করোনায় আক্রান্ত ছেলের মৃত্যুর ঘটনায় এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অবহেলা ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনেছেন শেরপুরের ঝিনাইগাতীর সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বাদশা। এ নিয়ে সোমবার (২ আগস্ট) রাত সাড়ে ১১টায় তার পরিচালিত ‘বাদশা চেয়ারম্যান’ ফেসবুক আইডি থেকে এ ঘটনার বিচার চেয়ে একটি স্ট্যাটাস দেন তিনি।
এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে ইতোমধ্যে স্থানীয় সাংসদ, উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারী কমিশনার (ভূমি), ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, পুলিশের গোয়েন্দা সংস্থায় মৌখিকভাবে অভিযোগ জানান তিনি। যদি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার না পান তাহলে দেশের প্রচলিত আইনে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি ওই স্ট্যাটাসে উল্লেখ করেন।
বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে শেয়ার করার পর শুরু হয় তোলপাড়।
ওই স্ট্যাটাসে বাদশা অভিযোগ করে বলেন, “ঝিনাইগাতী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের করোনা ওয়ার্ডে দায়িত্ব পালনকারী ডাক্তার রোববার (১ আগস্ট) কোনো টহলে যাননি। এদিকে আমার সুস্থ ছেলে অক্সিজেনের অভাবে ছটফট করতে থাকে এবং দিগ্বিদিক ছুটোছুটি শুরু করে। একপর্যায়ে হাসপাতালে অন্য একজন ডাক্তার সাধ্যমতো চেষ্টা করার পরও ছেলের শারীরিক অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। পরে তাকে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তির জন্য রিলিজ করা হয়। এ সময় করোনা ওয়ার্ড থেকে ছেলেকে ওই দিন দুপুরে নিচে নামিয়ে আনার পরে অবস্থা আরও সংকটাপন্ন হয়ে তার মৃত্যু হয়।” দায়িত্বে থাকা ডাক্তারের অবহেলা এবং স্বেচ্ছাচারিতার কারণে তার ছেলের মৃত্যু হয়েছে। ছেলের মৃত্যুর জন্য সব ধরনের দায়-দায়িত্বে থাকা ওই ডাক্তারের ওপর বর্তায় বলে তিনি উল্লেখ করেন।
মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) সকালে আমিনুল ইসলাম বাদশার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “ঝিনাইগাতী হাসপাতালে সকালে যে ডাক্তার দায়িত্বে থাকার কথা ছিল, তিনি ওই সময় কর্মস্থলে উপস্থিত ছিলেন না। এ সময় ওই ডাক্তার শেরপুর শহরে অন্য এক রোগীর অপারেশন করছিলেন। আর এদিকে সন্তান, আমার চোখের সামনে ছটফট করতে করতে মারা গেল। এমন দিন যেন কোনো পিতা-মাতাকে দেখতে না হয় এ জন্য আমি ওই ডাক্তারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব।”
এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেলে বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শেরপুরের সিভিল সার্জন ডা. আবুল কাশেম মোহাম্মদ আন্ওয়ারুর রউফ।
আমিনুল ইসলাম বাদশার ছোট ছেলে আরজু (৩৪) গত জুলাই মাসের ২৫ তারিখ করোনা শনাক্ত হয়। তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ওই মাসের ২৮ তারিখ তাকে ঝিনাইগাতী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার (১ আগস্ট) দুপুরে তার মৃত্যু হয়। আরজু পেশায় একজন তৈরি পোশাক ব্যবসায়ী ছিলেন।