ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলায় স্ত্রীকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ফেরত দেওয়ার জন্য ভাগিয়ে নিয়ে যাওয়া ছেলের পরিবারকে বলা হয়েছে। এর মধ্যে ওই তরুণীকে উপস্থিত করতে না পারলে ছেলের বাবাকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা দিতে হবে।
রোববার (৩০ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় উপজেলার কাইচাইল ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে এক সালিসে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সোমবার (৩১ জানুয়ারি) বিকেলে উপজেলার কাইচাইল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোস্তফা খান এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
ওই তরুণীর স্বামী শাহিন ফকির বলেন, “আনিস মাতুব্বর আমার স্ত্রীকে ফুসলিয়ে ভাগিয়ে নিয়ে গেছে। আমার স্ত্রী ৩ ভরি গহনা এবং ২ লাখ টাকা নিয়ে আমার বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। আনিস এর আগেও ভাঙ্গা থেকে এক নারীকে একইভাবে ভাগিয়ে নিয়ে এসে তার সব টাকা আত্মসাৎ করেছে ওই মেয়েকে তাড়িয়ে দেয়।”
নগরকান্দা পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান জিয়া জানান, শাহিন ফকিরের স্ত্রীকে প্রায় এক মাস আগে ভাগিয়ে নিয়ে যায় একই গ্রামের মুন্নু মাতব্বরের ছেলে আনিস মাতুব্বর। এ ঘটনায় দুই পরিবারের মধ্যে গত ২৬ তারিখে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। সংঘর্ষে দুই পক্ষ ইট-পাটকেল দেশি অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হলে প্রায় ১২ জন আহত হন।
তিনি আরও জানান, আনিস মাতুব্বরের বিরুদ্ধে এর আগেও এ রকম দুটি মেয়েকে ভাগিয়ে নিয়ে আসার ঘটনা আছে। সে ঘটনায় একটি মামলা ও আরেকটা সালিসের মাধ্যমে মীমাংসা হয়। তিন দিনের মধ্যে ওই মেয়েকে জীবিত হাজির করে তার শ্বশুরবাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তা দিতে ব্যর্থ হলে ৫ লাখ টাকা জরিমানা এবং পরবর্তী সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাদের বিচার করা হবে।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নগরকান্দা সার্কেল) সুমিনুর রহমান বলেন, “সংঘর্ষের ঘটনায় দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ রয়েছে। ঘটনার পর থেকে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক।” তিনি আরও বলেন, “শুক্রবার ও শনিবার এলাকার বিভিন্ন বাড়িতে অভিযান চালিয়ে প্রায় শতাধিক দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। ওই ঘটনায় একটি মামলা করা হয়েছে।”
প্রসঙ্গত, ফরিদপুরের নগরকান্দায় এক তরুণের স্ত্রীকে ভাগিয়ে নিয়েছে অপর এক তরুণ। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় কমপক্ষে ১২ জন আহত হয়। গত বুধবার (২৬ জানুয়ারি) দুপুরের দিকে উপজেলার কাইচাইল ইউনিয়নের পোড়াদিয়া বাজার এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
আহতদের মধ্যে দুইজনকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং তিনজনকে নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। অন্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।