মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিটিসি) অভিযানে জঙ্গি সন্দেহে আটক ১০ জনের মধ্যে ৩ জনই সাতক্ষীরা জেলার বাসিন্দা।
শনিবার (১২ আগস্ট) এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সিটিটিসির প্রধান মো. আসাদুজ্জামান।
জঙ্গি সন্দেহে আটক ওই তিনজন হলেন সাতক্ষীরার তালা উপজেলার খলিলনগর ইউনিয়নের দক্ষিণ নলতা গ্রামের শরিফুল মোড়ল (৪০), তার স্ত্রী আমেনা বেগম (৪০) ও মেয়ে হাবিবা বিনতে শরিফুল (২০)।
শরিফুল মোড়ল ওই এলাকার মৃত ওমর আলীর ছেলে।
জানা যায়, শরিফুল বেশ কিছুদিন আগেও রিকশা, সাইকেল ও ভ্যান মেরামতের মিস্ত্রী হিসাবে কাজ করতেন। হঠাৎ করেই তিনি স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে বাড়ি থেকে চলে যান। যাওয়ার আগে তিনি পালিত একটি গরু ও বাছুর এক প্রতিবেশীর কাছে বিক্রি করেন।
এ ব্যাপারে শরিফুল মোড়লের মা বৃদ্ধা ছবিরন বিবি জানান, তার তিন ছেলেমেয়ে। শরিফুল সবার ছোট। কয়েকদিন ধরে তিনি নিখোঁজ। তবে ছেলে কোথায় গেছে তা তিনি জানেন না।
প্রতিবেশী আব্দুল খালেক বলেন, ১৯ দিন আগে শরিফুল তার কাছে বাছুরসহ একটি গাভী বিক্রি করে পরদিন স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে যান।
শরিফুলের স্বজন মো. মোস্তাফিজুর রহমান তিতু জানান, শরিফুল দক্ষিণ নলতা গ্রামে তালা-পাইকগাছা সড়কের ধারে সাইকেল মেরামতের কাজ করতেন। সেখানে তার একটি সাইকেল ও রিকশাভ্যান সারাইয়ের দোকানও আছে।
খলিলনগর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের (দক্ষিণ নলতা গ্রাম) সদস্য জিয়াউর রহমান বলেন, শরিফুলের ব্যাপারে তিনি বিস্তারিত কিছু জানেন না।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার কাজী মনিরুজ্জামান জানান, এ ব্যাপারে পুলিশ হেডকোয়ার্টার থেকে কোনো খবর আসেনি। তবে তিনি বিষয়টি লোকমুখে শুনেছেন। পরে বিস্তারিত জানানো হবে।
শুক্রবার (১১ আগস্ট) রাত ৮টা থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত মৌলভীবাজারের কুলাউড়া থানার কর্মধার এলাকার পূর্ব টাট্টিউলী গ্রামের সীমান্তবর্তী একটি দুর্গম পাহাড়ে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে অভিযান চালায় সিটিটিসি। এ সময় সেখান থেকে ১০ জনকে জঙ্গি সন্দেহে আটক করা হয়। তাদের সঙ্গে তিনটি শিশুকেও উদ্ধার করা হয়।
সিটিটিসি জানায়, আটকরা সবাই ‘ইমাম মাহমুদের কাফেলা’ নামের এক নতুন জঙ্গি সংগঠনের সদস্য। প্রায় একমাস আগে ওই এলাকায় জঙ্গি সংগঠনটির সদস্যারা জমি কিনে বসবাস করতে শুরু করেন। সেখান থেকে গহীন জঙ্গলে গিয়ে জঙ্গিদের সশস্ত্র প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো। তাদের কাছ থেকে আড়াই কেজি বিস্ফোরক, ৫০টি ডেটোনেটর ও অস্ত্রশস্ত্রসহ বেশকিছু জিহাদী বই জব্দ করা হয়েছে। অভিযানটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন হিল সাইড’।