• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ, ২০২৫, ৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৯ রমজান ১৪৪৬

‘আ.লীগের গণতন্ত্র হচ্ছে সারা জীবন ক্ষমতায় থাকা’


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৪, ২০২১, ০৪:১৩ পিএম
‘আ.লীগের গণতন্ত্র হচ্ছে সারা জীবন ক্ষমতায় থাকা’

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “তাদের গণতন্ত্রের মূল কথা হলো, আমরা (আওয়ামী লীগ) সারা জীবন ক্ষমতায় থাকবো, তোমরা সারা জীবন প্রজা হয়ে থাকবে।”

বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এক আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল এ কথা বলেন। এদিন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি হলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সমবায় দলের ১১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

এ সময় প্রেস ক্লাবে রাজনৈতিক সভা বন্ধের প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, “সেদিন প্রেস ক্লাবে নব্বইয়ের আন্দোলনের নেতাকর্মীদের সম্মেলন ছিল। সেখানে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি বক্তব্য দিয়েছিলেন। এটা তাদের সহ্য হয়নি। তারপর থেকে দেখলাম ওবায়দুল কাদের, তথ্যমন্ত্রী, আওয়ামী লীগের নেতারা বলতে শুরু করল, এটা ঠিক নয়, এটা বেআইনি। আরে ভাই এত ভয় কীসের? আট হাজার মাইল দূর থেকে একটা বক্তব্য দিয়েছে তাতে ভয় পাচ্ছেন কেন? তার কথা প্রচার করা যাবে না, তার ছবি দেখানো যাবে না, তাকে বলতে দেওয়া যাবে না? আমি গতকালও (বুধবার) বলেছি, তারা প্রতিনিয়ত দুঃস্বপ্ন দেখে, এই বুঝি বিএনপি এসে গেলো। দিনের বেলায় ভয় পায়, এই বুঝি আমাদের চেয়ার গেলো, দেশের এই অবস্থায় গণতন্ত্র সুষ্ঠুভাবে চলতে পারে না।”

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, “নির্বাচন বাংলাদেশে ভুলেই গেছে মানুষ। কেন নির্বাচন হয় না এখানে? গত জাতীয় নির্বাচন ২০০১ সালে হয়েছিল, এরপর কোনও নির্বাচন হয়নি। ২০০৮ সালে যেটি হয়েছে সেটি অবৈধ সরকারের অধীনে নির্বাচন। ২০১৪ সালে ১৫৪ জনকে ঘোষণা করে দেওয়া হলো তারা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত। আর ২০১৮-তে দিনের ভোট রাতে হয়েছে।”

এছাড়া বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে চিকিৎসকরা অত্যন্ত চিন্তিত বলে দাবি করে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “গতকাল (বুধবার) বিকেলে আমি দেশনেত্রীকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলাম। তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা অত্যন্ত চিন্তিত। কারণ তার অনেকগুলো অসুস্থতা আছে। এগুলোর সামগ্রিক যে চিকিৎসা আছে, যেগুলো অ্যাডভান্স সেন্টার ছাড়া এখানে সম্পন্ন হবে না। তারপরও চিকিৎসকরা চেষ্টা করছেন।”

বিএনপির মহাসচিব বলেন, “যে কারণে আমরা বারবার বলছি- খালেদা জিয়াকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। আপনারা (সরকার) তো প্রতিহিংসামূলকভাবে মিথ্যা মামলা দিয়ে জোর করে তাকে আটকে রেখেছেন।” 

খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে বিএনপি সরকারের কাছে কোনো দয়া চায় না উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমাদের কথা পরিষ্কার- জামিন খালেদা জিয়ার প্রাপ্য। এই মামলাতে তিনি অবশ্যই জামিন প্রাপ্য। তাকে জামিন দিতে হবে এবং বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দিতে হবে। এটাই জনগণের দাবি। এই দাবি আমাদের আদায় করতে হবে।”

এছাড়াও সম্প্রতি কুমিল্লায় পূজামণ্ডপের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা নিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, “সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ বাংলাদেশ। আমরা হাজার বছর ধরে এখানে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করছি। আসল জায়গা থেকে অন্যদিকে দৃষ্টি নেওয়ার জন্য এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। আমার দেশের সংকট কী? গণতন্ত্রহীনতা আমাদের সংকট। কথা বলার অধিকার নেই। আমাদের সংকট- কোনও জায়গায় দাঁড়াতে দেয় না, মানুষের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। একটা ভয়াবহ ফ্যাসিবাদী দানবের মতো শাসন চেপে বসে আছে আমাদের ওপরে।”

এ সময় আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, শামসুর রহমান, জাতীয়তাবাদী সমবায় দলের সভাপতি অধ্যক্ষ নূর আফরোজ বেগম জ্যোতি, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদুসহ প্রমুখ।  


 

Link copied!