সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহমানের জুটি স্বপ্ন দেখাচ্ছিল বড় সংগ্রহের। কিন্তু সাকিবের বিদায়ের পর তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে বাংলাদেশের শেষ দিকের ব্যাটিং লাইন আপ। দলীয় ১৪৭ রানের সময় পঞ্চম ব্যাটার হিসেবে আউট হন সাকিব। এরপর মাত্র ৪৬ রান যোগ করতেই বিদায় নেন পাঁচ ব্যাটসম্যান। এতে ৩৮ ওভার ৪ বলে ১৯৩ রানে অল আউট হয় সাকিবরা।
আগের ম্যাচে পরিকল্পনা সফল হলেও সুপার ফোরে সেটা কাজে আসেনি। দুই দিন আগে সেঞ্চুরি হাঁকানো মিরাজ সুপার ফোরে প্রথম ম্যাচে সুপার ফ্লপ। ম্যাচের দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই শূন্য রান করে ফেরেন এই অলরাউন্ডার। নাসিম শাহের শর্ট অব লেংথ বলে ফ্লিক করতে গিয়ে মিডউইকেটে ফখর জামানের হাতে সহজ ক্যাচ দিয়ে ফিরে গেছেন মিরাজ। দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে প্রথম উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ, স্কোরবোর্ডে কোনো রান ওঠার আগেই। আগের ওভারে শাহিন শাহ আফ্রিদির বলে কোনো রান নিতে পারেননি মোহাম্মদ নাঈম।
নাঈম শেখের সঙ্গে জুটি গড়তে আসেন সুস্থ হয়ে দলে জায়গা পাওয়া লিটন দাস। দারুণ খেলতেও থাকেন তিনি। ২২ বলে এই জুটি তুলে ফেলে ৩১ রান। এরপরই বিদায় লিটনের। আফ্রিদির অফ স্টাম্পের বাইরে শর্ট অব লেংথ থেকে লাফিয়ে ওঠা বলে খোঁচা দিয়েছেন লিটন। ব্যাটের কানায় লেগে ক্যাচ গেছে রিজওয়ানের কাছে। মৃত্যু হয় ৪ চারে ১৬ রান করা লিটনের ইনিংস। হারিস রউফের বলে দলীয় ৪৫ রানের সময় বিদায় নেন ২০ রান করা নাঈম শেখ।
আবারও ব্যাট হাতে ব্যর্থ তাওহীদ হৃদয়। হারিস রউফের গতিতে পরাস্ত তাওহিদ হৃদয়। ঘণ্টায় ১৪৫ কিলোমিটার গতির বলটি ব্যাট ঘুরিয়ে খেলতে গিয়ে মিস করেছেন পুরোপুরি। দশম ওভারে বাংলাদেশ হারিয়ে ফেলেছে চতুর্থ উইকেট, স্কোরবোর্ডে ৪৭ রান। হৃদয় করেন মাত্র দুই রান।
এরপরিই দলের হাল ধরেন বাংলাদেশের দুই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিম। পাকিস্তানের বোলারদের হতাশায় ডুবিয়ে দারুণ খেলতে থাকা এই দুজন গড়ে তোলেন শত রানের জুটি। ফাঁকে সাকিব তুলে নেন অর্ধশতক। এটি তার ক্যারিয়ারের ৫৪ তম অর্ধশতক। ফিফটির পরিই অবশ্য থামতে হয় সাকিবকে। পাকিস্তানের হয়ে ব্রেকথ্রু এনে দিলেন ফাহিম আশরাফ। সেই পুরোনো শর্ট বলের তত্ত্বে গেলেন ফাহিম, সে ফাঁদে পা দিলেন সাকিব। পুল করতে গিয়ে ডিপ মিডউইকেটে ধরা পড়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। ৭ চারে সাকিব ৫৭ বলে করেন ৫৩ রান।
মুশফিকের সঙ্গে জুটি করতে আসেন শামীম হোসেন পাটোয়ারী। ইনংসের একমাত্র ছয় মারা এই ক্রিকেটার অবশ্য বেশিক্ষণ উইকেটে থিতু হতে পারেনি। ১৬ রান করে ইফতেখারের বলে আউট হন তিনি। শামীম আউট হবার আগে মুশফিক তুলে নেন ক্যারিয়ারের ৪৬ তম ফিফটি।
মুশফিকও সাকিবের মতো ইনিংসটা লম্বা করতে পারেননি। হারিস রউফের বলে আউট হবার আগে ৫ চারে করেন ৬৪ রান। তার বিদায়ের পরের বলই আউট হয়ে যান শূণ্য রানে তাসকিন আহমেদ। এরপর ১২ রান করা আফিফ ও ১ রান করা শরিফুলে উইকেট নাসিম শাহ তুলে নিলে বাংলাদেশ অলআউট হয়ে যায়। পাকিস্তানের হয়ে হারিস ৪টি ও নাসিম নেন ৩ উইকেট।