নারায়ণগঞ্জের বন্দরে সংরক্ষণ করা মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত জাহাজ এমভি আকরামকে অচিরেই মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘর হিসেবে রূপান্তর করা হবে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
বুধবার (৪ আগস্ট) বিকেলে নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে জাহাজটির স্থান নির্ধারণের জন্য পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের এ কথা জানান মন্ত্রী।
এ সময় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান এবং মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সচিব খাজা মিয়া।
পরিদর্শন শেষে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বলেন, “পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাঙালি জাতির ওপর যে বর্বরোচিত নির্যাতন করেছিল, তা আগামী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার উদ্দেশ্যে সরকার এমভি আকরামকে সংরক্ষণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জাহাজটিকে জাদুঘর হিসেবে গড়ে তুলতে নৌ মন্ত্রণালয়ের কাছে জায়গা চাওয়া হয়েছে। নৌ মন্ত্রণালয়ের জায়গায় মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় জাহাজটিকে জাদুঘরে রূপান্তরের কাজ করবে।”
আ ক ম মোজাম্মেল হক আরও বলেন, “এটি কোন জায়গায় করলে বেশি পর্যটক আসবেন এবং দর্শনার্থীদের কাছে আকর্ষণীয় হবে, সে ব্যাপারে পরামর্শক ও প্রকৌশলীর কাছে প্রস্তাব চাওয়া হবে।”
১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর অস্ত্র ও গোলাবারুদ বহনের কাজে ব্যবহৃত জাহাজ এমভি আকরামকে চাঁদপুরের মুক্তিযোদ্ধারা মাইনব্লাস্ট করে নদীতে ডুবিয়ে দেন। পরে নদীতে নিমজ্জিত জাহাজটি ১৯৮০ সালে টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রি করে দেয় শিল্প ব্যাংক। একই বছর চাঁদপুরের লন্ডনঘাট থেকে ডুবন্ত অবস্থায় জাহাজটি ক্রয় করেন নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার জাহাজ ব্যবসায়ী মোক্তার হোসেনসহ আরও বেশ কয়েকজন বিনিয়োগকারী। ২০০৮ সালে জাহাজটি নদী থেকে উত্তোলনের পর চাঁদপুরবাসী মানববন্ধন করে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত এই জাহাজটি সংরক্ষণের দাবি জানান। পরে সরকার জাহাজটি সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নিলেও বন্দরের সোনাকান্দা এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে দীর্ঘ ১৩ বছর যাবৎ অর্ধনিমজ্জিত অবস্থায় পড়ে আছে।