কুমিল্লায় বাইক চালানোয় আগ্রহী হচ্ছেন নারীরা। জেলার সড়ক-মহাসড়কগুলোতে প্রায়ই স্কুটি ও মোটরসাইকেল চালাতে দেখা যাচ্ছে নানা বয়সী নারীদের। পারিবারিক ও পেশাগত প্রয়োজনেই বাইক নিয়ে ছুটছেন তারা। অফিস-আদালত, স্কুল-কলেজ কিংবা আড্ডায় যেতে ব্যক্তিগত বাহন হিসেবে নারীদের কাছে দিন দিন জনপ্রিয় উঠছে স্কুটার। পরিমিত খরচ আর ঝামেলাবিহীন চলাচলে গৃহিণী থেকে শুরু করে স্কুলগামী ছাত্রীরা পর্যন্ত এখন হয়ে যাচ্ছেন বাইকার। অভিভাবকদের কাছ থেকেও তারা পাচ্ছেন সমর্থন ও সহযোগিতা।
নজরকাড়া জামা কিংবা শাড়ি আর মাথায় হেলমেট পরে নানা রঙের স্কুটার নিয়ে শুক্রবার ছুটির দিনে কুমিল্লা শহর ঘুরতে বেরিয়েছেন একদল নারী। পেশাদার বাইকারদের মতোই পরিবারের সদস্য আর বন্ধুদের নিয়ে নগরীর এই প্রান্ত থেকে ওই প্রান্তে ছুটেছেন তারা। এই দলে আছেন নানা বয়সী, নানা শ্রেণি-পেশার নারী।
নেত্রকোনা থেকে কুমিল্লায় পড়তে আসা ভিক্টোরিয়া নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থী পুতুল আক্তার ডলি জানান, খুব সকালে ক্লাস থাকায় তিনি স্কুটি চালিয়ে সহজেই এবং নিরাপদে কলেজে আসতে পারছেন। শুধু মনের সাহস ও ইচ্ছাশক্তি থাকার ফলেই তার এ কাজটি সহজ হয়েছে। নগরীর যানজট এড়িয়ে সময় বাঁচানোর জন্যই স্কুটারের ব্যবহার জনপ্রিয় হচ্ছে বলেও তিনি জানান।
স্কুটার ব্যবহারকারী আরও কয়েকজন নারী জানান, সব বাইকারদেরই উচিত ট্রাফিক আইন মেনে চলা, অবশ্যই সবার ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকা উচিত।
শুধু লেডি বাইকার নয়, কুমিল্লায় আছেন লেডি ট্রেইনারও। উৎসাহী-আগ্রহীদের নিয়ে বাইক চালানোর নিয়মকানুন- ট্রাফিক আইন ও সেফটি বাইকিং প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন লেডি ট্রেইনাররা।
স্কুটার ট্রেইনিং সেন্টারের প্রশিক্ষক স্বপ্নীল সুলতানা জানান, মূলত শখের বশেই তিনি বাইক চালানো শুরু করেছিলেন। এরপর এ বাইক চালানোকেই পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন তিনি। নারীদের জন্য কোনো ট্রেনিং সেন্টার না থাকায় তিনি ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করেছেন। যেখান থেকে ট্রেনিং নিয়ে অনেক নারীই এখন বাইক চালানোকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করে নিজের এবং পরিবারের খরচ মেটাচ্ছেন।
তবে মোটরবাইক কিংবা স্কুটার নিয়ে রাস্তায় বের হলে এখনো মাঝে মাঝে নারীদের শুনতে হয় কটূক্তি। তাদের প্রত্যাশা, রাইডিংয়ে সবার সহযোগিতায় নিরাপদ ও সহজ হবে নারীদের এই পথচলা।
কুমিল্লা জেলা ট্রাফিক পরিদর্শক এমদাদুল হক বলেন, “সবাইকে আইন মেনে বাইক বা স্কুটার চালাতে হবে। সবাইকে অবশ্যই ট্রাফিক আইন ও লাইসেন্সের বিষয়ে সচেতন হতে হবে। আইন নারী-পুরুষ বোঝে না। তবে ছেলেদের তুলনায় মেয়ে হেলমেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেশি। আর নারী বাইকাররা কোনো সমস্যার সম্মুখীন হলে তাদের সহযোগিতার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।”