• ঢাকা
  • শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

হরতালে আতঙ্ক থাকলেও স্বস্তিতে ছিলেন রাজধানীবাসী


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: অক্টোবর ২৯, ২০২৩, ০৯:৫২ পিএম
হরতালে আতঙ্ক থাকলেও স্বস্তিতে ছিলেন রাজধানীবাসী
ছবি : সংবাদ প্রকাশ

বিএনপি-জামায়াতের ডাকা দিনব্যাপী (সকাল-সন্ধ্যা) হরতালে রাজধানীর চিত্র স্বাভাবিক থাকলেও বেশ কয়েকটি এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। দীর্ঘদিন পর হরতাল হওয়ায় কিছুটা ‘আতঙ্কে’ ছিলেন রাজধানীবাসী।

রোববার (২৯ অক্টোবর) মতিঝিলের শাপলা চত্বর থেকে পল্টন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, যানচলাচল স্বাভাবিক ছিল এবং নিজ নিজ কর্মস্থলে যেতে পেরেছেন সাধারণ মানুষ। তবে অন্যান্য দিনের তুলনায় এ দিন গণপরিবহনের সংকট ছিল।

পরিবহন চালক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা হয়। তারা জানান, “বিএনপির মহাসমাবেশে সংঘর্ষের ঘটনাকে কেন্দ্র করে অনেকের মাঝেই আতঙ্ক বিরাজ করছে।”

আবু বক্কর সিদ্দিক নামে এক ব্যক্তি বলেন, “অন্যান্য দিনের তুলনায় রাজধানীতে আজকে যানজট নেই। তবে গতকালকে সংঘর্ষের ঘটনায় একটু আতঙ্কিত ছিলাম।”

রনি নামের এক বাসচালক বলেন, “আজকে রাজধানীতে মানুষ আছে। কিন্তু গাড়ি কম চলতেছে। যদি তেমন কোনো ঘটনা শুনতে পাই তবে, গাড়ি না চালিয়ে গ্যারেজে রেখে দেবো।”

যেমন ছিল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়
রোববার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, বিএনপি-জামায়াত ও গণতন্ত্র মঞ্চের ডাকা হরতালের বিপক্ষে স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করছেন দলটির নেতাকর্মীরা। পরে তারা আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি সমাবেশে যোগ দেন।

অপরদিকে, পল্টন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, পুলিশের ক্রাইমসিন ইউনিট বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় সংরক্ষণ করে রেখেছে এবং সেখানে প্রায় ৫ শতাধিক পুলিশ সদস্য টহলরত অবস্থায় ছিলেন।

যাত্রীবাহী বাসে অগ্নিকাণ্ড 
ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, সকাল ৯ থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত  রাজধানীর গুলিস্থান এলাকার বায়তুল মোকারম মসজিদের সমানে, মোহাম্মদপুর এলাকার টাউন হল বাজার এবং বংশাল এলাকার তাঁতি বাজার মোড়ে ক্রমে ক্রমে শিকড়, পরিস্থান ও বিহঙ্গ পরিবহন নামে তিনটি যাত্রীবাহী বাসে অগ্নিকাণ্ড ঘটে। পরে ফায়ার সার্ভিসের ৬টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণ আনে।

গুলিস্থান এলাকার অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে কথা হয় পল্টন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ওবায়দুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, “যাত্রীবেশে বাসে উঠে কেউ এই অগ্নিকাণ্ড ঘটাতে পারে। খবর পাওয়া মাত্র আমরা ছুটে আসি। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। তবে এ ঘটনায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।”

হরতালে আটক-গ্রেপ্তারসহ যা ঘটেছে
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সকাল সাড়ে ৯টায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে আটক করে ডিবি পুলিশ। এছাড়াও পুলিশ সদস্যরা স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীর বনানীর বাসা ঘেরাও করে। পাশাপাশি নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে সংঘর্ষে পুলিশ কনস্টেবল আমিরুল ইসলাম পারভেজকে হত্যার ঘটনায় সরাসরি জড়িত দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়।

মির্জা ফখরুল ইসলামকে আটকের বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন বিএনপির চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান এবং পুলিশ হত্যার ঘটনায় আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান।

ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সংবাদ সম্মেলন
একই দিন বিকেলে হরতালে ঢাকায় মোট ১১টি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি।

টানা ৩ দিন অবরোধের ঘোষণা বিএনপির
সবশেষ মহাসমাবেশে পুলিশি বাধা ও কেন্দ্রীয় নেতাদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ এবং সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে সারা দেশে তিন দিনের সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো। আগামী মঙ্গলবার, বুধবার ও বৃহস্পতিবার সড়ক, নৌ ও রেলপথে এই অবরোধ কর্মসূচি পালন করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
 

জাতীয় বিভাগের আরো খবর

Link copied!