প্রাচীন যুগে প্রাণীরাও খাবার খেয়েই বেঁচে থাকতো। সেই যুগে প্রাণীরা কী খাবার খেত, কীভাবে জীবনধারণ করতো, কী পরে থাকতো- এমন সব বিষয় নিয়ে বারবার গবেষণা চলছে। সেই গবেষণার ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি খোঁজ মিলেছে বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীনতম খাবারের। বৈজ্ঞানিকদের একটি আন্তর্জাতিক দল দাবি করছেন, ৫৫০ মিলিয়ন বছরের পুরনো জীবাশ্মে বিশ্বের প্রাচীনতম `খাবার`-এর সন্ধান মিলেছে।
পৃথিবীর প্রাচীনতম কিছু প্রাণকে `এডিয়াকারান বায়োটা` বলা হয়। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির গবেষকরা এডিয়াকারান বায়োটা পর্বের একটি জীবাশ্ম পরীক্ষা করেছেন। জীবাশ্মটি ২০১৮ সালে রাশিয়ায় পাওয়া যায়। এটি এখনও পর্যন্ত আবিষ্কৃত প্রাচীনতম জীবাশ্মের একটি। যা বহুকোষী জীব ছিল। রাশিয়ার উত্তর-পশ্চিমে শ্বেত সাগরের কাছের পাহাড় থেকে কিম্বারেলা এবং ডিকিনসোনিয়া জীবাশ্ম সংগ্রহ করা হয়েছিল।
গবেষক দল দাবি করেন, কীভাবে খুব প্রাচীন প্রাণীরা বেঁচে ছিল সেই বিষয়ে নতুন তথ্য উঠে এসেছে। স্লাগ-সদৃশ কিম্বারেলার একটি জীবাশ্ম নমুনা পরীক্ষা করা হয়। প্রাণীর অন্ত্রে সংরক্ষিত ফাইটোস্টেরলের অণু সেখানে সনাক্ত হয়েছে। এই রাসায়নিক পদার্থটি উদ্ভিদে পাওয়া যায়। যা প্রমাণ করে ওই প্রাণী সেই সময় সমুদ্রের তলদেশ থেকে শ্যাওলা এবং ব্যাকটেরিয়া খেয়ে বেচে থাকত। এই শ্যাওলাগুলো ছিল পুষ্টি সমৃদ্ধ। যা কিম্বারেলার বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
গবেষক দল জানায়, শ্যাওলাগুলো ছিল পুষ্টি সমৃদ্ধ। যার কারণে এডিয়াকারা বায়োটার অঙ্গ এত বড় হতো। কিম্বারেলা সম্ভবত এডিয়াকারান যুগের সবচেয়ে উন্নত প্রাণীদের মধ্যে অন্যতম। এর একটি মুখ, একটি অন্ত্র এবং খাবার হজমের ক্ষমতা ছিল।
গবেষকরা আরও জানান, কিম্বারেলা সমুদ্রের তলদেশের শৈবালকে খাবার হিসেবে গ্রহণ করতো সেই প্রমাণ তাদের অন্ত্রেই পাওয়া গেছে। অন্ত্রে পাওয়া অণু পরীক্ষা করার পর বিষয় আরও নিশ্চিত হওয়া যায়। এমন এটা প্রমাণিত যে, ওই প্রাণীরা কী খেত এবং কীভাবে খাবার হজম করত।
পৃথিবীর প্রাচীনতম প্রাণীদের মধ্যে আরও একটি ছিল `ডিকিনসোনিয়া`। এর মুখ বা অন্ত্র ছিল না। দৈর্ঘ্যে এরা ছিল ১.৪ মিটার। শরীরে পাঁজরের মতো চিহ্ন ছিল। এসব জীবের ওপর পরীক্ষা করেই বিশ্বের প্রাচীনতম খাবারের সন্ধান মিলেছে বলে দাবি গবেষকদের।
সূত্র: সিএনএন