গাজীপুরে রেললাইন কেটে নাশকতার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ২৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. হাসান আজমল ভূঁইয়াসহ (৫০) সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে গাজীপুর মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
রোববার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে গাজীপুর মেট্রোপলিটনের পুলিশ কমিশনার মো. মাহবুব আলম এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন।
গ্রেপ্তাররা হলেন নেত্রকোনার মদন থানার বারই বাজার এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে জান্নাতুল ইসলাম (২৩), ময়মনসিংহের ভালুকা থানার বান্দীয়া এলাকার তাইজুদ্দীনের ছেলে মেহেদী হাসান (২৫), গাজীপুর মেট্রোপলিটন সদর থানার ভানোয়া এলাকার তারিকুল ইসলাম দিপুর ছেলে জুলকার নাইন আশরাফি ওরফে হৃদয় (৩৫), উত্তর ছায়াবীথি এলাকার মৃত সোলায়মান মোড়লের ছেলে শাহানুর আলম (৫৩), কানাইয়া পূর্বপাড়া এলাকার মৃত ওমেদ আলী মোল্লার ছেলে মো. সাইদুল ইসলাম (৩২) ও মধ্য ছায়াবীথি এলাকার আফতাফ উদ্দিনের ছেলে সোহেল রানা (৩৮)।
গোয়েন্দা পুলিশ জানায়, গত ১৩ ডিসেম্বর ভোরে একদল দুষ্কৃতকারী শ্রীপুর উপজেলার বনখরিয়া এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ রেললাইন কেটে ফেলে। এরপর ঢাকাগামী মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিনসহ ৭টি বগি লাইনচ্যুত হয়। এ ঘটনায় ঘটনাস্থলেই একজন মারা যান এবং কমপক্ষে ১০ জন আহত হন।
পুলিশ কমিশনার মো. মাহবুব আলম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এবং তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে দুষ্কৃতকারী দলের জান্নাতুল ইসলাম ও মেহেদী হাসানকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানান কোনাবাড়ী এলাকা থেকে ১২ ডিসেম্বর সন্ধ্যার পরে ঢাকা যাওয়ার কথা বলে একটি হায়েস গাড়ি ভাড়া করে। ওই গাড়ি নিয়ে ঢাকা যাওয়ার কথা থাকলেও তারা ঢাকায় না গিয়ে গাজীপুরের বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাফেরা করতে থাকেন। সবাই মুখোশ পরা অবস্থায় ছিল। এ অবস্থায় চালক ভয় পেয়ে তাদের ঢাকায় না যাওয়া এবং মুখোশ পরার কারণ জিজ্ঞেস করলে তাদের মধ্যে একজন মুখোশ খুলে চালককে তার চেহারা দেখান। তারপর চালক তাকে চিনতে পেরে আর কিছু বলে না।
ওই ভাড়াকৃত গাড়ি নিয়ে তারা রেললাইন কেটে নাশকতা ঘটানোর উদ্দেশ্যে বের হয়। পথিমধ্যে তারা শিববাড়ী, জোড় পুকুরপাড়সহ আরও বিভিন্ন স্থান থেকে বেশ কয়েকজনকে গাড়িতে উঠায়। একপর্যায়ে তারা গাজীপুর সদর থানাধীন জোড় পুকুরপাড়স্থ ইবনে সিনহা তোহার বাড়ি থেকে রেললাইন কাটার যন্ত্রপাতি এবং দক্ষিণ সালনা, উসমান গণির ভাড়া দেওয়া ‘বাশ বাগান’ রেস্টুরেন্ট থেকে দুইটি গ্যাস সিলিন্ডার গাড়িতে উঠায়।
এরপর তারা গাজীপুর শহরে ঘোরাঘুরি করে আনুমানিক রাত ৩টার পরে বনখরিয়া এলাকায় ঘটনাস্থল থেকে ৪-৫ কিলোমিটার দূরত্বে বনের পাশে গাড়ি রেখে হেঁটে তারা গ্যাস সিলিন্ডারসহ সরঞ্জমাদি নিয়ে বনখরিয়া চিনাই রেলব্রিজের পাশে যান। সেখানে গিয়ে তারা তারা ২০ ফুট রেললাইন কেটে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন। পরে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়। আটকরা সবাই বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী।
সংবাদ সম্মেলনে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মো. শফিকুল ইসলাম, গাজীপুরের পুলিশ সুপার কাজী শফিকুল আলম, রেলওয়ে পুলিশের পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন, গাজীপুর পিবিআই পুলিশ সুপার মাকছুদের রহমান, গাজীপুর মেট্রোপলিটনের উপপুলিশ কমিশনার মো. ইব্রাহিম খান ও আবু তোরাব মো. শামসুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
 
                
              
 
																
 
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                    





































