করোনা সংক্রমণের কারণে প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে রংপুর অঞ্চলে। শহরের তুলনায় গ্রামীণ হাটবাজারগুলোর ফার্মেসিতে পাওয়া যাচ্ছে না এসব ওষুধ। জ্বর কিংবা সর্দি হলেই চিকিৎসকের পরামর্শপত্র নেওয়ার আগেই অধিকাংশরাই প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য ছুটে যান ফার্মেসিগুলোতে। খুঁজেন প্যারাসিটামল জাতীয় ট্যাবলেট কিংবা সিরাপ কিন্তু বেশি দামেও মিলছে না এসব ওষুধ।
বুধবার (২৮ জুলাই) নগরীর বিভিন্ন সুপার মার্কেটসহ বেশ কিছু ওষুধের দোকান ঘুরে দেখা গেছে, প্যারাসিটামল জাতীয় ট্যালেট ও এইচ প্লাসসহ শিশুদের অত্যাবশ্যকীয় নাপা সিরাপের তীব্র সংঙ্কট। আবার কোথাও কোথাও বিকল্প কোম্পানির এই জাতীয় ওষুধ পাওয়া গেলে সঙ্কটের কথা বলে তা কিনতে হচ্ছে বাড়তি দামে।
বাচ্চার জ্বরের জন্য নগরীর আজিজ সুপার মার্কেটে নাপা সিরাপ কিনতে আসা রাহাদ হোসেন বলেন, করোনার এই সময়ে হাসপাতালগুলোতে প্রাথমিক চিকিৎসা নেওয়া বেশ ঝুকিপূর্ণ। গত রাত থেকে সাড়ে তিন বছরের মেয়ে বাচ্চার জ্বর। আজ নাপা সিরাপ কিনতে এসে দেখি ওষুধ ব্যবসারীরা বলছেন সাপ্লাই নেই। আর বিকল্প ওষুধ খেয়েও কাজ হবে না। দেশের এই মহামারিকালে সাধারণ সর্দি জ্বরের ওষুধেও যদি সঙ্কট হয় তবে বিষয়টা খুবই দুঃখজনক।
জানাযায়, গত এক মাস থেকে করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে প্যারাসিটামল জাতীয় ট্যালেট, নাপা, এইচপ্লাসসহ শিশুদের অত্যাবশ্যকীয় নাপা সিরাপের। কারণ জ্বর কিংবা সর্দি হলেই এই ওষুধগুলো চিকিৎসকের পরামর্শপত্র ছাড়াই প্রতিটি পরিবারের কাছে বেশ অপরিহার্য। কিন্তু সেই ওষুধ নিয়ে জেলা শহরের চেয়ে উপজেলা ও গ্রামাঞ্চলে অভিযোগের যেন কমতি নেই ক্রেতাদের।
নগরীর মুন ফার্মেসির বাবু মিয়া বলেন, এই সময়ে জ্বর সর্দির প্রকোপ একটু বেড়েছে। সাথে সাথে প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধের চাহিদাও বেড়েছে। কোম্পানিগুলোকে ২০ বক্সের অর্ডার করলে তারা দেন এক বক্স। চাহিদার তুলনায় কোম্পানি থেকে ওষুধ পাচ্ছি না।
তাই এই সঙ্কট তৈরি হয়েছে বলে জানান তিনি।
রংপুর জনস্বাস্থ্য অধিকার আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান বেলাল আহম্মেদ বলছেন, “প্যারাসিটামল জাতীয় এসব ওষুধের কৃত্রিম এই সংকট নিরসনে ওষুধ প্রশাসন কতৃক আইন সংস্কারের কোন বিকল্প নেই।”
বাংলাদেশ ক্যামিস্টস অ্যান্ড ড্রাগস্টিস সমিতির রংপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক খোন্দকার মারুফ এলাহী বলছেন, “ওষুধ ফার্মেসির ব্যবসায়ীরা নয় বরং এই প্যারাসিটামল সংকটের দায়ভার কোম্পানিগুলোর।”
এদিকে রংপুর বিভাগে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে আরও ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ৬৫৭ জন। ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত বিবেচনায় আক্রান্তের হার ২৮ দশমিক ০২ শতাংশ।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. হিরম্ব কুমার রায় বলেন, “প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ সঙ্কটের বিষয়টি তার অজানা। তবে এই জাতীয় ওষুধের সঙ্কট হওয়ার কোনো কারণ নেই।”