• ঢাকা
  • রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শহীদ মিনারেই স্বাধীনতা ও বিজয় দিবসের শ্রদ্ধা


টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মার্চ ২৬, ২০২২, ১০:৪৭ এএম
শহীদ মিনারেই স্বাধীনতা ও বিজয় দিবসের শ্রদ্ধা

টাঙ্গাইলের কালিহাতী মুক্তিযুদ্ধের সূতিকাগার। এখানে জন্ম নিয়েছেন বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকী, আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, শাহজাহান সিরাজ ও আবু সাঈদ চৌধুরী। ইতিহাসের সঙ্গে এই নামগুলো জড়িয়ে আছে। আশ্চর্য হলেও সত্য, স্বাধীনতার ৫১ বছর পরও উপজেলায় মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য নির্মিত হয়নি কোনো স্মৃতিসৌধ। এমনকি এ ব্যাপারে নেই সুস্পষ্ট কোনো উদ্যোগও।

শহীদ মিনারের সৃষ্টি ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য। কিন্তু কালিহাতীতে পাল্টে গেছে এই সংজ্ঞা। মাতৃভাষা দিবস, স্বাধীনতা দিবস কিংবা বিজয় দিবস- সব জাতীয় দিবসে কালিহাতীবাসীর শ্রদ্ধা জানানোর একমাত্র স্হান কালিহাতী আরএস সরকারি পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে অবস্থিত শহীদ মিনার।

মুক্তিযুদ্ধের অনেক গৌরবদীপ্তের সাক্ষী টাঙ্গাইলের কালিহাতী। অথচ এই অঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধাদের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য এখানে নেই কোনো স্মৃতিসৌধ। এটি একই সঙ্গে বিস্ময়কর ও হতাশাজনক। নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস পৌঁছানো এবং মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি যথার্থ সম্মান প্রদর্শনের স্বার্থে কালিহাতীতে একটি স্মৃতিসৌধ থাকা উচিত।

কালিহাতীর সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতারা, বীর মুক্তিযোদ্ধারা ও সচেতন নাগরিক সমাজের দাবি শিগগিরই এ বিষয়ে সুস্পষ্ট উদ্যোগ গ্রহণ করা হোক। অন্তত আগামী প্রজন্মের শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের জন্য রেখে যাওয়া হোক কোনো সৌধ।

এ বিষয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী আশরাফ হুমায়ুন বাঙাল বলেন, “স্মৃতিসৌধের বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া দরকার এবং আরও বহু আগেই হওয়া উচিত ছিল। কালিহাতীতে জন্ম বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকী, আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, শাহজাহান সিরাজ ও আবু সাঈদ চৌধুরীর। বাংলাদেশের ইতিহাসের এই নামগুলো জড়িয়ে আছে। সেখানে একটি স্মৃতিস্তম্ভ হলে সৌধের এক পাশে তাদের স্মৃতিমাখা কিছু কথা লেখা থাকবে আর অন্য পাশে কোম্পানি কমান্ডারদের কিছু কথা লেখা থাকলে নতুন প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হতো। মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমরা মনে করি বঙ্গবন্ধুর কন্যার আমলেই সরকারিভাবে এ উদ্যোগ নেওয়া উচিত। আমরা মুক্তিযোদ্ধারা সবরকম সহযোগিতা করব।”

প্রায় একই আশাবাদ ব্যক্ত করে বীর মুক্তিযোদ্ধা তোফাজ্জল হোসেন বলেন, “কালিহাতী মুক্তিযুদ্ধের সূতিকাগার। এখানে যেহেতু অনেক ইতিহাস, যুদ্ধের সাক্ষী ও মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহ্য রয়েছে, তাই অবশ্যই একটি স্মৃতিসৌধ হওয়া দরকার। আমরা আগেও প্রশাসনিকভাবে আবেদন করেছি, দাবি জানিয়েছি। এমপি মহোদয়সহ প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা যদি স্মৃতিসৌধ নির্মাণের উদ্যোগ নেন তবে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালনের এই সময়ে সেটি হবে প্রশংসিত উদ্যোগ। আমরাও এ বিষয়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেব।”

স্মৃতিসৌধ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুল হুসেইন বলেন, “আমি নিজে এসেও প্রথমে খেয়াল করেছি। এটা অবশ্যই হওয়া উচিত বলে মনে করি। আমরা চিন্তাভাবনা করছি এবং অলরেডি জায়গা খোঁজছি।”

স্থানীয় সংসদ সদস্য হাছান ইমাম খান সোহেল হাজারী বলেন, “এটি একটি ভালো উদ্যোগ। খুব তাড়াতাড়িই আমরা স্মৃতিসৌধ  নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করব।”

Link copied!