• ঢাকা
  • বুধবার, ০৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১৯ ভাদ্র ১৪৩২, ১১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

হলফনামায় মিথ্যা তথ্য দিলে এমপি পদ হারাতে হবে: ইসি সানাউল্লাহ


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৩, ২০২৫, ০৫:৫৮ পিএম
হলফনামায় মিথ্যা তথ্য দিলে এমপি পদ হারাতে হবে: ইসি সানাউল্লাহ

নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেছেন, কোনো প্রার্থীর হলফনামার তথ্য মিথ্যা প্রমাণ হলে সংসদ নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পরও তাকে সংসদ সদস্য পদ হারাতে হবে।

বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশনার মো. সানাউল্লাহ এ তথ্য জানান।

নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, যদি কোনো প্রার্থী তার হলফনামায় কোনো মিথ্যা তথ্য দিয়ে থাকেন বা এটা যদি প্রতীয়মান হয় নির্বাচন কমিশনের কাছে স্বপ্রণোদিতভাবে বা কোনো প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বা রিপোর্টের ভিত্তিতে, তাহলে নির্বাচন কমিশন সেটা তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে পারবে। নির্বাচিত সংসদ সদস্যকে বা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে তার পাঁচ বছর সময়কালের মধ্যে যেকোনো সময় রিকল করা যাবে। এমনকি তার প্রার্থিতাও চলে যাবে এবং তিনি সংসদ সদস্য পদ হারাবেন।

আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার যে সংজ্ঞা ছিল সেখানে সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীকে যুক্ত করা হয়েছে। বিভিন্ন পোলিং স্টেশনের তালিকা মাঝখানে ইলেকশন কমিশনের কাছে ছিল না। এটা ফেরত আনা হয়েছে। পোলিং স্টেশনের তালিকাটা এখন থেকে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা তৈরি করবেন এবং কমিশন কর্তৃক এটা অনুমোদিত হবে।

আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, আদালত কর্তৃক কাউকে যদি ফেরারি ঘোষণা করা হয়, তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। এটা একটা নতুন অ্যাডিশন। যারা প্রার্থী হতে চাইবেন তাদের সেই সংশ্লিষ্ট কনস্টিটুয়েন্সির কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডিতে থাকা যাবে না চেয়ার হিসেবে বা সদস্য হিসেবে।

মো. সানাউল্লাহ বলেন, এফিডেভিটের মধ্যে নমিনেশন পেপারের সাথে যে জিনিসগুলো অ্যাড করতে হবে, তার মধ্যে নতুন কিছু অ্যাডিশন আছে। সর্বশেষ যে কর বছর আছে, সেই কর বছরের ইনকাম ট্যাক্স রিটার্নটা করতে হবে। আগে লেখা ছিল যে সোর্স অব ইনকাম। এখানে আমরা সোর্স অফ ইনকাম বলতে আরেকটু এডিশন করেছি বোথ এট হোম অ্যান্ড অ্যাব্রড। অর্থাৎ দেশে এবং দেশের বাইরে। একইভাবে স্টেটমেন্ট অব প্রপার্টি এবং ডেট অর্থাৎ সম্পদ এবং তার দেনার যে বর্ণনা ছিল সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর, এটাতেও দেশে এবং দেশের বাইরের কথাটা অ্যাড করা হয়েছে।

ইসি সানাউল্লাহ বলেন, আগে আপনার জামানতের অর্থের পরিমাণ ছিল ২০ হাজার টাকা। এটাকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করা হয়েছে। না ভোটের ব্যাপারে যে সিদ্ধান্তটা হয়েছিল যে এখন থেকে কোথাও একক প্রার্থী থাকলে সরাসরি তাকে বিজয়ী ঘোষণা করা হবে না। তাকে ‘না’ এর বিপক্ষে ভোট করতে হবে। এবং দ্বিতীয়বারও যদি গিয়ে দেখা যায় তফসিল করে নতুনভাবে ঘোষণা করার পরে আবারও একই প্রার্থী হচ্ছে তখন আর ‘না’ ভোট হবে না। কিন্তু একবার অন্ততপক্ষে না ভোটের সাথে সিঙ্গেল প্রার্থীকে কন্টেস্ট করতে হবে। এবং যদি যিনি প্রার্থী, তিনি না এর চেয়ে বেশি ভোট পেয়ে যান তাহলে তো নির্বাচিত হয়ে গেলেন। আর যদি ‘না’ কোনো কারণে বেশি ভোট পায় তাহলে পুনঃতফসিল হবে। সেই পুনঃতফসিলে গিয়েও যদি আবারও দেখা যায় যে, একমাত্র প্রার্থী আছে তাহলে আর ইলেকশন হবে না।  

আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, জোটবদ্ধভাবে নির্বাচন করতে গেলেও দলীয় যে প্রতীক আছে, সেই প্রতীকেই প্রার্থীরা নির্বাচন করবেন। ইলেকশন এজেন্ট হিসেবে নির্বাচনি এজেন্ট পোলিং এজেন্ট না। নির্বাচনি এজেন্ট হিসেবে যাকে নির্বাচন করা হয় তাকেও সংশ্লিষ্ট কনস্টিটুয়েন্সির একজন ভোটার হতে হবে। এটা আগে ছিল না। আগে যেমনটা ছিল যে প্রিসাইডিং অফিসার নিজেই আপনার ভোট বন্ধ করা এবং শুরু করার সিদ্ধান্তটা নিতে পারতেন। মাঝখানে ঢোকানো হয়েছিল যে তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ডাকবেন। তারা দেখবে দেখার পরে তারা একটা প্রতিবেদন দিবে। তারা বললে আবার শুরু করবেন বা বন্ধ করবেন। আমরা এটাকে সরিয়ে দিয়েছি। আগের অবস্থায় ফেরত নিয়ে গিয়েছি এটা। অর্থাৎ প্রিসাইডিং অফিসারই সর্বেসর্বা হবেন। কেন্দ্রে তিনি সিদ্ধান্ত নিবেন যে, তিনি ভোট কন্টিনিউ করবেন নাকি বন্ধ করবেন।

ইসি সানাউল্লাহ বলেন, ইভিএম সংক্রান্ত সকল প্রভিশন বিলুপ্ত করা হয়েছে। পোস্টাল ব্যালট অ্যাড করা হয়েছে। প্রবাসী বাংলাদেশিরা ভোট দিতে পারবেন। সরকারি কাজে কর্মরত যারা আছেন, যারা ওইদিন তার সংশ্লিষ্ট নির্বাচনি কনস্টিটুয়েন্সিতে থাকতে পারবেন না তারা ভোট দিতে পারবেন। নির্বাচন কাজের সাথে যারা সম্পৃক্ত আছেন তারা ভোট দিতে পারবেন এবং যারা যে কোনো নিরাপত্তা হেফাজতে আছেন, জেলে হোক বা অন্য কোথাও হোক, তারা ভোট দিতে পারবেন।

নির্বাচন কমিশনার মো. সানাউল্লাহ বলেন, সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে রাজনৈতিক আচরণবিধি ভঙ্গের মধ্যে যেগুলো পড়ে এগুলো কোনো কিছু করা যাবে না এবং রাজনৈতিক দলসমূহ যেসব প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করবেন সেসব প্ল্যাটফর্মের তালিকা এবং লিংকের যে ডিটেইলস সেগুলো নির্বাচন কমিশনে আগের থেকেই নির্বাচন কমিশন তথা রিটার্নিং অফিসারের মাধ্যমে আগে থেকে জানাবেন।

Link copied!