বিএনপি-জামায়াতের তৃতীয় ধাপে ডাকা দুই দিনের অবরোধের শেষ দিন ছিল বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর)। এদিন দূরপাল্লার পরিবহন চলাচল না করলেও ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক থাকায় কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে যাত্রীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। তবে ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় হওয়ায় কিছুটা ভোগান্তিতেও পড়তে হয় সাধারণ যাত্রীদের।
সরেজমিনে স্টেশনে দেখা যায়, রংপুর এক্সপ্রেস স্টেশন থেকে সকাল ৯টা ১০ মিনিটে রংপুরের উদ্দেশে রওনা হওয়ার কথা থাকলেও সময়মতো স্টেশনে প্রবেশ করতে দেখা যায়নি। পরে ৯টা ৪০ মিনিটের সময় নির্ধারণ করা হলেও সে সময়েও ট্রেনের দেখা মেলেনি। শেষমেশ ৯টা ৫৫টা মিনিটে রংপুর এক্সপ্রেস স্টেশনের তিন নম্বর প্রবেশ করতে দেখা যায়।
রংপুর এক্সপ্রেসের টিকিট কেটেছেন মো. কবির হোসেন। স্টেশনে এসেছেন সকাল সাড়ে ৮টায়। টিকিট কেটে ৯টা ১০ মিনিটের ট্রেন সময় মতো প্ল্যাটফর্মে না এলে পুলিশের হেল্প সেন্টারে যোগাযোগ করেন। পরে জানতে পারেন ট্রেন আসবে ৯টা ৪০ মিনিটে। এরপর ৯টা ৪০ মিনিটে ট্রেনে না এলে কিছুটা অস্বস্তিতে পড়েন তিনি।
কবির হোসেনের সঙ্গে কথা হলে তিনি সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “সকালে ট্রেন থাকায় অনেক আগে এসেছি স্টেশনে। টিকিটও কেটেছি। কিন্তু সময়মতো ট্রেন আসেনি। হেল্প সেন্টারে যোগাযোগ করলাম তারা বললেন ৯টা ৪০ মিনিটে আসবে। কিন্তু ৯টা ৪০ মিনিটেও ট্রেন আসেনি। পরে শিডিউল ডিসপ্লেতে দেখা যায় ৯টা ৫৫ মিনিট সময় ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। অনেক অপেক্ষা শেষে ৯টা ৫৫ মিনিটেই প্ল্যাটফর্ম ৩ নম্বরে ট্রেন এলো।”
কবির হোসেন আরও বলেন, “অবরোধে ট্রেন যাত্রা স্বস্তিদায়ক হবে। তবে শিডিউল বিপর্যয়ে কিছুটা কষ্ট করতে হলো। এখন ট্রেন ভ্রমণ করলে সেই কষ্টটা দূর হবে। দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকায় ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রাখায় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে আমরা সাধুবাদ জানাই।”
ট্রেনের জানালার পাশে বসে মোবাইল ফোনে কথা বলছিলেন রকিবুল ইসলাম। ফোনের অপর প্রান্তে থাকা ব্যক্তিকে রকিবুল ইসলাম বলছিলেন, “চিন্তা করো না, ট্রেনে উঠেছি। খুব তাড়াতাড়াই বাড়ি চলে আসব।”
রকিবুল ইসলাম সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “প্ল্যাটফর্মে ট্রেন আসতে একটু সময় লেগেছে। কেন সময় লাগল এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষ আমাদের কিছু জানায়নি। আমরা শুধু শিডিউল ডিসপ্লেতে নজর রাখছিলাম। শেষমেশ ৯টা ৫৫ মিনিটে প্ল্যাটফর্মে ট্রেন আসে।”
তিনি আরও বলেন, “অবরোধে বাস বন্ধ থাকায় ট্রেনযাত্রা আরামদায়ক হবে। যদিও আমি বেশি বাসে যাতায়াত করি। সে ক্ষেত্রে বাস বন্ধ থাকায় বিকল্প হিসেবে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক থাকায় আমার জন্য উপকার হয়েছে। এ জন্য সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানাই।”
এদিকে অবরোধে সাধারণ যাত্রীদের নিরাপত্তায় কঠোর অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে পুলিশ। স্টেশনের প্রবেশমুখে তাদের অবস্থান করতে দেখা গেছে। এছাড়া প্ল্যাটফর্ম থেকে শুরু করে পুরো স্টেশনেই তাদের উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে।
রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়ের কারণ জানতে চাওয়া হয় বাংলাদেশ রেলওয়ে ঢাকার স্টেশন ম্যানেজার মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ারের কাছে। উত্তরে তিনি সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “ট্রেন ঘুরে আসতে একটু সময় লাগে।”
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমরা স্টেশনে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রেখেছি। সাধারণ যাত্রীদের নিরাপত্তায় পুলিশ মোতায়ানে করা হয়েছে।”