একাদশ শ্রেণিতে ভর্তিতে দ্বিতীয় ধাপে ২ লাখ ৯৪ হাজার আবেদনকারীর মধ্যে কলেজ পায়নি ২২ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে রয়েছে জিপিএ-৫ পাওয়া ২ হাজার ২৯১ শিক্ষার্থীও। এর আগে প্রথম ধাপে আবেদন করেও কলেজ পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয় সাড়ে ৮ হাজার জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীসহ মোট ৪৫ হাজার আবেদনকারী।
ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক আবু তালেব মো. মোয়াজ্জেম হোসেন রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় এ তথ্য জানান।
অধ্যাপক আবু তালেব মো. মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, দ্বিতীয় ধাপে ২ লাখ ৯৪ হাজারের কিছু বেশি শিক্ষার্থী আবেদন করে। তাদের মধ্যে কলেজ পেয়েছে ২ লাখ ৭২ হাজার ৮৭০ জন। এ ধাপেও কলেজ না পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২২ হাজারের বেশি। এর মধ্যে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থী ২ হাজার ২৯১ জন। প্রথম ধাপে কলেজ পাওয়াদের মধ্যে ২৩ হাজার শিক্ষার্থী মাইগ্রেশনে নতুন কলেজ পেয়েছে।
জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের কলেজ না পাওয়ার বিষয়ে অধ্যাপক আবু তালেব মো. মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, “তারা ওভার কনফিডেন্ট হয়ে একটা-দুইটা কলেজ পছন্দক্রমে দিয়েছিল। তাদের যে নম্বর, তাতে সেসব কলেজ পায়নি। এখন তাদের তৃতীয় ধাপে আবেদন করতে হবে। সেক্ষেত্রে আরও খারাপ কলেজও তাদের ভাগ্যে জুটতে পারে।”
তিনি আরো বলেন, ‘কিছু কলেজ আছে, যারা জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের নিশ্চয়তা দিয়ে জিম্মি করে রাখে। তারা অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়া ছাড়াই ভর্তি করিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। এটা কিছুতেই করতে দেওয়া হবে না। গতবারও আমরা এটা দেইনি, এবারও কেউ সুযোগ পাবেন না।’
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি সূত্র জানায়, এবার এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় পাস করে প্রায় সাড়ে ১৬ লাখ শিক্ষার্থী। তার মধ্যে কারিগরি বোর্ডের শিক্ষার্থী ছিলেন ১ লাখের কিছু বেশি। বাকি সাড়ে ১৫ লাখ শিক্ষার্থীর অনলাইন আবেদনের মাধ্যমে একাদশে ভর্তি হওয়ার কথা। এদিকে প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপ মিলিয়ে এ পর্যন্ত একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি প্রক্রিয়ায় রয়েছে ১২ লাখ ৫১ হাজার ৯২৮ জন শিক্ষার্থী।
ভর্তির প্রথম ধাপে আবেদন করে ১৩ লাখ ৭ হাজার শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে কলেজ পায় ১২ লাখ ৬১ হাজার। আর ভর্তি হবে বলে নিশ্চিত (নিশ্চায়ন) করে ১০ লাখ ২৬ হাজার শিক্ষার্থী।
অন্যদিকে দ্বিতীয় ধাপে আবেদন করে ২ লাখ ৯৪ হাজারের মতো শিক্ষার্থী। কলেজ পেয়েছে ২ লাখ ৭২ হাজার। প্রথম ধাপে নিশ্চায়ন করা এবং দ্বিতীয় ধাপে কলেজ পেয়ে প্রাথমিক নির্বাচিত হওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা সাড়ে ১২ লাখের মতো। বাকি সাড়ে ৩ লাখ শিক্ষার্থী ভর্তি প্রক্রিয়াতে নেই।
শিক্ষার্থীদের বড় একটি অংশ কলেজে ভর্তিতে আগ্রহ না থাকার বিষয়ে আবু তালেব মো. মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘দেখুন, সবাই তো কলেজ-মাদ্রাসায় ভর্তি হয়ে একাদশে পড়ে এইচএসসি বা আলিম পরীক্ষা দেবে না। বড় একটি অংশ মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট, মিডওয়াইফারি, নার্সিং, মেডিকেল ডিপ্লোমা, পলিটেকনিকের বিভিন্ন ডিপ্লোমা, এগ্রিকালচার ডিপ্লোমার দিকে ঝুঁকেছে। কিছু শিক্ষার্থী আবার বিদেশে চলে গেছে। অনেকে পারিবারিক প্রয়োজনে চাকরিতেও ঢুকে গেছে।’
এবার তৃতীয় ধাপের পর আবারও সময় বাড়ানো হবে কি না সেটা পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান আবু তালেব মো. মোয়াজ্জেম হোসেন।
এদিকে, দ্বিতীয় ধাপে কলেজ পাওয়া শিক্ষার্থীদের নিশ্চায়ন চলছে। রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে ৩৩৫ টাকা ফি দিয়ে নিশ্চায়ন করতে পারছে শিক্ষার্থীরা। সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টা পর্যন্ত এ নিশ্চায়নের সুযোগ পাবে তারা। কলেজ পেয়েও কেউ নিশ্চায়ন না করলে তার প্রাথমিক নির্বাচন বাতিল বলে বিবেচিত হবে।
আগামী ২০ ও ২১ সেপ্টেম্বর তৃতীয় পর্যায়ের আবেদন নিয়ে ২৩ সেপ্টেম্বর ফল প্রকাশ করা হবে। দ্বিতীয় ধাপেও কলেজ না পাওয়া শিক্ষার্থীরা তৃতীয় ধাপে আবেদনের সুযোগ পাবে। ২৪ ও ২৫ সেপ্টেম্বর তৃতীয় ধাপের নির্বাচন নিশ্চায়ন শেষে ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি কার্যক্রম চলবে।
৮ অক্টোবর থেকে একাদশ শ্রেণিতে ক্লাস শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।