• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১, ২০ মুহররম ১৪৪৫

নির্বাচনী সহিংসতা: ছাত্রলীগ নেতাসহ নিহত ৬


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: নভেম্বর ২৮, ২০২১, ০৮:১৮ পিএম
নির্বাচনী সহিংসতা: ছাত্রলীগ নেতাসহ নিহত ৬

তৃতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সহিংসতায় সারা দেশে ছয়জন নিহত হয়েছেন।

তাদের মধ্যে নরসিংদীর রায়পুরায় দুই, লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে এক,  মুন্সিগঞ্জ সদরে দুই এবং খুলনার তেরখাদায় একজন মারা গেছেন। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

রোববার (২৮ নভেম্বর) এক হাজার ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে, সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া এ ভোটগ্রহণ চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।

গত ২১ জুন ও ২০ সেপ্টেম্বর প্রথম ধাপের দুই দফায় ৩৬৯টি এবং ১১ নভেম্বর দ্বিতীয় ধাপে ৮৩৩টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

নরসিংদী

পুলিশ জানিয়েছে, রোববার সন্ধ্যার দিকে ৫ নম্বর ওয়ার্ডে সদস্য পদে ভোট গণনা নিয়ে দুই প্রার্থীর কথা কাটাকাটি ও হাতাহতির ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষ ব্যালট বাক্স ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ গুলি চালায়। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় গুলিবিদ্ধ ফরিদ মিয়াকে (৩২) পাওয়া যায়। 

রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবু সাইদ মোহাম্মদ ফারুক খান জানান, ফরিদের ডান চোখে গুলিবিদ্ধ হয়েছিল। তাকে অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।অ্যাম্বুলেন্সচালক জহির মিয়া তাকে মুঠোফোনে ফরিদের মৃত্যুর বিষয়টি জানিয়েছেন।

আবু সাইদ মোহাম্মদ ফারুক খান আরিফ মিয়া (২৪) নামের সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালকের মৃত্যুর বিষয়টিও নিশ্চিত করেছেন।

ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘ গুলিবিদ্ধ আরিফকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তার লাশ নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

জানা যায়, উপজেলার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে বাসিন্দা ফরিদ মিয়া। তার বাবার নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি। এদিকে আরিফ জেলার শিবপুর উপজেলার যোশর ইউনিয়নের জানখারটেক এলাকার চান মিয়ার ছেলে। তিনি পেশায় সিএনজিচালক। 

লক্ষ্মীপুর

ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলায় দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে ছাত্রলীগ নেতা নিহত হয়েছেন।

রোববার (২৮ নভেম্বর) উপজেলার ইছাপুর ইউপির নয়নপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

নিহত ছাত্রলীগ নেতার নাম সাজ্জাদুর রহমান ওরফে সজীব (২৫)। তিনি ওই ইউনিয়নের নয়নপুর গ্রামের আবদুল সাত্তারের ছেলে, ইছাপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন।

রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার হোসেন মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে জানান, সংঘর্ষের সময় লাঠির আঘাতে সাজ্জাদুরের মাথায় জখম হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।

এলাকাবাসী জানান, শাহানাজ আক্তার ইছাপুর ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।  আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করছেন আমির হোসেন খান। বিকেলে নয়নপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডার এক পর্যায়ে সংঘর্ষ বেঁধে যায়।

রামগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি কামরুল হাসান ফয়সাল বলেন, ইছাপুর ইউনিয়নের ছাত্রলীগের নবগঠিত কমিটির সভাপতি ছিলেন সাজ্জাদুর। শাহানাজের পক্ষে ভোটকেন্দ্রে দায়িত্বে ছিলেন তিনি।

মুন্সিগঞ্জ

সদর উপজেলায় নির্বাচনী সহিংসতায় দুজন নিহত হয়েছেন। রোববার রাত আটটার দিকে উপজেলার পঞ্চসার ইউনিয়নে একজন এবং সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে বাংলাবাজার ইউনিয়নে একজনকে হত্যা করা হয়। 

পঞ্চসার ইউনিয়নে নিহত ব্যক্তির নাম মো. রিয়াজুল শেখ (৫৮)। রিয়াজুল মুক্তারপুর গোসাইবাগ এলাকার বাসিন্দা। নিহতের ভাই মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী পঞ্চসার ইউনিয়ন পরিষদের টেলিফোন প্রতীকে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

বাংলাবাজার ইউনিয়নে নিহত ব্যক্তির নাম মো. শাকিল মোল্লা (২৭)। শাকিল শরীয়তপুরের মোহাম্মদ হারুন মোল্লার ছেলে। শাকিল ওই ইউনিয়নের ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী সদস্য রাবেয়া বেগমের ভাগনে ছিলেন।

খুলনা

তেরখাদায় উপজেলার মধুপুর ইউনিয়নের কোলা গ্রামে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের পিটুনিতে আহত নৌকা প্রতীকের সমর্থক বাবুল শিকদার মারা গেছেন। রোববার সকাল ৬টার দিকে ঢাকা নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। শনিবার রাত সাড়ে ১১টায় তাকে পিটিয়ে আহত করা হয়।

নিহত বাবুল শিকদার পেশায় কৃষক। তিনি আওয়ামী লীগের একজন কর্মী ছিলেন।

Link copied!