নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে মোট ৩০টি রাজনৈতিক দল ও পেশাজীবী সংগঠন নাম জমা দিয়েছে। আওয়ামী লীগসহ ২৪টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল এবং ছয়টি পেশাজীবী সংগঠনের পক্ষ থেকেও সার্চ কমিটিতে এই নাম দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৫টা পর্যন্ত রাজনৈতিক দল ও পেশাজীবী সংগঠনগুলো এই নাম প্রস্তাব করে।
এর আগে বিকেলে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্মসচিব শফিউল আজিম। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ অনুসন্ধান কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দিচ্ছে।
এদিকে দুপুর সাড়ে ১২টায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে নাম জমা দেন দলটির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ এবং উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান।
এ বিষয়ে ড. সেলিম মাহমুদ বলেন, “আমরা কেবল বার্তাবাহক হিসেবে দলের পক্ষে সিলগালা করা একটা কাগজ জমা দিয়েছি।”
তবে বিশ্বস্ত সূত্র বলছে, আওয়ামী লীগ অনধিক ১০ জনের নামের তালিকা দিয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্মসচিব শফিউল আজিম বলেন, “আমরা ৬ ফেব্রুয়ারি গণবিজ্ঞপ্তি দিয়েছিলাম। ই-মেইল ও সরাসরি বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ ছিল। সেক্ষেত্রে আমরা যথেষ্ট সাড়া পেয়েছি। দেশ-বিদেশ থেকে এটি বেশ স্বতস্ফূর্ত ছিল। এই পর্যন্ত কেউ নাম দিতে পারেননি, এমন কোন অসুবিধার কথা আমরা শুনতে পাইনি। সেক্ষেত্রে আমরা অনেক সংখ্যক নাম পেয়েছি এটা বলতে পারি।”
শফিউল আজিম আরও বলেন, “শুক্রবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে আমরা মনোনয়ন চেয়েছিলাম। এ সময়ে আমরা ২৪টি রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে প্রস্তাব পেয়েছি। এছাড়া ছয়টি পেশাজীবী সংগঠনের পক্ষ থেকে নাম পেয়েছি। এই ছয় সংগঠনের মধ্যে বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ), কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট ও ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউও আছে।”
ব্যক্তিগত পর্যায় থেকে নাম প্রস্তাব এসেছে কি না- জানতে চাইলে যুগ্মসচিব বলেন, “হ্যাঁ, সেটা তো ই-মেইলে এসেছে। আজকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সময় ছিল, আমাদের আরও কাজ রয়ে গেছে। সেগুলো আমরা কম্পাইল করবো, যেভাবে সিসটেমেটিক ওয়েতে করা হয়। আমাদের যে পদ্ধতি আছে, সেভাবে আমরা নির্ভুলভাবে করবো। ই-মেইলে বেশ বড় সংখ্যায় আমরা সাড়া পেয়েছি। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত বলতে পারবো না। আমরা এখন এগুলো নিয়ে কাজে বসবো।”
মোট কতটি নাম প্রস্তাব করা হয়েছে- জানতে চাইলে শফিউল বলেন, “প্রতিটি রাজনৈতিক দল সর্বোচ্চ ১০টি নাম প্রস্তাব করতে পারবে। এটাই নিয়ম ছিল, সেই অনুযায়ী তারা করেছেন। মোট কতটি নাম এসেছে সেই গণনায় এখনো আমরা যাইনি, আমরা কেবল ক্লোজ করলাম একটু আগে। আমরা সেটা কম্পাইল করে কমিটির সামনে তুলে ধরবো, কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে।”
এদিকে ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন, ২০২২’ অনুসারে নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করে গত ৫ জানুয়ারি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। আইন অনুযায়ী কমিটিকে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ পেশ করতে হবে।
অন্যদিকে কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি। নবগঠিত সার্চ কমিটি প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও চারজন নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের মাধ্যমে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করবে।