কুড়িগ্রামে হাট-বাজারে পাট বিক্রি করতে এসে চেহারা মলিন হয়েছে কৃষকদের। এ বছর ভালো ফলন হওয়ায় খুশি মনে বাজারে এলেও দাম না পেয়ে হতাশ তারা। লাভ তো দূরের কথা চাষাবাদের খরচ নিয়েও দুঃশ্চিন্তায় আছেন কৃষকরা। বর্তমানে প্রতি মণ পাট বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার টাকায়। এই দামে পাট বিক্রি করলে লোকসান হবে বলে জানিয়েছেন কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। একই সঙ্গে এমন মন্দা দাম থাকলে আগামী মৌসুমে পাট চাষ করবেন না বলে জানান অনেক কৃষক।
সরেজমিনে দেখা যায়, কুড়িগ্রামের সদর উপজেলার যাত্রাপুর হাটে বসেছে পাটের বাজার। সপ্তাহে দুদিন বসে এ হাট। দুর-দুরান্ত থেকে নৌকা, সাইকেল, ঘোড়ার গাড়িতে করে পাট বিক্রি করতে এসেছেন কৃষকরা। তবে হাটে এসে পাটের দাম শুনে মন খারাপ সবারই। গত হাটের চেয়ে পাটের দাম প্রতি মণে কমেছে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। পরিবহন খরচ আর আবাদের খরচ মিলিয়ে তাদের লাভের অঙ্ক প্রায় শুণ্যের কোটায়।
কদমতলা গ্রামের নুর ইসলাম বলেন, “এক বিঘা জমিতে পাট আবাদ করে সার, পানি, কীটনাশক, আঁশ ছড়ানো মজুরিসহ ১৪-১৫ হাজার টাকা ব্যয় হয়। বিঘায় পাট পাই ৮-১০ মণ। মোট খরচ হিসেবে আমাদের কোনো লাভই থাকে না। কষ্ট করে পাট চাষ করে কী লাভ?”

আরেক কৃষক হাসানুর বলেন, “গত দুই বছর ধরে পাটের দাম ভালো পাচ্ছি না। বৃষ্টি নাই, খড়া মৌসুমে পাট গাছের জমিতে বাড়তি পানি দিতে হয়। তাই খরচও বেশি হচ্ছে। সে তুলনায় তেমন লাভ নাই।”
ভগবতীপুরের পাট ব্যবসায়ী আসলাম মিয়া বলেন, “আমি গ্রামে গ্রামে ঘুরে ১ হাজার ৮০০ থেকে ১ হাজার ৯০০ টাকা দরে পাট কিনেছিলাম। আজ সেই কেনা দামেই বিক্রি করতে হলো। পরিবহন খরচ, কুলি খরচ, হাটের খাজনা হিসেব করলে লাভ থাকছে না। গত হাটে এই পাটের দাম ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৩০০ টাকা ছিল। দিন যতই যাচ্ছে পাটের দাম ততই কমছে।”
আরেক পাট ব্যবসায়ী জাহেদুল ইসলাম বলেন, “গত হাটে পাটের দাম মণপ্রতি ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৩০০ টাকা ছিল। আজকে সেই পাটের মণ সর্বোচ্চ ২ হাজার টাকা। দাম না বাড়লে অনেক লোকসান হবে।”
এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম জেলা মুখ্য পাট পরিদর্শকের কার্যালয়ের পাট পরিদর্শক এটিএম খায়রুল হক বলেন, “গত দুই সপ্তাহ আগে পাটের দাম ভালো ছিল। এখন পাটের দাম কমছে। কেননা অধিকাংশ ব্যবসায়ী কারখানায় পাট সরবরাহ করে পুরো পাওনা টাকা এখনো পাননি। তাই ব্যবসায়ীদের হাতে টাকা নাই। ব্যবসায়ীরাও পাট কেনায় আগ্রহ কমিয়ে দিয়েছেন।”
 
                
              
 
																                  
 
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                    





































