• ঢাকা
  • সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

বিএনপির মদদেই জঙ্গি সংগঠনের নেটওয়ার্ক : কাদের


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: আগস্ট ২৩, ২০২৩, ০৪:০২ পিএম
বিএনপির মদদেই জঙ্গি সংগঠনের নেটওয়ার্ক : কাদের

বিএনপির মদদেই জঙ্গিবাদী সংগঠনের নেটওয়ার্ক পরিচালিত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

বুধবার (২৩ আগস্ট) দুপুরে জঙ্গিবাদ নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের হাস্যকর, নির্লজ্জ বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। দলের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

ওবায়দুল কাদের বলেন, “বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস নিয়ে যে মিথ্যাচার করেছেন, তা দেখে দেশের বিবেকবান মানুষ লজ্জা পেয়েছেন। বিএনপি মহাসচিবের দেওয়া ‘ভারত ও পশ্চিমা বিশ্বকে দেখাতে সরকার দেশে জঙ্গি নাটক করছে’ এই বক্তব্য দেশবাসীর সঙ্গে বিএনপির চরম উপহাস ছাড়া আর কিছু নয়। তাদের কাছে জঙ্গি দমনের প্রচেষ্টাকে নাটক মনে হবে, এটাই স্বাভাবিক। কারণ, বিএনপির মদদেই পরিচালিত হচ্ছে জঙ্গিবাদী সংগঠনের নেটওয়ার্ক।”

কাদের বলেন, “বিএনপির সহায়তা, প্রত্যক্ষ মদদ ও পৃষ্ঠপোষকতায় দেশে উগ্র সাম্প্রদায়িক রাজনীতি এবং সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের ভয়াবহ উত্থান ঘটে। বিএনপির শাসনামলে বাংলাদেশ সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের অভয়ারণ্য হয়ে উঠেছিল। কুখ্যাত জঙ্গি নেতা শায়খ আব্দুর রহমান ও সিদ্দিকুর রহমান বাংলা ভাইয়ের ভয়াবহ তাণ্ডবে প্রকম্পিত হয়ে উঠেছিল গোটা বাংলাদেশ। তখন বিএনপি নেতারা বলেছিল, বাংলা ভাই মিডিয়ার সৃষ্টি। অথচ পরবর্তীতে দিবালোকের মতো স্পষ্ট ও প্রমাণিত হয় বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বের পৃষ্ঠপোষকতায় এবং তৎকালীন প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সরাসরি তত্ত্বাবধানে বাংলা ভাইয়ের সৃষ্টি এবং জঙ্গি সংগঠনসমূহের বিকাশ ঘটেছিল।”

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “রাজশাহীতে প্রশাসনের সহায়তায় প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়া দিয়েছিল বাংলা ভাইয়ের জঙ্গি বাহিনী। জঙ্গি নেতাদের সঙ্গে বিএনপির তৎকালীন মন্ত্রী, এমপিদের প্রকাশ্য বৈঠকের ছবি দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছিল।”

বিবৃতিতে কাদের বলেন, “বাংলাদেশে উগ্র সাম্প্রদায়িক রাজনীতি ও জঙ্গিবাদের বিষবৃক্ষ রোপণ করেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান। ধর্মভিত্তিক রাজনীতির ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীকে রাজনীতিতে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে জিয়াউর রহমান। বিএনপির পৃষ্ঠপোষকতায় দেশে উগ্র সাম্প্রদায়িক রাজনীতির যাত্রা শুরু হয়। জিয়াউর রহমান উগ্র-সাম্প্রদায়িক রাজনীতির যে চারা রোপণ করেছিল, তার পত্নী খালেদা জিয়ার শাসনামলে তা ব্যাপক বিস্তৃতির মধ্য দিয়ে এক মহীরুহে পরিণত হয়।”

ওবায়দুল কাদের বলেন, “বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি রশিদ-ফারুকরা মধ্যপ্রাচ্যের উগ্র সাম্প্রদায়িক অপশক্তির সহযোগিতায় ‘ফ্রিডম পার্টি’ নামে একটি ফ্যাসিবাদী সংগঠন গড়ে তোলে এবং বেগম খালেদা জিয়া ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির ভোটারবিহীন প্রহসনের নির্বাচনে ফ্রিডম পার্টিকে সংসদের প্রধান বিরোধী দলের মর্যাদা প্রদান করে। জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী বিএনপি শাসনামলে ১৯৯২ সালের ৩০ এপ্রিল জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ করে। এই অপশক্তি যশোরের উদীচীর অনুষ্ঠানে বোমা হামলা, খুলনার আহমদিয়া মসজিদে বোমা হামলা, গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় শেখ হাসিনার জনসভাস্থলের কাছে ও হেলিপ্যাডে বোমা পুঁতে রাখা, রমনার বটমূলে হামলা, গোপালগঞ্জের বানিয়ারচরে গির্জায় হামলা ও নারায়ণগঞ্জের আওয়ামী লীগ অফিসে বোমা হামলাসহ একাধিক জঙ্গি হামলা চালিয়েছিল।”

সেতুমন্ত্রী বলেন, “২০০৪ সালের ২১ আগস্ট জননেত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের জাতীয় নেতৃবৃন্দকে হত্যার উদ্দেশ্যে বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান, দুর্নীতির বরপুত্র তারেক রহমানের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয় নারকীয় গ্রেনেড হামলা। গ্রেনেড হামলা মামলার আসামি মুফতি হান্নানসহ একাধিক জঙ্গি নেতার আদালতে দেওয়া জবানবন্দি এবং সাক্ষ্যের ভিত্তিতে প্রমাণিত হয় তারেক রহমানই ছিল এই গণহত্যার মাস্টারমাইন্ড। এ ঘটনায় নারী নেত্রী আইভি রহমানসহ আওয়ামী লীগের ২২ নেতাকর্মী নিহত হন।  বিএনপি-জামায়াত জোট আমলে ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়াকে হত্যা করা হয়েছিল। তাদের হামলা থেকে তৎকালীন ব্রিটিশ হাই কমিশনার আনোয়ার চৌধুরীও রেহাই পায়নি।”

ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, “বিএনপি-জামায়াত জোট আমলে জেএমবি ২০০১ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত দেশে কমপক্ষে ২৬টি হামলা চালায়। ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট দেশের ৬৩ জেলায় ৫০০টি স্থানে একযোগে বোমা হামলা, ময়মনসিংহে ফাইলা পাগলার মাজার ও ময়মনসিংহের ৩টি সিনেমা হলে বোমা হামলা, গাজীপুর, চট্টগ্রাম, নেত্রকোনা, দিনাজপুর, গাইবান্ধাসহ বিভিন্ন স্থানে ১৭ আগস্টের পর অসংখ্য আত্মঘাতী হামলায় বিচারক, আইনজীবী, পুলিশ, সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তাসহ ৩৩ জন নিহত হন, আহত হন ৪ শতাধিক। ২০০৫ সালের ১৪ নভেম্বর ঝালকাঠিতে দুই বিচারক হত্যা করেছিল জঙ্গিরা।”

Link copied!