দক্ষিণাঞ্চলের সবচেয়ে বড় সরকারি চিকিৎসা সেবা প্রতিষ্ঠান শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালের হৃদরোগ বিভাগে চিকিৎসাধীন দরিদ্র রোগীরা চরম বিপাকে। হৃদরোগে আক্রান্তদের জন্য প্রয়োজনীয় ‘স্ট্রেপটোকিনাস’ ও ‘এক্সাপেরিন’ নামের দুটি জরুরি ইনজেকশনের সরবরাহ গত কয়েক মাস ধরেই অনিয়মিত। তাই রোগীদের প্রাণ বাঁচাতে চরম অসহায় বোধ করছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
গরীব-অসহায় রোগীদের সরকারিভাবে বিনামূল্যে জীবন রক্ষাকারী জরুরি ওষুধ দেওয়ার কথা থাকলেও কেন্দ্রীয় ভাণ্ডার থেকে এসব আপদকালীন ওষুধের সরবারহ প্রায়ই অনিয়মিত হয়ে পড়ছে। গত কয়েক মাস ধরেই আপদকালীন ভাণ্ডারের ওষুধ সরবরাহও অনিয়মিত বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালটির দায়িত্বশীল সূত্র।
জানা যায়, ২০১১ সালে শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আধুনিক হৃদরোগ বিভাগ চালু হয়। ওই ওয়ার্ডে হৃদরোগে আক্রান্ত রোগী ভর্তির পর প্রথম ১২ ঘণ্টায় হাসপাতাল থেকে বিনামূল্যে তাৎক্ষণিক স্ট্রেপটোকিনাস নামের একটি ইনজেকশন দিতে হয়। খোলা বাজারে জরুরি এই ইনজেকশনের দাম ৫ হাজার টাকা এবং এক্সাপেরিন নামের আরেকটি ইনজেকশনের দামও ৫০০ টাকা।
গত জুলাই মাসে কেন্দ্রীয়ভাবে মূল্যবান এসব ওষুধ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। কেন্দ্রীয় সরবরাহ বন্ধের পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দরিদ্র রোগীদের অসহায়ত্ব বিবেচনায় আপদকালীন সংগ্রহ থেকে রোগীদের বিনামূল্যে ওই ওষুধ সরবরাহ করত। কিন্তু মাসখানেক ধরে আপদকালীন ভাণ্ডারও শূন্য। ফলে হৃদরোগ বিভাগে চিকিৎসাধীন দরিদ্র রোগীরা চরম বিপাকে। সময়মতো জরুরি ওষুধ না পেয়ে বিপন্ন হয়ে পড়ছে বেশিরভাগ দরিদ্র রোগীদের জীবন।
২০১১ সালে ১০ শয্যার হৃদরোগের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রটির শয্যা আর না বাড়লেও ওয়ার্ডটিতে গড়ে ৬৫ জন পর্যান্ত রোগী চিকিৎসাধীন থাকছেন। কর্তৃপক্ষের তথ্য মতে প্রতিমাসে এই ওয়ার্ডে রোগীর মৃত্যুর হার ৮ থেকে ১০ ভাগ। কিন্তু সরকারি জীবন রক্ষাকারী দুটি ইনজেকশনের সরবরাহ অনিয়মিত হয়ে পড়ায় এই ওয়ার্ডের রোগীদের জীবন অনেক সময়ই ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়ছে।
রোগীদের স্বজনদের অভিযোগ, হাসপাতাল থেকে জ্বর আর গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ ছাড়া অন্য সব মূল্যবান ওষুধ নিজেদের টাকায় কিনতে হয়। বরিশাল শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের জন্য প্রায় ২ কোটি টাকার ওষুধ সরবরাহ করা হয়। কিন্তু জীবন রক্ষাকারী জরুরি এসব ওষুধের সরবরাহ কেন্দ্রীয় ভাণ্ডার থেকে বন্ধ থাকায় রোগীদের জন্য অতি প্রয়োজনীয় এসব ইনজেকশন দিতে পারছেন না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে মঙ্গলবার হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচএম সাইফুল ইসলামের সঙ্গে আলাপ করা হলে তিনি বলেন, এ মুহূর্তে জরুরি ওই দুটি ইনকেজকশন তাদের কাছে মজুদ রয়েছে। তবে প্রায়সই চাহিদা অনুযায়ী ওষুধ সরবরাহ বিঘ্নিত হয় বলেও তিনি স্বীকার করেন।
তার মতে, সরবারহ স্বাভাবিক থাকলে রোগীদের প্রত্যাশা পূরন করা সম্ভব হয়। হৃদরোগীদের জন্য এসব ইনজেকশনসহ গুরুত্বপূর্ণ সব ড্রগ-এর সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে সব সময়ই কেন্দ্রীয় দপ্তর ও ভাণ্ডারে নিয়মিত তাগিদ দেওয়ার কথাও জানান তিনি।
                
              
																                  
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    




































