• ঢাকা
  • শনিবার, ২৪ মে, ২০২৫, ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ২৫ জ্বিলকদ ১৪৪৬

বিলুপ্তির পথে ভাওয়াইয়া দোতারা


সুজন মোহন্ত, কুড়িগ্রাম
প্রকাশিত: অক্টোবর ২৩, ২০২২, ০৮:১৬ এএম
বিলুপ্তির পথে ভাওয়াইয়া দোতারা

কুড়িগ্রাম জেলা ভাওয়াইয়া গানের জন্য বিখ্যাত হলেও ভাওয়াইয়া বা বাউল গানের আসর, সাধু সংঘ কিংবা যাত্রাপালায় আর চোখে পড়ে না দেশীয় বাদ্যযন্ত্র ‘দোতারা’। আকাশ সংস্কৃতি আর পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে লোকজ বাদ্যযন্ত্রটি। সেখানে জায়গা নিচ্ছে পাশ্চাত্যের বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র। এতে নতুন প্রজন্ম যেমন নিজেদের লোকজ সংস্কৃতি ভুলে এ সব চর্চা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, তেমনি বাংলার প্রাণের গান হারাচ্ছে নিজস্বতা।

একতারা, দোতারা, সারিন্দা, খমক বাদ্য এখন শুধুই স্মৃতি। এক সময় গ্রাম-গঞ্জের পালাগান, ভাওয়াইয়া, যাত্রাপালা কিংবা বাউল গানের আসরে ছন্দ দিতো এসব দেশীয় বাদ্য।

এরপরেও নানা প্রতিকূলতায় এসব যন্ত্র এখনো কোথাও স্ব যত্নে রেখেছেন কেউ কেউ। তেমনি তিনজন বাদ্যশিল্পী হলেন কুড়িগ্রামের রাজারহাটের বৈদ্যের বাজারের শ্রী গান্ধার রায়, শ্রী গোপেন্দ্র ভূষণ রায় ও শ্রী নিরাশা চন্দ্র রায়। নিজেদের কীর্তন ও সাধু সংঘে মাঝে মধ্যে বাজান এই দেশীয় বাদ্যটি। 
সরকারিভাবে দেশীয় সংস্কৃত রক্ষার্থে দোতারা বাদ্যকে আলাদাভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করলে এই শিল্পটিকে টিকিয়ে রাখা যাবে বলে মনে করেন এ বাদ্যশিল্পীরা। নিজেদের এলাকায় আশপাশে কোনো অনুষ্ঠান হলে স্ব-যত্নে পরম আনন্দে বাজান দোতারা। তবে দিন দিন যন্ত্রটির ব্যবহার কমে যাওয়ায় হতাশ এসব দোতারার বাদ্য শিল্পীরা।

বাদ্যশিল্পী গান্ধার রায় বলেন, “আমি শখের বশে দোতারার ব্যবহার শিখেছি। যদিও আজকাল এখন এর ব্যবহার নেই বললেই চলে। তবে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা বাড়ালে এই যন্ত্র সংগীতের ব্যবহার আরও বাড়বে।”

আরেক বাদ্যশিল্পী শ্রী নিরাশা চন্দ্র রায় বলেন, “আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার বেশি হওয়ায় দোতারা যন্ত্রটি এখন আর ব্যবহার হয় না “

কুড়িগ্রামের সাংস্কৃতিক সংগঠন প্রচ্ছদ এর সভাপতি জুলকারনাইন স্বপন বলেন, “দোতারা একটি প্রাচীন ব্যঞ্জনাময় বাদ্যযন্ত্র। যা বর্তমানে আধুনিক যন্ত্রের ভারে হারিয়ে যাচ্ছে। আমাদের সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো চাইলেই আবারও দোতারা যন্ত্রটির ব্যবহার ফিরিয়ে আনলে প্রাচীন এই ঐতিহ্যটিকে ধরে রাখা সম্ভব হবে।”

Link copied!