রংপুর সদর উপজেলা সরকারি খাদ্যগুদাম থেকে ১৪৪ মেট্রিক টন চাল ও ৯ হাজার ৫৪৪টি খালি বস্তাসহ গম আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। যার আনুমানিক মূল্য ৭০ লাখ ৯৩ হাজার ৫৬ টাকা। এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি আত্মসাতের অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে। সিলগালা করা হয়েছে খাদ্যগুদামটি। একই সঙ্গে গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) কানিজ ফাতেমার বিরুদ্ধে রংপুর মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা করা হয়েছে।
সদর উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা নিখিল চন্দ্র সরকার বাদী হয়ে এই মামলা করেছেন। ঘটনা জানাজানি হওয়ার পরপরই গা ঢাকা দিয়েছেন খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমা। মামলায় আসামি দেখানোসহ তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অন্তরা মল্লিক।
এদিকে গত ১৩ সেপ্টেম্বর দায়ের করা ওই মামলায় কানিজ ফাতেমা ছাড়াও অন্য দুজনকে আসামি করা হয়েছে। তারা হলেন গুদামের লেবার সর্দার রবিউল ইসলাম ও নিরাপত্তাপ্রহরী চঞ্চল সিং। বর্তমানে ওই গুদামে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে নুরুন নবী বাবুকে।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ও সদর এলএসডির একাধিক কর্মকর্তা সূত্রে জানা গেছে, কানিজ ফাতেমা রংপুর সদর এলএসডি গুদামের প্রধান কর্মকর্তা হিসেবে দেড় বছরের বেশি সময় ধরে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। এই সময়ের মধ্যে তিনি কোটি টাকা মূল্যের চাল ও গম কালোবাজারে বিক্রি করে পুরো টাকা আত্মসাৎ করেন। বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরে তিনি ও খাদ্যগুদামের অন্য কর্মকর্তারা ধামাচাপা দিয়ে আসছিলেন। সরকারি খাদ্যগুদামের চাল ও গম লোপাট করার ঘটনা বেশ কিছুদিন ধরে কানাঘুষা চলে এলেও ওসি এলএসডি হিসেবে কানিজ ফাতেমা বিভিন্নভাবে ম্যানেজ করে ধামাচাপা দিয়ে আসছিলেন।
এদিকে সদর উপজেলা খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা হিসেবে কানিজ ফাতেমাকে কুড়িগ্রামে বদলি করা হয়। কিন্তু বদলির আদেশ পাওয়ার পরও কানিজ ফাতেমা তার দায়িত্ব হস্তান্তরে গড়িমসি শুরু করলে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অন্তরা মল্লিকের সন্দেহ হয়।
খাদ্যগুদাম সূত্রে জানা গেছে, ১৪৪ মেট্রিকটন ৭৪৪ কেজি চালের সরকারি বাজার মূল্য (৪৫ টাকা কেজি দরে) ৬৫ লাখ ১৩ হাজার ৪৪০ টাকা, ৩০৭ কেজি গমের মূল্য (৩৩ টাকা কেজি দরে) ১০ হাজার ১৩১ টাকা। এ ছাড়াও ৫০ কেজির খালি বস্তা ৭ হাজার ৫০৯টির বাজার মূল্য (প্রতি বস্তা ৬৫ টাকা দরে) ৪ লাখ ৮৮ হাজার ৮৫ টাকা এবং ৩০ কেজির খালি ছোট বস্তা ২ হাজার ৩৫ টির বাজার মূল্য (প্রতি বস্তা ৪০ টাকা দরে) ৮১ হাজার ৪০০ টাকা। এতে দেখা যায়, গুদাম থেকে ৭০ লাখ ৯৩ হাজার ৫৬ টাকার মালামাল আত্মসাৎ করা হয়েছে।
রংপুরের আঞ্চলিক খাদ্যনিয়ন্ত্রক মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, ওই গুদাম সিলগালা করার পাশাপাশি প্রাথমিকভাবে গুদাম কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্ত কর্মকর্তাসহ তিনজনের নামে থানায় মামলা দেয়া হয়েছে। আমরা প্রাথমিকভাবে যা যা করার করেছি। এখন বিষয়টির তদন্ত ঢাকা খাদ্য অধিদপ্তর থেকে করা হবে। তবে চাল আত্মসাতের সঙ্গে যেই জড়িত থাকুক না কেন কেউই ছাড় পাবে না।
 
                
              
 
																 
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                    





































