• ঢাকা
  • বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ২৯ মাঘ ১৪৩০, ১৩ শা'বান ১৪৪৬

নাইটগার্ড যখন জেলা আয়কর অফিসের নিয়ন্ত্রক 


মাদারীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: আগস্ট ১০, ২০২১, ০৯:৩৭ পিএম
নাইটগার্ড যখন জেলা আয়কর অফিসের নিয়ন্ত্রক 

মাদারীপুরে আয়কর অফিসের এক নাইটগার্ডের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের হয়রানি ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ উঠেছে। সেই নাইটগার্ডের নাম সরোয়ার হোসেন। দায়িত্ব পালন করার কথা ঢাকা আয়কর অঞ্চল ৭-এ, কিন্তু তিনি থাকেন মাদারীপুর। মাদারীপুরের বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের আয়কর ফাইল তিনিই দেখভাল করেন।

স্থানীয়রা জানান, তিনি আয়কর অফিসের অফিসার। কথাবর্তায় চলন বলনে অফিসারের মতোই। মাদারীপুর জেলা অফিসের কাউকে পরোয়া করেন না। মাদারীপুর শহরের ব্যবসায়ী তার ভয়ে সব সময় তটস্ত থাকেন। ব্যবসায়ীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে হাতিয়ে নেন লাখ লাখ টাকা। সম্প্রতি এক ব্যবসায়ীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে হাতিয়ে নেন এক লাখ টাকা। সেই ভিডিও এসেছে সাংবাদিকদের হাতে। ভিডিওতে দেখা যায় মাদারীপুর শহরের এক প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীর কাছ থেকে লাখ টাকা নিয়েছেন তিনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যবসায়ী জানান, সরোয়ার নিজেকে আয়কর অফিসের অফিসার পরিচয় দিয়ে ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখি লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। তার বাবা একজন কৃষক হলেও তিনি মাদারীপুর সদর উপজেলার ঘটমাঝি এলাকায় প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করেছেন বহুতল ভবন। স্থানীয়দের তথ্য মতে ঢাকাতেও রয়েছে তার নামে বেনামে বিপুল পরিমান সম্পদ। তিনি নাইট গার্ডের চাকরি করলেও খুলেছেন আয়কর ফাইল। কোথায় পেলেন তিনি এতো টাকা? এর সদুত্তর নেই তার কাছেও।

অভিযোগ উঠেছে, চাকরি নাইটগার্ডের পদে হলেও কখনো রাতে তিনি অফিস পাহারা দেন না। অর্থবিত্ত ও টাকার জোরে তিনিই এখন মাদারীপুর আয়কর অফিসের নিয়ন্ত্রক। এ ব্যাপারে জানতে মাদারীপুর আয়কর অফিসে গেলে সংবাদ প্রকাশ না করার অনুরোধ করেন।

এ ব্যাপারে নাইট গার্ড সরোয়ার বলেন, ‘আমি অফিস সহায়ক। স্থানীয় ও আমার আত্মীয়স্বজনরা কর রির্টান সংশ্লিষ্ট নানা সমস্যার কারণে আমার কাছে আসে। আমি আত্মীয়তার কারণে তাদের দুই-চারটি কাজে সহযোগিতা করি। এখানে আমার তো কোনো ভুল নাই।’ 

সরোয়ার আরও বলেন, “আমার দুইতলা ব্লিল্ডিংসহ এলাকার জায়গা জমি আমার পারিবারিক। তার নামে যে অভিযোগ দেওয়া হচ্ছে তা ভিত্তিহীন।” 

জানতে চাইলে জেলা আয়কর অফিসের উপপরিচালক আক্তারুজ্জামান বলেন, “সরোয়ার ঢাকা আয়কর অঞ্চল ৭-এর একজন নাইটগার্ড। মাদারীপুরে অফিসের কাজে আসলে সেই সুবাধে কথা হয়। তাকে আমি চিনি। তবে তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের বিষয়ে আমি সংশ্লিষ্ট স্যারদের জানিয়েছি। তিনি জেলায় থেকে কারো ফাইল করা বা ভয় ভীতি দেখানোর কোনো সুযোগ নেই। যদি এটা তিনি করে থাকেন তবে অন্যায় করেছেন। বিষয়টি আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।”

Link copied!