মহান বিজয় দিবস-২০২১, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে রাজধানীজুড়ে কড়া নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, এলাকার প্রতিটি মোড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত রয়েছেন। রাজধানীকে ঘিরে কড়া নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। কয়েক স্তরের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিশেষ পরিস্থিতি মোকাবিলায় সোয়াট ও বোম ডিসপোজাল ইউনিটকে সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানকে ঘিরে অনুষ্ঠানস্থলে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকছেন পুলিশ, এপিবিএন, এসএসএফ, পিজিআরসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। এছাড়া এসবি, এসএসএফ, র্যাব ও ডিএমপির ডগ স্কোয়াড দিয়ে সুইপিং করা হচ্ছে। নিরাপত্তা নিশ্চিতে সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালন করবেন বিভিন্ন সংস্থার সদস্যরা।
বিজয় দিবস উপলক্ষে বিদেশি রাষ্ট্রীয় অতিথি দেশে এসেছেন। তাদের অবস্থানের জায়গা এবং যেসব স্থানে যাবেন, সেখানেও থাকছে কঠোর নিরাপত্তা। সেই অনুযায়ী বিভিন্ন সড়কে যান চলাচলও নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে।
আয়োজকরা জানান, জাতীয় প্যারেড স্কয়ার ও জাতীয় সংসদের সামনে মুজিববর্ষের সমাপ্তি ও বিজয় দিবসের উদ্বোধন অনুষ্ঠান হবে। বিদেশি অতিথিদের অংশগ্রহণে বিজয় দিবসের মূল অনুষ্ঠানটি হবে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায়। ১৬ ডিসেম্বর প্যারেড স্কয়ারে কুচকাওয়াজ হবে বড় আকারে। সেখানে ৬টি দেশ মিলিয়ে আন্তর্জাতিক একটি প্যারেড হবে। অনুষ্ঠানস্থলের সার্বিক নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে।
কঠোর নিরাপত্তার প্রসঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, সড়কে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়েছে। কাউকে সন্দেহ হলেই তল্লাশি চলবে। প্রত্যেক ব্যক্তি ও যানবাহনে যথাযথভাবে তল্লাশি করা হবে। কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।
জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি থেকে ‘মহা বিজয়ের মহানায়ক’ শিরোনামে ১৬ ও ১৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠান হবে। এসব অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করেও থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১৬ হাজার সদস্য। এছাড়া নিরাপত্তা জোরদারে আকাশ থেকে হেলিকপ্টারেও টহল দেওয়া হবে।
১৬ ডিসেম্বর বিকেল সাড়ে ৪টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারা দেশে একটি শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করবেন। দেশের সংস্কৃতি, প্রকৃতি, পরিবেশ সবমিলিয়ে ৫০ বছরের অগ্রগতি তুলে ধরা হবে অনুষ্ঠানে। সব শ্রেণি-পেশার মানুষ এতে অংশ নেবেন। প্রধানমন্ত্রীর শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনাকে কেন্দ্র করেও সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থা নেওয়া হবে।
র্যাবের লিগ্যাল আ্যন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, দেশের সব স্থানেই র্যাবের গোয়েন্দা ও আভিযানিক কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি ও ইউনিফর্ম টহল বাড়ানো হয়েছে। র্যাবের সাইবার মনিটরিং টিম অনলাইন নজরদারির মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম জানান, সংসদ ভবনের আশপাশের এলাকার প্রতিটি ভবনে পোশাকে ও সাদা পোশাকে থাকবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীর বাহিনীর সদস্যরা। সবাইকেই নিরাপত্তা তল্লাশির মধ্য দিয়ে ভেন্যুতে প্রবেশ করতে হবে। স্বাস্থ্যবিধির বিষয়ে যে বিধিনিষেধ রয়েছে তা কঠোরভাবে পালন করা হবে।
এদিকে নিরাপত্তা নিশ্চিতে এক সপ্তাহ ধরে সব ভেন্যুর আশপাশ, আবাসিক হোটেল, বহুতল ভবন, মেস, বাসাবাড়িতে ব্লক রেইড করা হয়েছে বলেও জানান ডিএমপি কমিশনার।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী, মুজিববর্ষের সমাপনী দিন উদযাপন ও বাংলাদেশ-ভারত বন্ধুত্বের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ভারতের রাষ্ট্রপতি ১৫ থেকে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে অবস্থান করবেন। ভারতের ফার্স্টলেডি, রাষ্ট্রপতির মেয়ে, ভারতের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী, দুজন সংসদ সদস্য ও পররাষ্ট্রসচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলাসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও বাংলাদেশ সফরে এসেছেন।