সপ্তাহ না যেতেই রাজধানীর নিউমার্কেটের ভেতর হাঁটাচলার রাস্তা আবারও দখলকারীদের কবলে চলে গেছে। সপ্তাহখানেক আগে মার্কেটের ভেতর অভিযান পরিচালনা করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় অভিযানে অবৈধভাবেভাবে গড়ে ওঠা শতাধিক দোকানপাট ও বেশ কিছু স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এতে বড় একটি অংশ দখলদারমুক্ত হয়। অভিযানের পর এলাকাবাসীসহ পথচারীরা আনন্দ প্রকাশ করে ডিএসসিসিকে ধন্যবাদ জানায়। তবে সরেজমিনে দেখা যায়, মার্কেটের স্থায়ী দোকানের সামনের খালি জায়গা দখলমুক্ত হওয়ার পরেও আবার অবৈধভাবে ব্যবসা পরিচালনা শুরু করেছে একটি চক্র। সাধারণ মানুষের অভিযোগ, মার্কেটের ব্যবসায়ী ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রচ্ছায়ায় আবার সেই পুরোনো চেহারায় ফিরে এসেছে নিউমার্কেটের পরিবেশ। এ অবস্থার ফলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মার্কেটে আসা ক্রেতারা। তারা অভিযোগ করে বলেন, ফুটপাত অবৈধভাবে দখলের পেছনে সরকার দলীয় স্থানীয় নেতাকর্মী ও প্রভাবশালীদের প্রত্যক্ষ মদত রয়েছে। ফলে অভিযান পরিচালনা করেও ফুটপাত দখলমুক্ত রাখা যাচ্ছে না।

নিউমার্কেটে আসা এক ক্রেতা সংবাদ প্রকাশকে বলেন, এমন অভিযান আগেও হয়েছিল। কিন্তু অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি। উচ্ছেদের পরের দিন থেকেই ফুটপাত আবারও দখলে চলে গেছে।
একই কথা জানিয়ে আরেক ক্রেতা হাসান আলী সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “নিউমার্কেটে এলে এক দোকান থেকে অন্য দোকানে যাওয়ার কোনো সুযোগ থাকে না। প্রতিটি দোকানের সামনে বসানো হয়েছে দোকান। বেশি দুর্ভোগ হয় বাচ্চাদের নিয়ে এলে। টেনশনে থাকি, কখন কী হয়?”
মার্কেটের ভেতর হাঁটার জায়গা দখল করা ব্যবসায়ী মো. শফিক সংবাদ প্রকাশকে জানান, জায়গার জন্য তিনি নিয়মিত চাঁদা দেন। তবে যাকে চাঁদা দেন, তাকে তিনি চেনেন না। সন্ধ্যার দিকে একজন এসে টাকা তুলে চলে যান।
উচ্ছেদের পর পর কেন এমন দখল আর দখলকারীদের বিরুদ্ধে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তা নিয়ে কথা বলেন ডিএসসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. মুনিরুজ্জামান। তিনি সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “উচ্ছেদের পর এমন দখল হয়ে যাওয়া দুঃখজনক। জায়গা পুনরায় দখল হওয়ায় আমরা খুব শিগগির মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করব।”
“এখন থেকে সিটি করপোরেশনের ফুটপাত থেকে শুরু করে অবৈধ সব স্থাপনা উচ্ছেদে আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করব”, বললেন এই কর্মকর্তা।
দখলকারীদের বিরুদ্ধে মো. মুনিরুজ্জামান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “অবৈধ দখল হওয়া জায়গায় উচ্ছেদের পর পুনরায় যাতে দখল করতে না পারে, সে বিষয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কোনোভাবেই জনসাধারণের হাঁটার জায়গা দখল করে অবৈধভাবে ব্যবসা পরিচালনা করা যাবে না।”