ব্যাংকের একটি চেকে ‘ডিসেম্বর’ শব্দটি বাংলায় লেখার কারণে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের চেক ফেরত দিয়েছে ব্যাংক। এতে তীব্র ক্ষোভ জানিয়েছেন মন্ত্রী।
এ ঘটনা নিয়ে নিজের চূড়ান্ত আক্ষেপ তুলে ধরতে তার আত্মহত্যা করতে ইচ্ছা করছে বলেও ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে মোস্তাফা জব্বার ওই ঘটনার কথা তুলে ধরেন। তবে ব্যাংকের নাম তিনি প্রকাশ করেননি।
ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজের পোস্টে মোস্তাফা জব্বার লিখেছেন, ‘মন চাইছে আত্মহত্যা করি। একটি চেকে আমি ডিসেম্বর বাংলায় লিখেছি বলে কাউন্টার থেকে চেকটি ফেরত দিয়েছে। কোন দেশে আছি?’
এদিকে মন্ত্রীর এই পোস্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাড়া ফেলেছে। ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই ওই পোস্টে পড়েছে প্রায় সাড়ে চার হাজার রিয়্যাকশন। ইতিমধ্যে পোস্টটি প্রায় পাঁচশ জন শেয়ার করেছেন।
এ প্রসঙ্গে একটি জাতীয় দৈনিকে দেওয়া এক বক্তব্যে মোস্তাফা জব্বার জানান, ব্যাংকটির মতিঝিলের প্রিন্সিপাল শাখায় তার হিসাব। কিন্তু ব্যাংকটির এলিফ্যান্ট রোড শাখায় চেক জমা দিলে তা ফেরত দেওয়া হয়। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, “চেকে বরাবরই মাসের নাম আমি বাংলায় লিখি। কিন্তু প্রিন্সিপাল শাখায় এ নিয়ে আগে কোনো সমস্যা হয়নি। এবারের চেকেও আমি তারিখটি লিখেছি “০২ ডিসেম্বর, ২০২১”। এটি ছিল বেয়ারার চেক। তিনি ব্যাংকটির এলিফ্যান্ট রোড শাখায় জমা দিতে গিয়ে প্রথমে ব্যর্থ হন মাসের নাম বাংলায় লেখার কারণে। পরে আমি যোগাযোগ করলে চেকটি অনার হয়।”
ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে কোনো প্রতিষ্ঠানকে খাটো করতে চাননি বলেও এই গণমাধ্যমকে জানান মন্ত্রী। এ বিষয়ে তিনি বলেন, “ভাষার মর্যাদা রক্ষায় এটি করেছি। কারণ বাংলাদেশই একমাত্র ভাষাভিত্তিক রাষ্ট্র। ভাষার জন্যই এই রাষ্ট্রের জন্ম। আগে প্রযুক্তিগত দিক থেকে বাংলা কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও এখন সেই অবস্থা নেই।”
এদিকে মন্ত্রী পরে নিজেও তার ওই পোস্টে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টি কমেন্টের ঘরে জানিয়েছেন।
এ ঘটনায় পোস্টে কমেন্টের মাধ্যমে অনেকেই এর নিন্দা জানিয়েছেন। আবার কেউ কেউ ‘হা হা‘ রিয়্যাকশনও দিয়েছেন। পরে তাদের উদ্দেশেও একটি কমেন্ট করেছেন মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
তার কমেন্টে মন্ত্রী লিখেছেন, “আপনারা অনেকেই আমার দুর্দশায় সংহতি প্রকাশ করেছেন। ধন্যবাদ। কেউ কেউ হা হা করেছেন, তাহারা ‘কাহার জন্ম নির্ণয় না জানি’।”