টানা বৃষ্টি আর ওপারের ঢলে আবারও ফুঁসে উঠেছে উত্তরের জীবন রেখা তিস্তা নদী।
সেই সঙ্গে স্থানীয় নদ-নদীর পানিও বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। এতে রংপুরের গঙ্গাচড়ার নদী তীরবর্তী এলাকাসহ নিম্নাঞ্চল বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। অব্যাহত ভাঙনে বিলীন হয়েছে শত শত বসতবাড়ি। ডুবে গেছে আমন ক্ষেত, ভেসে গেছে প্রায় এক হাজার পুকুরের মাছ।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, গত এক সপ্তাহ ধরে ভারি বৃষ্টির সঙ্গে উজান থেকে ধেয়ে আসছে পানি। এতে তিস্তা নদী উত্তাল হয়ে উঠেছে।
শুক্রবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টা থেকে ব্যারেজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে। এছাড়া স্থানীয় ঘাঘট, জমুনেশ্বরী, চাড়ালকাটা, ধাইজান ও খড়খড়িয়া নদী বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই করছে।
কথা হয় নদীভাঙনে নিঃস্ব হওয়া কোলকোন্দ ইউনিয়নের আব্বাস আলী, সাজু মিয়া, দুলাল মিয়া, আব্দুস সামদ, আসেক আলীসহ অনেকের সঙ্গে।
তারা জানান, গত একমাস ধরে তিস্তার ভাঙনে গ্রামের প্রায় চার শতাধিক পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছে। সব হারিয়ে নিঃস্ব তারা। নিয়তির ওপর ভর করে চলছে তাদের জীবন। এই সংকটে সরকারসহ বিত্তবানদের সহযোগিতা চান তারা। এছাড়া তিস্তার পানিতে ভেসে গেছে কোলকোন্দ, লক্ষ্মীটারী ও গজঘণ্টা ইউনিয়নের প্রায় এক হাজার পুকুরের মাছ।
আব্দুল মতিন, শাহীনুর রহমান, একলাচ মিয়া মকবুল হোসেন, পাগালু, ফজলু মিয়াসহ অনেক মৎসচাষী জানান, এবারের বন্যায় তার একেবারেই নিঃস্ব হয়ে গেছেন। গত একমাস ধরে তিস্তার পানি বাড়া-কমা করছে। কয়েকদিন আগে স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মিত বেড়িবাঁধটি ভেঙে যাওয়া ধীরে ধীরে গ্রামের উচুঁ জায়গা গুলোও তলিয়ে যায় নদীর পানিতে, ফলে তিন গ্রামের এক হাজারেরও বেশি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে নদীতে।
কোলকোন্দ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সোহরাব আলী রাজু জানান, ভারী বর্ষণে তার ইউনিয়নের বিনবিনার চর ইতিমধ্যে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে নদী গর্ভে। চরটিতে বাস করা তিনশ পরিবার অসহায় জীবন যাপন করছে। তাদের তালিকা করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে।