আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, “গণমানুষের অধিকার হরণে চ্যাম্পিয়ন বিএনপি আজ মানবাধিকারের কথা বলছে। তাদের এসব গাল-গল্প জনগণের হৃদয়তল এখন স্পর্শ করে না।”
বুধবার (৮ ডিসেম্বর) ওবায়দুল কাদের এক বিবৃতিতে এসব মন্তব্য করেন।
বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, “মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপি নেতাদের লাগামহীন মিথ্যাচার, অশালীন বক্তব্য ও অপপ্রচারের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।”
কাদের বলেন, “বিএনপি নেতারা বলছেন, আওয়ামী লীগ নাকি ১৯৭১ সালের পর জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া শুরু করে। বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্য উদ্ভট আবিষ্কার ছাড়া আর কিছুই নয়। মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান আওয়ামী লীগ। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে বাঙালির যা কিছু মহৎ অর্জন তা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই হয়েছে। অপর দিকে যে গোষ্ঠী মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করার মাধ্যমে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে এ দেশে রাজনীতি শুরু করেছিল, স্বাধীন বাঙালি জাতিকে স্বৈরতন্ত্রের নাগপাশে আবদ্ধ করে গণতন্ত্র হরণের মাধ্যমে মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল- চিহ্নিত সেই অশুভ শক্তিই হলো বিএনপি। তারা এখনও সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে সঙ্গে নিয়ে দেশবিরোধী অপতৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে।”
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, “শুরু থেকেই বিএনপি জনবিচ্ছিন্ন একটি রাজনৈতিক দল। ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তই তাদের রাজনীতির একমাত্র হাতিয়ার। তারা নিজেদের জনবিচ্ছিন্নতা ঢাকতেই এ ধরনের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও অসংলগ্ন প্রলাপ বকছেন। সেইসঙ্গে হতাশা আড়াল করতে মিডিয়াতে নানা কাল্পনিক কথা বলছেন। আওয়ামী লীগ এ দেশের জনগণের প্রাণের সংগঠন, জনগণই আওয়ামী লীগের মূল শক্তি। আওয়ামী লীগের প্রতি জনগণের পূর্ণ সমর্থন, আস্থা ও বিশ্বাস রয়েছে।”
সাধারণ সম্পাদক আরো বলেন, “বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এ দেশের জনগণের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটেছে ধারাবাহিকভাবে জনগণের আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক অগ্রগতি সাধিত হচ্ছে। অথচ বিএনপি নেতারা জনগণের ওপর নিপীড়নের ভিত্তিহীন কল্পকথা বলে চলেছেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রতিহিংসা ও নির্যাতন-নিপীড়নের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। বিএনপির এসব বক্তব্য ভূতের মুখে রাম রাম ধ্বনির মতো। এ দেশের জনগণ ভালোভাবেই জানে, বিএনপির ইতিহাস হত্যা, ষড়যন্ত্র আর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নিপীড়নের ইতিহাস। বন্দুক ও বুটের তলায় জনগণকে জিম্মি করে ক্ষমতা দখলের ইতিহাস। তারা মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারী প্রত্যেকটি দেশপ্রেমিক নাগরিকের শত্রু।”
ওবায়দুল কাদের বলেন, “২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে তারা প্রতিহিংসার আগুনে ভস্মীভূত করেছিল ৫৬ হাজার বর্গমাইলের বাংলাদেশ। ৩০ লাখ শহীদের রক্তে রঞ্জিত এই পবিত্র ভূমিকে হত্যা-ধর্ষণ লুটপাট-অগ্নিসংযোগ অত্যাচার-নির্যাতন সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের অভয়ারণ্যে পরিণত করেছিল। বিএনপির সন্ত্রাসীদের হাতে এ দেশের গণতান্ত্রিক শক্তির কেন্দ্রবিন্দু বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ হারিয়েছিল ২১ হাজার নেতাকর্মীকে। একই সঙ্গে সংখ্যালঘু নির্যাতনে ’৭১-কেও হার মানিয়েছিল তারা। ২১ আগস্টের মতো বর্বরোচিত নারকীয় গ্রেনেড হামলা সংঘটিত হয়েছিল।”
এ সময় বিএনপি নেতাদের অসংলগ্ন বক্তব্য, মিথ্যাচার-অপপ্রচার ও অপরাজনীতির বিরুদ্ধে দেশবাসীকে সর্তক থাকার আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের।