পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের সব সিদ্ধান্ত সঠিক নয়। যুক্তরাষ্ট্রেও প্রতিবছর লাখ লাখ লোক নিখোঁজ হয়। পুলিশের গুলিতে হাজারও মানুষ মারা যায়। কিন্তু তার জন্য বাহিনীর সদস্যদের কোনো শাস্তি দেওয়া হয় না।”
মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
ভারতের রাষ্ট্রপতির আগামীকালকের সফর উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আইনমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আমাকে আলোচনা করে একটি করে উত্তর দেওয়ার জন্য দায়িত্ব দিয়েছেন। একা হুট করে উত্তর দেওয়া ঠিক হবে না। আমাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক অত্যন্ত মধুর। প্রতিনিয়ত তাদের সঙ্গে বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনা করছি। তারা যাতে তাদের অবস্থান পরিবর্তন করে, আমরা সেই প্রচেষ্টাই চালাব।”
সম্প্রতি মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র্যাবের সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। গত ৯ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে পৃথকভাবে এই নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট (রাজস্ব বিভাগ) ও পররাষ্ট্র দপ্তর।
নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা কর্মকর্তাদের মধ্যে র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ রয়েছেন। তিনি বর্তমানে বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি)। বেনজীর আহমেদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তর। একই সঙ্গে তিনি দেশটির ট্রেজারি ডিপার্টমেন্টের নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়েছেন।
এছাড়া র্যাবের বর্তমান মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) খান মোহাম্মদ আজাদ, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) তোফায়েল মোস্তাফা সরোয়ার, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) মো. জাহাঙ্গীর আলম ও সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) মো. আনোয়ার লতিফ খানের ওপরও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে মার্কিন ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট।
মোমেন বলেন, “হঠাৎ করে কেন তারা (যুক্তরাষ্ট্র) নিষেধাজ্ঞা দিল, এটা নিয়ে ওদের সঙ্গে আলোচনা করব। আমেরিকার সব সিদ্ধান্ত সঠিক, এমন না। এর ভূরিভূরি এক্সাম্পল রয়েছে। আমরা আশা করি, ওই দেশে পরিপক্ব লোকজন আছেন, জ্ঞানী লোক আছেন, তারা তাদের অবস্থান পরিবর্তন করবেন। আমরা এখন সেই প্রচেষ্টাই চালাব। তাদের সঙ্গে আমাদের আলোচনা অব্যাহত থাকবে।”
নিষেধাজ্ঞায় ঢাকা ও ওয়াশিংটন সম্পর্কে কোনো প্রভাব পড়বে কি না জানতে চাইলে মোমেন বলেন, “দুই দেশের সম্পর্কে কোনো প্রভাব পড়বে না বলে আমি আশা করছি।”