বন্ধুকে উচ্চস্বরে ডাকার কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের এক শিক্ষার্থীকে লাঠি দিয়ে আঘাত করার অভিযোগ উঠেছে এক সেনা সদস্যের বিরুদ্ধে। পরে প্রক্টরিয়াল টিম ও ঊধ্বর্তন সেনা কর্মকর্তার হস্তক্ষেপে বিষয়টির সমাধান হয়।
শুক্রবার (১ নভেম্বর) রাত ৯টায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ২ নম্বর গেটের সামনে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার কিছুক্ষণ পর প্রক্টরিয়াল টিমের উপস্থিতিতে ওই সেনা সদস্য ক্ষমা চান।
প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ সেনা কর্মকর্তার উদ্দেশে বলেন, “ক্যাম্পাসকে ছাত্র-ছাত্রীরা নিজেদের বাড়ি মনে করে স্বাচ্ছন্দ্যে বিচরণ করে। যদি কোনোরকম অসুবিধা হয়, আমাদের খবর দেবেন।”
সেনা কর্মকর্তা ফেরদৌস ছাত্রদের উদ্দেশে বলেন, “ওই সেনা সদস্য যা শাস্তি, তার থেকে বেশি পাবেন। আপনারা এ বিষয়ে আমাকে বিশ্বাস করেন। আমি আপনাদের জায়গা থেকে উঠে আসা। আপনাদের এখানে পড়াশোনা করা একজন ছাত্র। এতটুকু ভরসা আমার ওপর রাখেন।”
ভুক্তভোগীদের মধ্যে দুইজন ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হল এবং একজন ফজলুল হক মুসলিম হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। তারা তিন জনই ২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এবং ফলিত গণিত বিভাগে অধ্যয়নরত।
তাদের একজনের ভাষ্যমতে, তারা তাদের এক বন্ধুকে শহীদ ড. মোহাম্মদ মুর্তজা মেডিক্যাল সেন্টারে রেখে স্কুটারে চড়ে হলের দিকে যাচ্ছিলেন। সে সময় তাদের বিভাগেরই এক বন্ধুকে রাস্তার অপর পাশে দেখতে পেয়ে ‘এই’ বলে জোরে ডাক দেন। এরপর ঢামেকের ২ নম্বর গেটে কর্মরত ওই সেনা সদস্য তাদের ডাক দেন।
সেনা সদস্য তাদের ঘাড়ে হাত দিয়ে ‘আসেন একটু কথা আছে’ বলে ২ নম্বর গেটের ভেতরে নিয়ে যান এবং জিজ্ঞেস করেন, স্কুটারের চালক কে ছিল। চালক সামনে যাওয়ার পর তাকে হাত উঁচু করতে বলে একটি লাঠি দিয়ে শরীরের পিছনের অংশে আঘাত করেন। স্কুটারে চালকের পর কে বসা ছিল তা জিজ্ঞেস করে তাকেও সামনে আসতে বলেন এবং আবারও হাত উঁচু করতে বলেন। কী অভিযোগ জিজ্ঞেস করলে সেনা সদস্য বলেন. “তোমরা পাবলিক প্লেসে শাউট করছো কেন?”
এ ঘটনার পর ওই শিক্ষার্থীরা হলে যান এবং পরে ঢাবির প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদকে কল দেন। প্রক্টোরিয়াল টিম ঊধ্বর্তন সেনা কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং তিনি এলে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টির নিষ্পত্তি হয়।
এ ঘটনার প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক মশাল মিছিল করে ছাত্র ইউনিয়ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা। মিছিলটি ঢাকা ঢাবির টিএসসি থেকে বের হয়ে হল পাড়া প্রদক্ষিণ করে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেয়। সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য দেন ঢাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক মাঈন আহমেদ ও ছাত্র ইউনিয়নকর্মী মোহাম্মদ মুস্তাকিম।
মাঈন আহমেদ বলেন, “সেনাবাহিনীর স্বেচ্ছাচারী ও কর্তৃত্ববাদী আচরণকে কীভাবে রুখে দিতে হয় তা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভালোই জানা আছে। আপনাদের আগস্ট বিদ্রোহের কথা মনে করিয়ে দিতে চাই। কাজেই সাবধান হয়ে যান।”

















-20251028132147.jpg)




















