সুনামগঞ্জে ক্ষুধার কষ্ট সইতে না পেরে একই পরিবারের মা ও দুই ছেলে বিষপান করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় মায়ের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে।
সোমবার (৪ অক্টোবর) দুপুরে জেলার শাল্লা উপজেলার বাহাড়া ইউনিয়নের সুলতানপুর গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে।
মৃত মায়ের নাম- আঁখি আক্তার (২৮)। তিনি জেলে শামসুল হকের স্ত্রী। তাদের দুই শিশু সন্তানের নাম- সিয়াম মিয়া (৭) ও রবিউল মিয়া (৫)। তারা দুই জন মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পেলেও বর্তমানে দিরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, জেলার শাল্লা উপজেলার বাহাড়া ইউনিয়নের সুলতানপুর গ্রামের দরিদ্র জেলে শামসুল হক হাওরে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। কিন্তু হাওরে এখন আর আগের মতো মাছ পাওয়া যায় না। তাই সারাবছর তাদের সংসারে অভাব লেগেই থাকতো। এ নিয়ে স্বামী ও স্ত্রীর মাঝে প্রায় সময় ঝগড়া-বিবাধ হতো।
এমতাবস্থায় প্রতিদিনের মতো সোমবার ভোরে জেলে শামসুল হক হাওরে মাছ ধরতে যায়। সেই সুযোগে সকালে তার স্ত্রী আখি আক্তার ও তার দুই ছেলে সিয়াম মিয়া, রবিউল মিয়া বাড়িতে থাকা জমিতে দেওয়ার বিষপান করেন।
এর কিছুক্ষণ পর জেলে শামসুল হক বাড়িতে ফিরে স্ত্রী ও দুই ছেলেকে মাটিতে পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার শুরু করলে আশেপাশের লোকজন ছুটে আসে। পরে ৩ জনকে উদ্ধার করে দ্রুত শাল্লা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়।
এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ৩ জনকে দ্রুত এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। পরে দুপুরে সিলেট যাওয়ার পথে গৃহবধু আঁখি আক্তারের মৃত্যু হয়। আর ২ ছেলেকে দিরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়।
এ ব্যাপারে শাল্লা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুমন ভূঁইয়া সাংবাদিকদের বলেন, “ আজ (সোমবার) সকালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় মা ও দুই শিশুকে হাসপাতালে নিয়ে আসার পর প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাদেরকে সিলেট পাঠানো হয়। পরে জানতে পেরেছি দিরাই যাওয়ার পর গৃহবধু আঁখি আক্তারের মৃত্যু হয়েছে। আর তার দুই শিশু সন্তানকে দিরাই হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে শাল্লা থানার ওসি মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, “গৃহবধূ আঁখি আক্তারের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঘটনার তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।”