শীতের শিশির ভেজা সকালে ঘন কুয়াশার চাদরে মোড়ানো নওগাঁর প্রতিটি মাঠজুড়ে কেবল চোখে পড়ছে সরিষার হলুদ ফুলের সমারোহ। এই শীতের শিশির ভেজা সকালে সরিষার সবুজ গাছের ফুলগুলো শীতের সোনাঝরা রোদে যেন ঝিকিমিকি করছে। এ যেন এক অপরুপ সৌন্দর্যের দৃশ্য। দেখে মনে হচ্ছে প্রকৃতি কন্যা সেজেছে গায়ে হলুদ বরণ সাজে।
চারপাশে শুধু সরিষা ফুলের মৌ-মৌ গন্ধে মুখরিত ফসলের মাঠগুলো। তাইতো মৌমাছির দল মধু আহরণে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে। আর এই হলুদ সরিষা ফুলের মাঝে রঙিন স্বপ্ন দেখছেন কৃষকেরা।
চলতি মৌসুমে সরিষার বাম্পার ফলনের হাতছানিতে কৃষকের চোখেমুখে ফুটে উঠেছে খুশির ঝিলিক। অল্প সেচ, কম পরিচর্যা ও খরচ এবং সরিষা উত্তোলনের পর সেই জমিতে বোরো ধান চাষের সুযোগ থাকায় মধ্যবর্তী ফসল হিসেবে কৃষকদের মধ্যে সরিষা চাষের আগ্রহ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ জন্য প্রতি বছরই বাড়ছে সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ও কৃষকদের সংখ্যা।
কৃষকরা জানান, আমন ধান ঘরে তোলার পর খালি মাঠে সরিষার চাষ করা হয়। আর কম পুঁজিতে সরিষা চাষে দ্বিগুণ লাভ হয়। প্রতি বিঘা জমিতে প্রায় ৫ হাজার টাকা খরচ করে ৭-৮ মণ সরিষা উৎপাদন করা যায়। যার বাজার মূল্য ১০ হাজার টাকার বেশি।
সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন উপজেলার ঘুরে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কৃষকেরা তাদের অধিকাংশ জমিতে উচ্চফলনশীল (উফশী) বারি-১৪, বারি-৯, সরিষা-১৫, বিনা সরিষা-৯, বিনা সরিষা-৪ ও স্থানীয় টরি-৭ চাষ করেছে। ফলন ভালো হলে এবং দাম পেলে আগামী বছর সরিষা চাষ আরও বাড়বে।
এছাড়া সরিষার জমিতে ধানের চাষও ভালো হয় এবং বোরো চাষে খরচ কম হয়। এ বছর অনুকূল আবহাওয়া থাকায় সরিষা গাছও বেড়ে উঠেছে দ্রুত। যার কারণে কৃষকের চোখেমুখে ফুটে উঠেছে আনন্দের হাসি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের নওগাঁর উপপরিচালক কৃষিবিদ আবুল হোসেন জানিয়েছেন, নওগাঁ জেলায় চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা ৩৬ হাজার ২৫০ হেক্টর, এখন পর্যন্ত চাষ হয়েছে ৩৮ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে। কৃষকদের সরিষা চাষাবাদের ব্যাপারে সব ধরনের সহযোগিতা ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।