এবারের আসরে প্রথম দুই ম্যাচে জয়ের দেখা পায়নি অস্ট্রেলিয়া ও শ্রীলঙ্কা। তাই দল দুইটি প্রথম জয়ের জন্য মুখোমুখি হয়েছে একে অপরের। সেখানে শেষ হাসিটা হেসেছে অস্ট্রেলিয়া। অজিরা লঙ্কানদের হারিয়েছে ৫ উইকেটে। লঙ্কানদের দেওয়া ২১০ রানের লক্ষ্য অজিরা টপকে যায় ৫ উইকেট হারিয়ে। ম্যাচে তখনও বাকি ছিল ৮৮ বল।
লক্ষ্ণৌতে ব্যাট করতে নেমে দুর্দান্ত শুরু করেন লঙ্কান দুই ওপেনার কুশল পেরেরা ও পাথুম নিশাঙ্কা। দুজনই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং প্রথম পাওয়ার প্লেতে তুলে নেন ৫১ রান। ম্যাচের ২২তম ওভারে পাথুম নিশাঙ্কাকে ফিরিয়ে ১২৫ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন প্যাট কামিন্স। তার আগেই অবশ্য হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন নিশাঙ্কা। ৫৮ বলে হাফসেঞ্চুরি করেন তিনি। কামিন্সের বলে ওয়ার্নারের হাতে ধরা পড়ার আগে এই ওপেনারের ব্যাট থেকে এসেছে ৬১ রান।
এরপর কুশল পেরেরাকেও ফিরিয়েছেন কামিন্স। ব্যক্তিগত ফিফটি করে সেঞ্চুরির দিকে এগোচ্ছিলেন এই ওপেনার। তবে ৭৮ রানে কাটা পড়েছেন তিনি। ২৭তম ওভারে কামিন্সের বলে লাইন মিস করে বোল্ড হয়েছেন পেরেরা।
তিনে নেমে সুবিধা করতে পারেননি অধিনায়ক কুশল মেন্ডিস। ইনফর্ম এই ব্যাটসম্যান সাজঘরে ফিরেছেন দ্রুতই। ২৮তম ওভারের শেষ বলে অ্যাডাম জাম্পাকে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে বল তুলে দেন আকাশে। খানিকটা দৌড়ে এসে ডিপ মিড উইকেটে দুর্দান্ত ক্যাচ নিয়েছেন ডেভিড ওয়ার্নার। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ১৩ বলে ৯ রান।
মেন্ডিসের পথেই হেঁটেছেন সাদিরা সামারাবিক্রমাও। এই ব্যাটারকেও ফিরিয়েছেন জাম্পা। ৩০তম ওভারের প্রথম বলটি স্টাম্পের ওপর করেছিলেন জাম্পা। টার্ন করেনি, সোজা প্যাডে আঘাত হানে। আম্পায়ার আউট দিলে রিভিউ নেন ব্যাটার, কিন্তু লাভ হয়নি। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ৮ বলে ৮ রান।
ম্যাচের ৩২.১ ওভারের সময় ম্যাচে হানা দেয় বৃষ্টি। প্রায় ১৫ মিনিট খেলা বন্ধ থাকার পর আবারও খেলা শুরু হয়। ফিরেই মিচেল স্টার্ক তুলে নেন ধনঞ্জয়া ডি সিলভার উইকেট। ৩২.৩ ওভারের সময় সিলভা ফিরেন ৭ রান করে।
এরপর লোয়ার মিডল অর্ডারে কেউ দাঁড়াতেই পারেননি। দুনিথ ভেল্লালেগে-চামিকা করুণারত্নেরা দ্রুত ফিরলে বেশিক্ষণ টিকেনি লঙ্কানদের ইনিংস। ৪৪তম ওভারে ২০৯ রান তুলে অলআউট হয়েছেন তারা। ১৫৭ রানের দ্বিতীয় উইকেট বিদায়ের পর লঙ্কানরা স্কোর বোর্ডে ৫২ রান যোগ করতেই হারায় শেষ ৮ ব্যাটসম্যান। অজিদের পক্ষে অ্যাডাম জাম্পা ৮ ওভারে ৪৭ রানে নেন ৪ উইকেট।
স্বল্প রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে অজি দুই ওপেনার মিচেল মার্শ ও ডেভিড ওয়ার্নার শুরু থেকেই হাত খুলে খেলতে থাকেন। ৩ ওভারেই তুলে নেন ২৪ রান। কিন্তু চতুর্থ ওভারে এসেই দুই উইকেট তুলে নেন দিলশান মাদুসানকা। তিনি তার করা দ্বিতীয় ওভারের প্রথম ও শেষ বলে তুলে নেন ডেভিড ওয়ার্নার ও স্টিভেন স্মিথের উইকেট। দুজনই আউট হন এলবিডব্লিইউ। ওয়ার্নার করেন ১১ রান করে আউট হলেও স্মিথের নামের পাশে স্কোর শূন্য।
এরপর মার্নাস লাবুশেনকে নিয়ে ৫৬ রানের এক জুটি গড়ে প্রাথমিক ধাক্কা সামাল দেন মার্শ। কিছুটা ব্যাট হাতে আগ্রাসী ছিলেন মার্শ। ৫৬ রানের ভিতর তারেই ছিল ৩৭ বলে ৩৮ রান। অবশ্য হাফ সেঞ্চুরির পর নিজের ইনিংসটা বড় করতে পারেননি মার্শ। ৫২ রান করে রান আউট হয়ে ফেরেন তিনি। ৫১ বলে তার করা রানটি সাজানো ছিল ৯টি চারে।
এরপর অজিদের জয়ের পথটা আরও সহজ করে দেন জশ ইংলিশ ও লাবুশেন। দুজনের দারুণ ব্যাটিংয়ে লঙ্কানদের ম্যাচ থেকে ছিটকে দেয়। এই দুজনের ৭৭ রানের জুটি ভাঙে ৪০ রান করা লাবুশেনের বিদায়ে। লঙ্কান সফল বোলার মাদুসানকা তুলে নেন তার উইকেট। অবশ্য তার বিদায়ের আগে জশ ইংলিশ তুলে নেন ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় হাফসেঞ্চুরি।
এরপরের ইংলিশের সঙ্গে জুটি গড়েন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। ২৬ বলে ৩৪ রানের এই জুটি ভাঙে ৫৮ রান করা জশ ইংলিশের বিদায়ে। এরপর মার্কাস স্টয়নিসকে নিয়ে খেলা শেষ করে আসেন ম্যাক্সওয়েল। ম্যাক্সওয়েল ৩১ ও স্টয়নিস ২০ রানে অপরাজিত ছিলেন। লঙ্কানদের হয়ে তিন উইকেট নেন মাদুসানকা।