বিএনপি ও জামায়াতের দ্বিতীয় দফায় ডাকা ৪৮ ঘণ্টা অবরোধ শেষে আজ মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) রাজধানীতে তীব্র যানজট তৈরি হয়েছে। নগরীর ছোট-বড় সব সড়কই ব্যক্তিগত গাড়ি ও যাত্রীবাহী পরিবহনের দখলে রয়েছে। যানজটের কারণে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন নগরবাসী।
রাজধানীর কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ব্যক্তিগত গাড়ি ও যাত্রীবাহী পরিবহনের দখলে নগরীর প্রায় সব সড়ক। বিশেষ করে উত্তরা, মহাখালী, ফার্মগেট, শাহবাগ এলাকায় যানজট ছিলো চোখে পড়ার মতো। এ সড়কগুলোতে যানজট বেশি থাকায় বাস থেকে নেমে পায়ে হেঁটেই গন্তব্য যেতে দেখা গেছে অনেককেই।
জাহাঙ্গীর গেট থেকে মহাখালী পায়ে হেঁটে অফিসে যাচ্ছিলেন মো. মুজিবুর হক। পরিবার নিয়ে থাকেন মোহাম্মদপুর। পায়ে হেঁটে অফিসে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “মোহাম্মদপুর বাস স্ট্যান্ড থেকে মহাখালী যেতে দোতালা বাস ছাড়া আর কোনো বাস নেই। দোতালা বাসে চড়ে দীর্ঘ যানজট পার করে কোনো মতো জাহাঙ্গীর গেট পর্যন্ত আসলাম। প্রায় ১ ঘণ্টা সময় শেষ। হাতে আছে আর ২০ মিনিট। এই ২০ মিনিট এই যানজটে বসে থাকলে অফিসে সময় মতো পৌঁছাতে পারবো না। তাই হেঁটেই অফিসে যাচ্ছি, কিছু করার নেই। চাকরি তো বাঁচাতে হবে।”
পায়ে হেঁটে অফিসে যাওয়ার দৃশ্য রাজধানীর উত্তরাতেও চোখে পড়ে। সড়কের পাশ দিয়ে জোড়ে হেঁটেই সামনে এগোচ্ছিলেন মো. করিম শেখ। পেশায় তিনি একজন প্রাইভেট কোম্পানির ঊর্ধ্বতন পদে কর্মরত। হেঁটে যাওয়ার কারণ হিসেবেও তিনি বললেন একই কথা।
তিনি সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “সময় কম, তাই হেঁটে যাই। এমনিই এই মাসে অনেক লেট হয়েছে। আর লেট হলে চাকরি থেকে বেতন কাটা যাবে।”
তিনি আরও বলেন, “রাজনৈতিক কর্মসূচি থাকলে সড়কে অনেক স্বস্তি মেলে। কিন্তু একইসঙ্গে ভোগান্তিও বাড়ে। তখন যেভাবে সড়ক ফাঁকা দেখা যায়, এইভাবে যদি সবসময় সড়ক ফাঁকা থাকে, তাহলে মতিঝিল থেকেও উত্তরা এসে স্বাচ্ছন্দ্যে অফিস করা যায়। অনেক কথা হয়েছে ভাই এখন যেতে হবে, হাতে সময় একেবারেই নেই।”
গাজীপুর টঙ্গী থেকে ভিআইপি বাসে উঠেছেন কাউছার হোসেন। গন্তব্য এয়ারপোর্ট রেলওয়ে স্টেশন। সকাল সাড়ে ৯টার ট্রেনের টিকিট কেটেছেন তিনি। বাড়ি জামালপুর। হাতে সময় কম থাকায় বার বার গাড়ির চালককে দ্রুত যেতে তাগাদা দিচ্ছেন। গাড়ির চালককে দ্রুত যেতে বলায় সহকারীর সাথেও তর্ক করেছেন।
কাউছার হোসেন সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “বাসে উঠেছি ৮টায়। এয়ারপোর্ট থেকে খুব বেশি আধা ঘণ্টা সময় লাগার কথা। সেখানে এখন বাজে ৯টা। তাও আবার এখনো রাজলক্ষীতে বাস। বাসে চালক যাত্রী নেওয়ার জন্য যেখানে-সেখানে বাস থামাচ্ছেন। এমনি যানজট, এরপর যত্রতত্র বাস থামিয়ে যাত্রী নিচ্ছে, সময় নষ্ট হচ্ছে।”