ফরিদপুরের মধুখালীতে মাথার খুলি ও বেশ কিছু হাড়ের টুকরোর ডিএনএ পরীক্ষা শেষে লাশ শনাক্ত করে দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
শনিবার (১৬ সেপ্টম্বর) দুপুরে ফরিদপুরের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান এ তথ্য জানিয়েছেন।
পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান জানান, ২০২২ সালের ৬ সেপ্টেম্বর রাজবাড়ির বালিয়াকান্দি থানার খর্দ্দ মেঘচামী খাসকান্দি গ্রামের আকিদুল মোল্যার ছেলে আলামিন মোল্য (১৭) নিখোঁজ হয়। এর প্রায় তিন মাস পরে উপজেলার ছাইভাঙ্গার বিলে অজ্ঞাত একটি লাশের মাথার খুলিসহ কয়েকটি হাড় উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতের প্যান্টের বেল্ট দেখে সেগুলো নিখোঁজ ছেলে আলামিনের হাড় বলে দাবি করেন তার বাবা আকিদুল মোল্যা। এরপর ২০২২ সালের ৩১ নভেম্বর তিনি বাদী হয়ে মধুখালী থানায় একটি মামলা করেন। ঢাকার ফরেনসিক ল্যাবে আলামিনের বাবা-মা ও উদ্ধার হওয়া হাড়ের ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়। পরে রিপোর্ট দেখে উদ্ধার হওয়া আলামত তাদের ছেলের বলে নিশ্চিত হয় পুলিশ।
পুলিশ সুপার আরও জানান, পুলিশ হত্যার রহস্য উৎঘাটন শেষে শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি থেকে আলমগীর হোসেন নামের একজনকে গ্রেপ্তার করে। তার দেওয়া তথ্য মতে শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাত ২টার সময় মনির শেখ নামের আরও একজনকে গ্রেপ্তার করে। পরে তার দেওয়া তথ্য মতে হত্যার কাজে ব্যবহৃত একটি চাপাতি জব্দ করা হয়।
মো. শাহজাহান জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানিয়েছেন, নিহত আলামিন ও আসামি আলমগীর একসঙ্গে তাদের এলাকায় মিজানের মুরগির ফার্মে কাজ করত। আলামিনের বাবার সঙ্গে ওই এলাকার কাছিম মোল্যার সুদের টাকা ও জমিজমা নিয়ে বিরোধ ছিল। অপরদিকে মুরগির ফার্মের কিছু মালামাল চুরির ঘটনায় নিহত আলামিন জড়িত এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে মুরগি ফার্মের কর্মচারীদেরকে টাকা দিয়ে কাছিম মোল্যা অপর দুই সহযোগী আলমগীর হোসেন ও মনির শেখকে সঙ্গে নিয়ে আলামিনকে হত্যা করে। লাশ গুম করার জন্য তার শরীর চাপাতি দিয়ে কয়েক টুকরো করে বস্তায় ভরে পাশের বিলের মধ্যে ফেলে পালিয়ে যায়। প্রায় তিন মাস পরে বিলের পানি শুকানোর পরে স্থানীয়রা একটি ছেড়া বস্তায় মানুষের হাড়গোড় দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়। আসামিদের মধ্যে মূল পরিকল্পনাকারী কাছিম গ্রেপ্তারের আগেই মারা যায়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) শৈলেন চাকমা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) শেখ মো. আব্দুল্লাহ বিন কালাম, মধুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল ইসলামসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।