প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, “পুলিশ সব সময় মানুষের পাশে আছে। যেকোনো দুর্যোগেই পুলিশ পাশে থাকে। পাশাপাশি মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগেও পুলিশ ভূমিকা রাখে।”
মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) রাজারবাগ পুলিশ প্যারেড মাঠে পুলিশ সপ্তাহ-২০২৩ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উদ্দেশে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “মানুষের জানমাল বাঁচাবার জন্য পুলিশ নিজের জীবনকেও উৎসর্গ করে। যেকোনো ঝুঁকি নিতে পিছপা হয় না। এটাই হচ্ছে পুলিশের বড় কাজ যা পুলিশ দক্ষতার সঙ্গে করে যাচ্ছে।”
শেখ হাসিনা আরও বলেন, “২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে তাণ্ডব-অগ্নিসন্ত্রাসের ফলে প্রায় সাড়ে তিন হাজারের মতো মানুষ অগ্নিদগ্ধ হয়েছিল। ৫০০ মানুষ মৃত্যুবরণ করে অগ্নি-সন্ত্রাসের কারণে, যেখানে ২৯ জন পুলিশ সদস্য নিহত হয় দগ্ধ হয়ে, আহত হয় আরও অনেকে।”
সরকারপ্রধান বলেন, “এই বিএনপি, জামায়াত-শিবির যেভাবে হত্যা করেছে প্রকাশ্যে দিবালোকে, এভাবে পুলিশের গায়ে কখনো কেউ হাত দেয়? তা কখনো দেখা যায় না। যদিও তা বাংলাদেশে ঘটেছে। এ ছাড়া সাড়ে ৩ হাজার বাস-ট্রাক, ১৯টি ট্রেন, ১১টি লঞ্চ পুড়িয়ে ধ্বংস করে। ৭০টি সরকারি ও ৬ ভূমি অফিস পুড়িয়ে দেয়। সে সময় পুলিশের সদস্যরা জীবন বাজি রেখে এই রকম ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডকে রুখে দিয়ে জনগণের নিরাপত্তা দিয়েছেন। দুর্ভাগ্য হলো, অনেক পুলিশ সদস্য আগুনে দগ্ধ হয়ে বেঁচে আছেন, কিন্তু কারও চেহারা এত বিকৃত হয়েছে যে তারা মানুষের সামনে যেতে পারেন না।”
এর আগে মঙ্গলবার সকাল ১০টায় রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইনসের প্যারেড মাঠে পুলিশ সপ্তাহের অনুষ্ঠানে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী।
প্যারেডের অভিবাদন মঞ্চে প্রধানমন্ত্রীকে সালাম জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
এবারের পুলিশ সপ্তাহের মূল প্রতিপাদ্য—‘বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ, পুলিশ আছে জনতার পাশে’। আজ থেকে শুরু হওয়া পুলিশ সপ্তাহের নানা কর্মসূচি চলবে ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত।
রাজারবাগ পুলিশ লাইনস মাঠে বার্ষিক পুলিশ প্যারেডের মধ্য দিয়ে পুলিশ সপ্তাহ-২০২৩ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পুলিশের বিভিন্ন কন্টিনজেন্ট ও পতাকাবাহী দলের প্যারেড পরিদর্শন এবং অভিবাদন গ্রহণ করেন তিনি।
পুলিশ সদর দপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় দিন ৪ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে ভাষণ দেবেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স সেন্টারে এ অনুষ্ঠান হবে। সন্ধ্যায় ভাষণ দেবেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। এ উপলক্ষে বঙ্গভবনে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।