার, ১৯ মে, ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ২০ জ্বিলকদ ১৪৪৬

পিএসসির নতুন নিয়মে ক্ষোভ প্রকাশ নন-ক্যাডার প্রার্থীদের


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৬, ২০২২, ০৫:০৫ পিএম
পিএসসির নতুন নিয়মে ক্ষোভ প্রকাশ নন-ক্যাডার প্রার্থীদের

বিসিএস নন-ক্যাডার নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) নতুন নিয়মে হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ৪০তম বিসিএস পরীক্ষায় অপেক্ষমাণ নন-ক্যাডার প্রার্থীরা। কম সংখ্যক পদে নিয়োগ ও নিয়োগে দীর্ঘসূত্রিতা বাড়ার আশঙ্কা থেকে নতুন নিয়ম বাতিল করে আগের পদ্ধতিতেই নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।

রোববার (১৬ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ‘৪০তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ নন-ক্যাডার তালিকার অপেক্ষমাণ প্রার্থীবৃন্দের’ ব্যানারে প্রায় চার শতাধিক নন-ক্যাডার প্রার্থী বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড হাতে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন।

সমাবেশে তারা বলেন, “বিজ্ঞপ্তিতে ৪০-৪৪তম বিসিএস পর্যন্ত নন-ক্যাডার পদের সংখ্যা উল্লেখ করা হয়নি এবং ৪০তম নন-ক্যাডার পদ ৩৬, ৩৭ ও ৩৮তম বিসিএসকে প্রদান করা হয়েছে। তাই এ সব বিসিএসে বিজ্ঞপ্তির তারিখওয়ারি নন-ক্যাডার পদ বিভাজনের মাধ্যমে পদসংখ্যা নির্ধারণের সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে। করোনা মহামারির কারণে দীর্ঘসময় আটকে থাকা ৪০তম বিসিএস উত্তীর্ণ নন-ক্যাডার প্রার্থীদের থেকে সর্বোচ্চ সংখ্যক সুপারিশ করতে হবে এবং ৩৪-৩৮তম বিসিএস নন-ক্যাডার তালিকা যেভাবে প্রকাশ হয়েছে সেভাবে সমস্যার সমাধান করতে হবে।”

সমাবেশে ৪০তম বিসিএসে নন ক্যাডারে মনোনীত মোহাম্মদ মুসা বলেন, “৪০তম বিসিএস নন ক্যাডারের ২০১৮ সালের প্রজ্ঞাপনের ভিত্তিতে ২০২২ সালের ৩০ মার্চ ফলাফল দেওয়া হয়েছে। যখন একটা বিসিএসের চূড়ান্ত ফলাফল হয়ে যায়, তখন ওই বিসিএসের জন্য নতুন কোনো বিধিমালা কার্যকর হওয়ার কথা না। পূর্ববর্তী বিসিএসে নিযোগ প্রক্রিয়ায় যে ধারাবাহিকতা ছিল সেই অনুযায়ী ৩৮তম বিসিএস নন ক্যাডার নিয়োগ পেয়েছে। একই নিয়মে ৪০ থেকে ৪৪ পর্যন্ত আগের নিয়মে নিয়োগ পাওয়ার কথা। কিন্তু পিএসসি চলাকালীন বিসিএসের শেষ প্রান্তে এসে ৪০তম বিসিএসের জন্য নতুন একটি নিয়ম চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। নতুন নীতিমালায় বলা হয়েছে যে প্রজ্ঞাপনের সময়কার খালি পদ অনুযায়ী নিয়োগ দেওয়া হবে। যা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।”

তিনি আরও বলেন, “নন ক্যাডার বিধিমালা ২০১০ ও সংশোধিত বিধিমালা ২০১৪ এর ধারা ৫ এর ৩ উপধারায় পরবর্তী বিসিএসের চূড়ান্ত পরাফল ঘোষণা পর্যন্ত পর্ববর্তী বিসিএসের নন ক্যাডারদের একাধিক তালিকা দিতে পারে। আমাদের ছয় মাস অপেক্ষা করিয়েছে। পিএসসি কোনো দপ্তর বা অধিদপ্তরে সুযোগ দেওয়ার জন্য আমাদের বঞ্চিত করছে। কী কারণে এই পদগুলোকে বিভাজিত করতে চাচ্ছে। যেই বিসিএসের প্রজ্ঞাপন এখনো দেয়নি সেটার জন্য পদ সংরক্ষণ করছে কেন।? “

সমাবেশে অন্যান্য বক্তারা বলেন, “আমাদের অনেক ভাই আছেন যারা চাকরির বয়স হারিয়েছেন। আমাদের দাবি দাওয়া না মানা হলে তারা আমরণ অনশনে বসার জন্য প্রস্তুত আছেন। আমাদের দাবি সমূহ দ্রুততম সময়ের মধ্যে মেনে না নিলে এখানেই আমরা আমরণ অনশন করব।”

অবিলম্বে ছয় দফা দাবি মেনে নিতে তারা সরকার ও পিএসসির প্রতি আহ্বান জানান আন্দোলনরতা। এসময় তারা ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায়, বৈষম্যের ঠাই নাই’, ‘পিএসসির সীদ্ধান্ত, মানি না মানব না’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।

তাদের ছয় দফা দাবিগুলো হলো—

১. যেহেতু বিজ্ঞপ্তিতে ৪০-৪৪তম বিসিএস পর্যন্ত নন আভার পদের সংখ্যা উল্লেখ করা হয়নি। সেহেতু বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন কর্তৃক বিজ্ঞপ্তির পরে ৪০ থেকে ৪৪তম বিসিএস পর্যন্ত বিভ্রান্তির তারিখওয়ারী নন-ক্যাডার পদ বিভ্রাজনের মাধ্যমে পদসংখ্যা নির্ধারণের এই বেকারবিরুদ্ধ ও অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত বাতিল করা।

২. বিজ্ঞপ্তির তারিখওয়ারী পদ বিভাজনের যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, সেখানে ৪০তম বিসিএস নন-ক্যাডার এর পদ ৩৬, ৩৭ ও ৩৮তম বিসিএসকে প্রদান করা হয়েছে। সুতরাং তারিখওয়ারী পদ বিভাজনের এই সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ অযৌক্তিক এবং অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত বাতিল করা।

৩. করোনা মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত ইতিহাসের দীর্ঘকালীন ৪০তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ নন-ক্যাডার অপেক্ষমাণ তালিকায় থাকা প্রার্থীদের থেকে সর্বোচ্চ সংখ্যক প্রার্থীকে নন-ক্যাডারে সুপারিশ করা।

৪. যে প্রক্রিয়া অনুসরণ করে পিএসসি গত ২৯ মার্চ তারিখ পর্যন্ত ৩৪-৩৮তম বিসিএস নন-ক্যাডার তালিকা প্রকাশ করেছে, সেই প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বর্তমান উদ্ভুত সমস্যার সমাধান করা।

৫. বাংলাদেশের শিক্ষিত ও মেধাবী ছাত্রসমাজকে পিএসসি মুল বক্তব্য আড়াল করে অর্থাৎ ‘যার যা প্রাপ্য তাকে তাই দেওয়া হবে’ এই ভিত্তিহীন কথা বলে যে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে তার সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে হবে এবং বেকার সৃষ্টির এই অপপ্রয়াস অনতিবিলম্বে বন্ধ করে বেকারবান্ধব নীতি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা।

৬. বিগত এক যুগে পিএসসি যে স্বচ্ছ, নির্ভরযোগ্য ও বেকারবান্ধব প্রতিষ্ঠান ছিল, সেই ধারা অব্যাহত রাখা।

শিক্ষা বিভাগের আরো খবর

Link copied!