• ঢাকা
  • বুধবার, ০১ মে, ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২২ শাওয়াল ১৪৪৫

সমাজপতিরা বিয়ে না মানায়, ঘরছাড়া নবদম্পতি


সিলেট প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মার্চ ২৮, ২০২৩, ০২:৫০ পিএম
সমাজপতিরা বিয়ে না মানায়, ঘরছাড়া নবদম্পতি

সমাজপতিদের না জানিয়ে বিয়ে করায় এক নবদম্পতি নিজ বাড়িতে যেতে পারছেন না। বিয়েতে গ্রামের মুরব্বিদের দ্বিমত থাকায় পাত্র ও পাত্রীপক্ষের কেউই নববিবাহিত দম্পতিকে ঘরে তুলে নিতে পারছেন না।

এ বিষয়ে মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন কনে পলি আক্তার।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মৌলভীবাজার সদর উপজেলার আপার কাগাবালা ইউনিয়নের উত্তর কাগাবলা গ্রামের ইমন মিয়ার সঙ্গে ১৯ মার্চ সাতবাক গ্রামের পলি আক্তারের বিয়ে হয়। কিন্তু বিয়ের কথা এলাকায় জানাজানি হওয়ার পর বাধা হয়ে দাঁড়ান স্থানীয় মুরব্বিরা। গত ২৫ মার্চ পলি আক্তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট দেওয়ার পর আলোচনায় আসে বিষয়টি।

পলি আক্তার বলেন, “আমার মা শিল্পী বেগম সহজ-সরল। তিনি আমার বিয়ের বিষয়ে আমার দুঃসম্পর্কের আত্মীয় ও এলাকার মুরব্বিদের জানালে তারা আমার বিয়েকে অস্বীকার করেন। তারা আমার স্বামী আমাকে অপহরণ ও ধর্ষণ করেছেন বলে মিথ্যা মামলা দেওয়ার জন্য আমার মাকে কুমন্ত্রণা দিয়ে যাচ্ছেন। এ ছাড়া আমার স্বামীর আত্মীয়স্বজনকেও বিভিন্নভাবে হুমকি প্রদান করে যাচ্ছেন তারা। এমনকি তারা আমার স্বামীকে হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলবেন বলেও আমার মাকে জানিয়েছেন।”

পলি আরও বলেন, “বিয়ের পর থেকে আমরা খুব কষ্টে আছি। গ্রামের মোড়লদের হুমকি-ধমকির কারণে আমি ও আমার স্বামী উভয়ে একসঙ্গে আত্মগোপনে আছি। আমি আমার স্বামীর বাড়িতে যেতে চাই। আমি পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।”

আপার কাগাবলা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি খলকু মিয়া (৫৫), আগিহুন গ্রামের রুজিনা আক্তার (৪০) ও সাতবাক গ্রামের বশির আহমদ সুনু মিয়াকে (৪০) অভিযুক্ত করে পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন পলি আক্তার।

পলির স্বামী ইমন মিয়া বলেন, “আমি ১৯ মার্চ পলি আক্তারকে বিয়ে করেছি। বিয়ে করার পর আমাদের পাশের গ্রাম ও বাজারের কিছু মোড়লদের বাধায় পড়েছি। তারা আমাকে ও আমার পরিবারকে বিভিন্ন রকম হুমকি দিয়ে আসছে। যার কারণে আমি আমার স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি যেতে পারছি না।”

অভিযুক্ত খলকু মিয়া বলেন, “এখানে দুটি আলাদা সমাজ আছে। বিয়ে হলে তাদের মধ্যে ঝামেলা হবে। কনের পক্ষ আমার কাছে এসেছিল, আমি তাদের সান্ত্বনা দিয়েছি। আমি কাউকে হুমকি-ধমকি এসব কিছু দিইনি। কেউ এর প্রমাণ দিতে পারবে না।”

আপার কাগাবলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. ইমন মোস্তফা বলেন, “আমি বিষয়টি জেনেছি। এখানে সামাজিক বাধা আছে। বিষয়টি সমাধানের জন্য কেউ এগিয়ে আসেনি। কেউ এখনো এই ঘটনা নিয়ে কোনো সংঘাতে জড়ায়নি।

মৌলভীবাজার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হারুনুর রশীদ চৌধুরী বলেন, “থানায় এসে অভিযোগ দিলে এ বিষয়ে আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব।”

এ বিষয়ে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শরীফ উদ্দিন বলেন, “ওই দম্পতি আমাকে বিষয়টি জানিয়েছেন। আমি তাদেরকে থানায় গিয়ে আইনের আশ্রয় নেওয়ার জন্য বলেছি। আমরা তাদের সব ধরনের সহযোগিতা করব।” 

Link copied!