গায়ে পচনধরা রোগীকে বাঁশঝাড়ে ফেলে দিলেন স্বজনরা


ফরিদপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুলাই ২৮, ২০২১, ০৯:৫২ পিএম
গায়ে পচনধরা রোগীকে বাঁশঝাড়ে ফেলে দিলেন স্বজনরা

যখন মানুষ মূল্যহীন হয়ে পরে তখন সংসারে সে বোঝা হয়ে যায়। অথচ সে কদিন আগেও সংসারের একজন আদরের অবস্থায় ছিল। কিন্তু নিয়তি মানুষকে এমন জায়গায় দাঁড় করিয়ে দেয় যে হীন মানবিকতা ভুলে মানুষ হয়ে উঠে পাষণ্ড ও অমানবিক। ঠিক যুগে যুগে যখন অধর্ম বৃদ্ধি পেয়েছে তখন ঈশ্বর তার দূত পাঠিয়েছেন ধর্ম সংস্থাপনের জন্য।

ঠিক এমনই রক্ত হিম হয়ে যাওয়া ঘটনা ঘটেছে ফরিদপুরে। সারা শরীরে বাসা বেঁধেছে অসুস্থতা, শরীরে ঘাঁ হওয়ায় এ্যাম্বুলেন্সে রাতের আঁধারে রাস্তার পাশে বাঁশঝাড়ে ফেলে গেলেন তোতা মিয়া (৫২) নামের এক রোগীকে তার স্বজনরা। ৯৯৯ এ জানানোর পর পুলিশ অসুস্থ সেই হতভাগা রোগীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। 

বুধবার (২৮ জুলাই) রাতে ফরিদপুরের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ জলিল এ তথ্য নিশ্চিত করেন।  

পুলিশ জানায়, গতকাল মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) দিবাগত রাত দেড়টায় জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে জানতে পারে কোতোয়ালি থানার চক ফতেপুর গ্রামে রাস্তার পাশে বাঁশঝাড়ের নিচে অ্যাম্বুলেন্সে করে একজন মুমূর্ষু রোগীকে ফেলে রেখে গেছে তার স্বজনরা।

খবরে পেয়ে কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এমএ জলিলসহ এসআই (নিঃ) ফুরকান খাঁন, এসআই (নিঃ) কৃষ্ণ বিশ্বাস ওই রোগীকে উদ্ধার করে ফরিদপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।

পরে পুলিশের সহযোগিতায় মুমূর্ষু রোগীকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সার্বিক সহযোগিতায় সরকারি সরবরাহকৃত ওষুধ দেন। এছাড়াও প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র সরকারিভাবে সরবরাহ না থাকায় ফরিদপুর পুলিশ সুপারের নির্দেশক্রমে এবং মহানুভবতায় ফরিদপুর জেলা পুলিশের তহবিল থেকে প্রয়োজনীয় ওষুধ ও পরিধেয় বস্ত্র সরবরাহ করা হয়।

এমএ জলিল বলেন, “খুবই অমানবিক ও দুঃখজনক একটি ঘটনা। জরুরি সেবার মাধ্যমে জানতে পেরে আমরা মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ফরিদপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করি।” 

ওসি আরও বলেন, পুলিশ সুপার নির্দেশেক্রমে পুলিশ তহবিল থেকে ওষুধসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া রোগীর স্বজনের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। ওই রোগীর সহযোগিতায় ফরিদপুর সমাজসেবা অধিদপ্তরও এগিয়ে এসেছে।

Link copied!