রাজধানীতে সংঘটিত শনিবারের (২৮ অক্টোবর) রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা বিদেশি কূটনৈতিকদের জানিয়েছে সরকার। পাশাপাশি মার্কিন প্রেসিডেন্টের কথিত উপদেষ্টার কথাও তুলে ধরা হয় তাদের কাছে। কথিত ওই উপদেষ্টার বিষয়ে কনস্যুলার অ্যাক্সেস চেয়েছে মার্কিন দূতাবাস।
সোমবার (৩০ অক্টোবর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ঢাকায় বিদেশি কূটনৈতিক মিশন, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফ করে এসব তথ্য জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, শান্তিপূর্ণ শোভাযাত্রার নাম নিয়ে অপজিশন পার্টি বিএনপি যেসব সংঘাত-সহিংসতা করেছে আমরা তার তীব্র নিন্দা জানাই এবং তাদের অবশ্যই বিচারের আওতায় আনা দরকার। গত কয়েকদিনে তারা যা করেছে, তার মূল উদ্দেশ্য আগামী সংসদ নির্বাচন যেন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা না যায়।
তিনি বলেন, আমরা সেজন্য বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের ডেকেছি। তাদের বলেছি, ২৮ তারিখে এখানে কি হয়েছে। প্রেডিসেডন্ট বাইডেনের মিথ্যা উপদেষ্টা হিসেবে একজন নিয়ে কি কি করা হয়েছে, সেটাও তুলে ধরেছি।
বিএনপিকে নির্বাচনে আসার অনুরোধ জানিয়ে ড. মোমেন বলেন, “আমরা তাদের (বিএনপি) অনুরোধ করব, আপনারা নির্বাচনে আসেন। নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়। আমরা আমাদের শাসনতন্ত্র অনুযায়ী নির্বাচন করব। রাজনৈতিক সহিংসতা করে সরকার পতনের যে চেষ্টা, এটা অলীক। আপনারা নির্বাচনে আসেন।”
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আয়োজিত ব্রিফিংয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, চীন, যুক্তরাজ্য, পাকিস্তান, দক্ষিণ কোরিয়া, তুরস্ক, স্পেন, সিঙ্গাপুর, কানাডা, জার্মান, ইতালি, ফ্রান্স, রাশিয়া, জাপান, নেদারল্যান্ডস, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, ব্রাজিল, অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া, ইইউ, জাতিসংঘ, ওআইসি, বিমসটেকসহ ঢাকায় বিদেশি কূটনৈতিক মিশনসহ জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নেয়।
কূটনীতিকদের ব্রিফিংয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন উপস্থিত ছিলেন।
এসময় আইনমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের বিষয়ে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সে ব্যাপারে আমরা কূটনীতিকদের পুনর্ব্যক্ত করেছি। নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে। কূটনীতিকদের কোনো প্রশ্ন আছে কিনা জানতে চাওয়া হয়েছে। তবে তারা ব্রিফিংয়ে কোনো প্রশ্ন করেননি।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা ২৮ তারিখে যেসব ঘটনা ঘটেছে, ওইদিন তাৎক্ষণিক যেসব ফুটেজ পাওয়া গেছে; সেগুলো বিদেশি মিশনগুলোতে পাঠিয়েছি। আজকে আবার সহিংসতার ভিডিও ফুটেজ ও ছবিসহ তাদের নানা ডকুমেন্ট দেখানো হয়েছে।
বিদেশি কূটনীতিকদের অভিব্যক্তি দেখে বোঝা গেছে, তারা এসব দেখে খুব অবাক হয়েছেন।
নির্বাচন প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে হলে বর্তমানে যে প্রক্রিয়ার কথা বলা হয়েছে, সেটা মেনেই অংশগ্রহণ করতে হবে।