• ঢাকা
  • রবিবার, ০৫ মে, ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫

নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ব্যাটিং ব্যর্থতায় হারল বাংলাদেশ


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: অক্টোবর ২৮, ২০২৩, ১০:০৯ পিএম
নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ব্যাটিং ব্যর্থতায় হারল বাংলাদেশ
ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ডসের কাছে হেরে টানা পাঁচ ম্যাচ পরাজয়ের যাত্রা ধরে রাখলো সাকিব বাহিনী। ইডেন গার্ডেনসে বাংলাদেশের ব্যাটাররা যাওয়া আসার মিছিলে নেমেছিল। শেষপর্যন্ত নেদারল্যান্ডসের বোলারদের বিপক্ষে ১৪২ রানেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। এতেই ডাচদের বিপক্ষে ৮৭ রানে হারের লজ্জা পেতে হলো টাইগারদের। সেই সঙ্গে বিশ্বকাপে সেমিফাইনালের রেস থেকে ছিটকে গেল সাকিদের দল।

ইডেনে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে নির্ধারিত ওভারে ১০ উইকেটে ২২৯ রান করে নেদারল্যান্ডস। জবাবে বাংলাদেশ ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে ৪২ ওভার ২ বলে ১৪২ রান তুলেই গুটিয়ে যায় টাইগারদের ইনিংস।

ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই দুই ওপেনার লিটন দাস ও তানজিদ হাসান তামিমকে হারায় বাংলাদেশ। টাইগার শিবিরে প্রথম আঘাত হানে আরিয়ান দত্ত। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে এই স্পিনারের গুড লেন্থের বলে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে টপ এডজ হয় লিটনের। লেগ স্লিপের দিকে খানিকটা সরে এসে সহজ ক্যাচ নিয়েছেন উইকেটরক্ষক স্কট এডওয়ার্ডস। লিটন ১২ বলে ৩ রান করে বিদায় নেন।

পরের ওভারেই ফিরেছেন আরেক ওপেনার তানজিদ। তিনিও উইকেটরক্ষকের গ্লাভসে ধারা পড়েন। ৩ চারে তামিম ১৫ রান করে দলকে চাপের মধ্যে রেখে বিদায় নেন। দুই ওপেনারকে হারিয়ে দল যখন চাপে তখন মেহেদি হাসান মিরাজ আক্রমণান্ত ব্যাট চালিয়ে চাপ কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছেন। ঠিক তখনই বিপদ আরো বাড়ান নাজমুল হোসেন শান্ত। অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বল জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলতে গিয়ে ঠিকমতো টাইমিং করতে না পারাই স্লিপের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। ৯ রান করে শান্ত ফেরায় দলীয় ফিফটির আগেই টপ অর্ডারের তিন ব্যাটারকে হারায় বাংলাদেশ।

শান্তর বিদায়ের পর ক্রিজে আসেন টাইগার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। বিশ্বকাপে ব্যাট হাতে অফফর্মে থাকা সাকিব এদিনও তার ব্যর্থতা ধরে রেখেছেন। ফন ম্যাকারানের রাইজিং বলে ব্যাট চালিয়ে এডওয়ার্ডের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ৫ রান। সাকিব ফেরার চার বল পরই ফিরলেন মেহেদি মিরাজও। এই অলরাউন্ডারের ব্যাট থেকে আসে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। মিরাজ ৪০ বলে ৫ চারে ও ১ ছক্কায় করে ৩৫ রান।

মিরাজের বিদায়ের পর মেহেদী হাসানকে নিয়ে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ব্যাটিং বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করেন। কিন্তু ৩০ ওভার শেষের আগেই রান আউটে কাটা পড়েন মেহেদী। এতেই বাংলাদেশের এদিনের সর্বোচ্চ ৩৮ রানের জুটি ভেঙে যায়। এরপর মাহামুদউল্লাহ ২০ রানে ফিরলে টাইগারদের গুটিয়ে যাওয়ার অপেক্ষায় থাকে ডাচরা। শেষদিকে মুস্তাফিজুর রহমানের ও তাসকিনের ২৯ রানে জুটি অপেক্ষা রাখে ম্যাচ শেষের। নেদারল্যান্ডসের হয়ে বল হাতে ফন মিকেরেন নেন ৪ উইকেট।

এর আগে, টস হেরে ফিল্ডিংয়ে নেমে শুরুতেই ডাচদের দুই ওপেনারকে ফিরিয়ে দেন টাইগার পেসাররা। দলীয় ৪ রানের ভিতর দুই ওপেনারকে হারায় তারা। ম্যাচের দ্বিতীয় ওভারের চতুর্থ বলে তাসকিন আহমেদ ফেরান ৩ রানে থাকা বিক্রমজিত সিংকে। পরের ওভারেই ওপেনার ম্যাক্স ও‍`ডাউডকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে দ্বিতীয় সাফল্য এনে দেন শরিফুল ইসলাম। এদিন রানের খাতাই খোলা হয়নি ম্যাক্সের।

তবে তিনে নেমে ওয়েসলি বারেসি শুরু করেন পালটা আক্রমণ। তিনি বিধ্বংসী হয়ে ওঠার আগেই তাকে ফেরান মুস্তাফিজুর রহমান। ফিজের স্লোয়ার ফুল লেন্থ বলে শট খেলতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন বারেসি, দৌড়ে এসে সেটা লুফে নেন সাকিব। ৪১ বলে ৪১ রান করে আউট হন ভয়ংকর হয়ে ওঠা বারেসি। পরের ওভারেই সাকিব ফেরান আরেক সেট ব্যাটার কলিন অ্যাকারম্যানকে।

এরপরে ৭৪ বলে ৪৪ রানের জুটি গড়েন বাস ডি লিডি ও দলপতি স্কট। সেই জুটি ভেঙে আবারও নেদারল্যান্ডসকে চাপে ফেলেন তাসকিন। দলীয় ১০৭ রানে উইকেটকিপার মুশফিকুর রহিমের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন লিডি। ৩২ বলে ১৭ রান আসে লিডির ব্যাট থেকে।

এরপরে নেদারল্যান্ডসকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন সাইব্রান্ড এঙ্গেলব্রেখট ও অধিনায়ক স্কট। সুযোগ পেলেই এই দুজন রানের খাতা বড় করার চেষ্টা করছিলেন। তবে দুজনকেই অনেক আগেই ফেরাতে পারত বাংলাদেশ। কিন্তু একাধিকবার ক্যাচ মিস করায় সেই সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে টাইগারদের।

৪৫তম ওভারে ডাচ দলপতিকে ফিরিয়ে স্বস্তি আনেন মুস্তাফিজ। স্কট ফেরার আগে ৮৯ বলে ৬৮ রান করেন। এরপরেই এঙ্গেলব্রেখট করেন ৬১ বলে ৩৫ রান। শেষ দিকে লোগান ফন বিকের ১৬ বলে ২৩ রানের ক্যামিও ইনিংসে দুইশ পার করে নেদারল্যান্ডস। শেষ পর্যন্ত ২২৯ রানের পুঁজি পায় ডাচরা। বাংলাদেশের হয়ে শরিফুল, তাসকিন, মোস্তাফিজ ও মাহেদী হাসান শিকার করেন দুই উইকেট।

Link copied!