অনিন্দ্যসুন্দরী নারী রূপজান বিবি এ প্রজন্মের কাছে ভালোবাসার নিদর্শন। হীরা-জহরত নিয়ে শত বছর ধরে কবরে শুয়ে থাকা রূপজান বিবির কবর বগুড়া শহরের আঞ্জুমান-ই-গোরস্থানের পূর্ব পাশে প্রাচীর ঘেঁষে। সম্রাট শাহজাহান যেমন তাজমহল গড়ে ভালোবাসার উদাহরণ সৃষ্টি করেন, তেমনি বগুড়ায় ইংরেজ যুবক স্টেশন মাস্টার স্ত্রী রূপজান বিবির সমাধিসৌধ তৈরি করে তার ভালোবাসার পরিচয় দেন।
ইতিহাসবিদদের মতে, ব্রিটিশ শাসনামলে বগুড়া রেলস্টেশনের দায়িত্বে আসেন এক খ্রিষ্টান ইংরেজ বাবু। কর্মজীবনে ভালোবাসেন বগুড়ার রূপজান বিবিকে। প্রায় ১১০ বছর আগে রক্ষণশীল মুসলিম পরিবারের কুমারী কন্যাকে ভালোবেশে বিয়ে করাটা ছিল প্রায় অসম্ভব। অনেক দেনদরবার ও সমাজপতিদের সম্মতিতে অবশেষে তাদের বিয়ে হয়। ভালোই চলছিল তাদের দাম্পত্য জীবন। কিন্তু সন্তানসম্ভবা রূপজান বিবি ১৯১৫ সালের ১০ মার্চ কলকাতায় মারা যান। মৃত্যুর পর তার লাশ বগুড়ায় এনে কবর দেওয়া হয়।
সে সময় রূপজান বিবির ব্যবহৃত সোনার গয়না, হীরা-জহরত কবরে রেখে দাফন করা হয়। একটি দিঘি খনন করে রূপজানের নামে নামকরণ করেন তার স্বামী। এরপর স্টেশন মাস্টারের আর দেখা পাওয়া যায়নি। বগুড়াবাসীর কাছে আমানতস্বরূপ তার স্মৃতি রেখে গেছেন। রেখে গেছেন ভালোবাসার নিদর্শন।
সমাধি ভেঙে অলংকার ডাকাতি করার চেষ্টার কথা জানিয়ে বগুড়া নামাজগড় আঞ্জুমান-ই গোরস্থান কমিটির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম নয়ন জানান, কবরটি এতই শক্ত কংক্রিটের যে ডাকাতরা সেটি ভাঙতে পারেনি। শিগগিরই কবরটি সংস্কার করা হবে।