স্বর্ণ লুটের মামলার আসমি ও ফেনী গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পাঁচ কর্মকর্তাকে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে।
শনিবার (১৪ আগস্ট) দুপুরে তাদের আদালতে হাজির করা হলে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কামরুল হাসান এ আদেশ দেন। পুলিশ সুপার খোন্দকার নুরুন্নবী বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এরআগে প্রত্যেককে সাতদিন করে রিমান্ডের আবেদন জানায় পুলিশ।
ফেনীর কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক গোলাম জিলানী জানান, অভিযুক্ত ফেনীর গোয়েন্দা উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোতাহার হোসেন, নুরুল হক, মিজানুর রহমান, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) অভিজিত বড়ুয়া ও মাসুদ রানাকে তিন দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শনিবার ফেনীর বিচারিক হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) মোহাম্মদ মনির হোসেন ওই ৫ পুলিশ কর্মকর্তাকে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবারও প্রত্যেককে ৭দিন করে রিমান্ডের আবেদন জানান। আদালত শুনানি শেষে প্রত্যেককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আসামি পক্ষের আইনজীবী এম শাহজাহান সাজু আসামিদের রিমান্ড আবেদন নামঞ্জুরের আবেদন জানান। এছাড়া আসামিদের জামিনের আবেদন জানান। আদালত আবেদন নামঞ্জুর করেন।
এছাড়া মামলা অপর আসামি পুলিশের পরিদর্শক (ওসি ডিবি) মো. সাইফুল ইসলাম ভূঁইয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গত ১১ আগস্ট আদালত চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তাকে ফেনী থানায় জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। রোববার তার রিমান্ডের মেয়ার শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
৮ আগস্ট (রোববার) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা যাওয়ার পথে গোপাল কান্তি দাস নামে ওই স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে ফেনী সদর উপজেলার ফতেহপুর রেলওয়ে ওভারপাস এলাকায় গতি রোধ করে ডিবি পুলিশের সদস্যরা। তাকে দীর্ঘ তিন ঘন্টা আটক রেখে ক্রসফায়ার ও ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে ২০টি স্বর্ণের বার রেখে দিয়ে ব্যবসায়ীকে চট্টগ্রামের বারইয়ার হাট এলাকায় নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। কাউকে বিষয়টি জানালে প্রাণে মেরে ফেলাও হুমকি দেওয়া হয়েছিল।
গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওই ব্যবসায়ী ফেনীর ডিবি পুলিশ পরিদর্শক সাইফুল ইসলামসহ ছয়জনের নাম উল্লেখ করে ফেনী সদর মডেল থানায় (৩৯৫/৩৯৭/৪১২ পেনাল কোড-১৮৬০) ডাকাতির মামলা দায়ের করেন। লুট হওয়া ২০টি স্বর্ণের বারের মূল্য এক কোটি ২৩ লাখ ৪ হাজার ৫৯৭ টাকা উল্লেখ করা হয়। মামলা দায়েরের পরপরই অভিযুক্ত ডিবি পুলিশের ৬ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করেন এবং ১১ আগস্ট তাদেরকে আদালতে পাঠিয়ে প্রত্যেককে ৫ দিন করে রিামান্ডের আবেদন জানান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মনির হোসেন।
ওই দিন ফেনী আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লাহ খান ডিবি পরিদর্শক সাইফলের চারদিন ও অপর পাঁচজনকে তিনদিন করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ মঞ্জুর করা হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও ফেনী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ মনির হোসেন জানান, তিন দিনের রিমান্ড ও জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শনিবার পাঁচজন আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। তাদের প্রত্যেককে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিন করে রিমান্ডের আবেদন জানালে আদালত শুনানি শেষে প্রত্যেক আসামিকে আবারও তিন দিন করে রিমান্ডের আদেশ দেন।
ফেনী সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নিজাম উদ্দিন জানান, ব্যবসায়ীর স্বর্ণের বার লুটের ঘটনায় ডিবি পুলিশের পরিদর্শক মো. সাইফুল ইসলাম ভূঁইয়াকে আদালতের নির্দেশে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।