পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের উদ্বোধন ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১৩২০টি পায়রা উড়িয়ে দেশের বৃহৎ ১৩২০ মেগাওয়াটের এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
সোমবার (২১ মার্চ) বেলা ১১টা ৪৮ মিনিটে বিদ্যুৎকেন্দ্রের উদ্বোধন ঘোষণা করেন তিনি।
এর আগে বেলা ১০টা ৪৫ মিনিটে হেলিকপ্টারে ঢাকা থেকে পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। এ সময় তাকে বাংলাদেশ পুলিশের সদস্যরা গার্ড অব অনার প্রদান করেন। এরপর কোল জেটিতে ২০০ নৌকা থেকে পতাকা নাড়িয়ে ও জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে তাকে অভিবাদন জানানো হয়।
বাংলাদেশ চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (বিসিপিসিএল) সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ও চীনের যৌথ বিনিয়োগে ২০১৪ সালে বাংলাদেশ নর্থওয়েস্ট পাওয়ার কোম্পানি ও চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি করপোরেশনের (সিএমসি) মধ্যে পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ধানখালীতে কয়লাভিত্তিক এ বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নির্মাণ শুরুর পর ২০২০ সালের ১৫ মে প্রথম ইউনিটের ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন করে জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (বিসিপিসিএল)। পরে একই বছরের ৮ ডিসেম্বর আল্ট্রা সুপার প্রযুক্তি ব্যবহার করে দ্বিতীয় ইউনিটের ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে এ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি।
এক হাজার একর জমির ওপর নির্মিত এ বিদ্যুৎকেন্দ্রটির প্রথম ফেজ নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ২.৪৫ বিলিয়ন ডলার। প্রতিদিন এ কেন্দ্র চালু রাখতে প্রয়োজন হবে ১৩ হাজার মেট্রিক টন কয়লা। এ কেন্দ্র থেকে দ্বিতীয় ফেজে আরও ১৩২০ মেগাওয়াট, অর্থাৎ ২৬৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে ২০২৪ সাল নাগাদ যুক্ত হবে বলে আশাবাদী কোম্পানি সংশ্লিষ্টরা।
পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট থার্মাল পাওয়ার প্লান্টের প্রকল্প পরিচালক শাহ মোহাম্মদ গোলাম মাওলা সাংবাদিকদের জানান, কোভিড মহামারির প্রতিকূলতার মধ্যেও কোনোরকম ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়া প্রথম ফেজে দুটি ইউনিটকে উৎপাদনে আনতে সক্ষম হয়েছেন তারা। তিনি দাবি করেন, ২.৪৫ বিলিয়ন ডলারের এ প্রকল্পে ১০০ মিলিয়ন ডলার কম খরচ হয়েছে। বর্তমানে তারা ১৩২০ মেগাওয়াট উৎপাদনে সক্ষম হলেও সঞ্চালন লাইনের কাজ সমাপ্ত না হওয়ায় পুরো ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে দিতে পারছে না। পায়রা থেকে গোপালগঞ্জ পর্যন্ত সঞ্চালন লাইন নির্মাণ শেষ হলেও গোপালগঞ্জ থেকে আমিন বাজার পর্যন্ত লাইনের কাজ এখনো শেষ হয়নি। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে লাইনের কাজ শেষ হলে পুরো ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা সম্ভব হবে।