পাবনা, সিরাজগঞ্জ ও কুষ্টিয়া জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ডাকাত দলের ১০ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে জব্দ করা হয়েছে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি ট্রাকসহ লুণ্ঠিত বিপুল পরিমাণ মালামাল।
শনিবার (২৫ নভেম্বর) দুপুরে পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, গত ৯ নভেম্বর রাতে পাবনার খাস আমিনপুর এলাকায় ব্যবসায়ী ফরমান সরদারকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তার মুদি দোকানে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পরদিন ১০ নভেম্বর আমিনপুর থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী। পরে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় পাবনা, সিরাজগঞ্জ ও কুষ্টিয়া জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায় পাবনা গোয়েন্দা পুলিশ। তারা গত দুই দিনব্যাপী অভিযান চালিয়ে ডাকাতদলের মূল হোতা ও পরিকল্পনাকারী সেলিম হোসেনসহ ১০ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে।
এ সময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি ট্রাক, ২৯ বস্তা চাল, ২০০ লিটার মোবিল, গাড়ির টায়ার ৫টি, ২৩টি গ্যাস সিলিন্ডার ও ২ লাখ ১০ হাজার টাকা জব্দ করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন পাবনার বেড়া উপজেলার আমিনপুর গ্রামের সেলিম শেখ (৪৯), লক্ষীপুরের চন্দ্রগঞ্জ থানার নলডগী গ্রামের রিয়াজ ওরফে মফু (৩১), নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার হরেকৃষ্ণপুর গ্রামের জাফর আলী (২৯), পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ছোট বালিয়াতলী (লালুয়া) গ্রামের নুর সায়েদ খন্দকার ওরফে শাহেদ (৫৭), বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার কলসকাঠি গ্রামের সোহেল হাওলাদার (২৯), ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার পিনগ্রি গ্রামের মনির ব্যাপারী (৩২), সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার বাসুরিয়া গ্রামের হাফিজুল ইসলাম ওরফে আকাশ (২৯), সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার চন্ডিদাশ গাঁতী গ্রামের সালাউদ্দিন ওরফে সম্রাট (৩৮), একই উপজেলার শিবনাথপুর গ্রামের রুবেল শেখ (৩৪) এবং নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার ইয়াসিন আরাফাত (৪২)। তাদের নামে দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।
গ্রেপ্তারদের বরাত দিয়ে মাসুদ আলম আরও জানান, তারা দুটি ট্রাক নিয়ে মহাসড়কে ঘুরে বেড়ান। দলে সদস্য থাকে ১২ থেকে ১৫ জন। তাদের একেকটি ট্রাকই যেন ঘরবাড়ি। একবারে ৮-১০ দিনের জন্য বাড়ি থেকে বের হয়ে যান তারা। এরপর বিভিন্ন জেলায় রাস্তার আশপাশের বাজার, দোকানে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি করতেন তারা।
ডাকাতি করার আগে তারা দিনে ওই এলাকায় খোঁজ-খবর নেন আর রাতে করেন ডাকাতি। তাদের এই ডাকাতি করা মালামাল কেনার জন্য বিভিন্ন জেলায় মহাজনও আছে। তাই তারা নির্বিঘ্নে এই কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতে পারেন।