বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচন অনুষ্ঠান ও ইউনিয়ন পরিষদে ৪৩ জন প্রার্থী নির্বাচন না করেই চেয়ারম্যান পদে অভিষিক্ত হওয়া, নির্বাচনকে ম্লান করে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার।
বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর নির্বাচন ভবনের নিজ কার্যালয়ে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত পৌরসভা ও ইউপি নির্বাচন সম্পর্কে আমার কথা শিরোনামে লিখিত বক্তব্যে মাহবুব তালুকদার এ কথা বলেন।
মাহবুব তালুকদার বলেন, “৯টি পৌরসভায় তিনজন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মেয়র নির্বাচিত হন। নির্বাচন যেহেতু অনেকের মধ্যে বাছাই, সেহেতু বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পদে আসীন হওয়াকে নির্বাচিত হওয়া বলা যায় কি? বহুদলীয় গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচনে বহুদলের অংশগ্রহণ একান্ত প্রয়োজন।”
মাহবুব তালুকদার বলেন, “১৭ থেকে ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আমি ছয়দিনের জন্য ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করি। কয়েকজন সাংবাদিক এ সময় অনুষ্ঠিত ১৬০টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ও ৯টি পৌরসভা নির্বাচনে আমার সাফল্য ও ব্যর্থতা জানতে চান। এ সংক্ষিপ্ত সময়ে আকস্মিকভাবে নির্বাচনী ব্যবস্থাপনার পরিবর্তন সাধন সম্ভব নয়। তারপরও কিছু কথা থেকে যায়। উল্লিখিত নির্বাচনে তিনজনের প্রাণহানী ঘটেছে। এটা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। আমি সর্বদা বলে এসেছি জীবনের চেয়ে নির্বাচন বড় নয়। তবু ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে হাড্ডা-হাড্ডি লড়াইয়ে সহিংসতা রোধ করা গেলো না। নির্বাচনে ঘটনা বা দুর্ঘটনা যা-ই হোক না কেন, নির্বাচন কমিশনের ওপরই দায় এসে পড়ে।”
এ সময় নির্বাচন কমিশনার বলেন, “নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের কারণে একজন সংসদ সদস্যকে সতর্কবার্তা পর্যন্ত পাঠানো হয়েছে। প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন নির্বাচনের কারণ বিশ্লেষণ করে সে বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ অনিবার্য। ভোটারদের নির্বাচন বিমুখতাও আমার কাছে গণতন্ত্রের জন্য অশনিসংকেত মনে হয়। এর সঙ্গে নির্বাচন প্রক্রিয়া ও নির্বাচন ব্যবস্থাপনা জড়িত। এ অবস্থা থেকে উত্তরণ সার্বিকভাবে নির্বাচন কমিশনের ওপর নির্ভর করে না।”
মাহবুব আরও বলেন, “রাজনৈতিক সমঝোতা ব্যতীত এ অবস্থার পরিবর্তন সম্ভব নয়। ১৫ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবসে মিডিয়াসহ সংশ্লিষ্ট সবার নীরবতা আমাকে হতাশ করেছে।”
মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, আমরা কি গণতন্ত্রের অভিযাত্রায় শামিল হতে অনীহা প্রকাশ করছি? যোগ করেন তিনি।

































