• ঢাকা
  • শনিবার, ১২ অক্টোবর, ২০২৪, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১, ৯ রবিউস সানি ১৪৪৬

পাচার হওয়া সম্পদ উদ্ধারে যা করছে সরকার


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১০, ২০২৪, ০৬:১৮ পিএম
পাচার হওয়া সম্পদ উদ্ধারে যা করছে সরকার
বিদেশে লক্ষাধিক কোটি টাকা বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ থেকে ঠিক কী পরিমাণ নগদ অর্থ ও সম্পদ পাচার হয়েছে সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই দেশে। তবে বৈশ্বিক বাণিজ্যভিত্তিক কারসাজি, হুন্ডি, চোরাচালানসহ নানা কৌশলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে লক্ষাধিক কোটি টাকা পাচার হয়েছে বলে হিসাব দিচ্ছে বিদেশে সংস্থাগুলো।

ওয়াশিংটনভিত্তিক অর্থিক খাতের গবেষণা সংস্থা গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইনটেগ্রিটির (জিএফআই) তথ্য বলছে, বাংলাদেশ থেকে গড়ে প্রতি বছর ৭৫৩ কোটি ৩৭ লাখ ডলার বা ৮০ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে।

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বিদেশে পাচার হওয়া বিপুল পরিমাণ সম্পদ উদ্ধারে নানামুখী পরিকল্পনা ও উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (এফবিআই) ও জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধ সংক্রান্ত কার্যালয় (ইউএনওডিসি) এ ব্যাপারে সহায়তা করছে।

এফবিআই অ্যাসিস্ট্যান্ট লিগ্যাল অ্যাটাশে রবার্ট ক্যামেরুন ও পুলিশ লিয়াজোঁ স্পেশালিস্ট মুহাম্মদ আমিনুল ইসলামের সমন্বয়ে একটি প্রতিনিধিদল গত সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে করেছে। রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দুদকের মানি লন্ডারিং বিভাগের মহাপরিচালক মোকাম্মেল হক, পরিচালক গোলাম শাহরিয়ার চৌধুরী ও আবদুল্লাহ-আল-জাহিদ।

এফবিআইয়ের পর এবার ইউএনওডিসি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) সংস্থার প্রধান কার্যালয়ে বৈঠক করেছে দুদক। পাঁচ সদস্যের দলের নেতৃত্ব দেন ইউএনওডিসি দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক প্রধান মার্কো তাইক্সিরা। বৈঠকে দুদকের কার্যক্রম সম্পর্কে প্রতিনিধিদলকে অবহিত করা হয়। একইসঙ্গে দুদকের সক্ষমতা বাড়াতে বিশেষ করে অর্থ পাচার প্রতিরোধ ও পাচার করা সম্পদ পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে ইউএনওডিসি কীভাবে সহযোগিতা করবে সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

ইউএনওডিসি প্রতিনিধিদলের পক্ষ থেকে দুদককে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। এর আগের দিন এফবিআইয়ের দুই সদস্যের প্রতিনিধি দলটি দুদকের মানি লন্ডারিং ও লিগ্যাল শাখার মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিশেষ সভায় অংশ নেন। এফবিআইয়ের পক্ষ থেকেও মানি লন্ডারিংয়ের বিষয়ে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা ও জাতিসংঘের বিশেষ সংস্থার সহযোগিতার বিষয়ে দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন বলেন, “দুদকে মানি লন্ডারিং উইং রয়েছে। টাকা ফেরত আনার বিষয়ে সব জায়গা থেকে সহযোগিতা নেবে দুদক। আমাদের কার্যক্রম চলমান।”

ব্লিঙ্কেনকে টিআইবির চিঠি
বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ ফ্রিজ করা ও ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ নিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ও অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল-ইউএস ও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) ওয়াশিংটনে পাঠানো চিঠিতে সই করেছেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান ও টিআই ইউএস এর নির্বাহী পরিচালক গ্যারি কালম্যান। তারা পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে বাংলাদেশ সরকারকে সক্রিয় সহযোগিতার আহ্বান জানান।

এর আগে, গত ৩০ আগস্ট যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র ও বৈদেশিক উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বাংলাদেশিদের অবৈধ সম্পদ ফ্রিজ ও দেশে ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ নিতে আহ্বান জানিয়ে চিঠি পাঠিয়েছিলো টিআইবি ও যুক্তরাজ্যভিত্তিক চারটি দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা।

এছাড়াও, সুইজারল্যান্ড, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশ, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, হংকং ও সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ-সম্পদ ফেরত আনার উদ্যোগ নিতে আহ্বান জানিয়েছিল টিআইবি।

Link copied!