• ঢাকা
  • বুধবার, ২২ জানুয়ারি, ২০২৫, ৮ মাঘ ১৪৩০, ২৩ রজব ১৪৪৬

দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ লাভের দোয়া


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ১৪, ২০২১, ০২:৫৭ পিএম
দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ লাভের দোয়া

জুবাইর ইবনু নুফাইর (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘সুরা আল-বাকারাকে আল্লাহ তাআলা এমন দুটি আয়াত দ্বারা শেষ করেছেন, যা আমাকে আল্লাহর আরশের নিচের ভান্ডার থেকে দান করা হয়েছে। তাই তোমরা এ আয়াতগুলো শিখবে। তোমাদের স্ত্রীদেরও শেখাবে। কারণ এ আয়াতগুলো হচ্ছে রহমত, (আল্লাহর) নৈকট্য লাভের উপায় ও (দীন দুনিয়ার সকল) কল্যাণলাভের দোয়া।’

এ দুটি আয়াত রাসুল (সা.)-কে মিরাজের রাতে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সঙ্গে আসমানে দান করা হয়েছে।

পবিত্র কোরআনের দ্বিতীয় সূরা বাকারা। এ সুরার শেষ দুটি আয়াত বিশেষ ফজিলত ও তাৎপর্যপূর্ন। দুনিয়ার নানা বিপদা-আপদ থেকে হেফাজত লাভে দুটি আয়াতের এই আমল ঢাল স্বরুপ। যে বান্দা জান্নাত লাভে স্বচেষ্ট সূরা বাকারা এর শেষ দুটি আয়াতের নিয়মিত তেলাওয়াত করবে তার জন্য জান্নাতের পথও সুগম করবে।

রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করেছিলেন, হে আল্লাহর রাসুল (সা.), কোরআনের কোন সূরা সবচেয়ে বেশি মর্যাদাবান? তিনি বললেন, "সূরা এখলাস।" এরপর আবার বললেন, কোরআনের কোন আয়াতটি মর্যাদাবান? তিনি বললেন, "আয়াতুল কুরসি।" এরপর আবার বলেন, হে আল্লাহর নবী, আপনি কোন আয়াতকে পছন্দ করেন, যা দ্বারা আপনার ও আপনার উম্মত লাভবান হবে। নবীজি (সা.) বললেন, "সূরা বাকারার (২৮৫-২৮৬ নম্বর) শেষ দুটি আয়াত।"

এ দুটি আয়াতের অর্থ 

আ’উযু বিল্লাহিমিনাশ-শাইতানির রাযীম। বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম 

آمَنَ الرَّسُولُ بِمَا أُنْزِلَ إِلَيْهِ مِنْ رَبِّهِ وَالْمُؤْمِنُونَ كُلٌّ آمَنَ بِاللَّهِ وَمَلَائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ لَا نُفَرِّقُ بَيْنَ أَحَدٍ مِنْ رُسُلِهِ وَقَالُوا سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا غُفْرَانَكَ رَبَّنَا وَإِلَيْكَ الْمَصِيرُ
لَا يُكَلِّفُ اللَّهُ نَفْسًا إِلَّا وُسْعَهَا لَهَا مَا كَسَبَتْ وَعَلَيْهَا مَا اكْتَسَبَتْ رَبَّنَا لَا تُؤَاخِذْنَا إِنْ نَسِينَا أَوْ أَخْطَأْنَا رَبَّنَا وَلَا تَحْمِلْ عَلَيْنَا إِصْرًا كَمَا حَمَلْتَهُ عَلَى الَّذِينَ مِنْ قَبْلِنَا رَبَّنَا وَلَا تُحَمِّلْنَا مَا لَا طَاقَةَ لَنَا بِهِ وَاعْفُ عَنَّا وَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَا أَنْتَ مَوْلَانَا فَانْصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ

অর্থঃ
২৮৫. রসূল বিশ্বাস রাখেন ঐ সমস্ত বিষয় সম্পর্কে যা তাঁর পালনকর্তার পক্ষ থেকে তাঁর কাছে অবতীর্ণ হয়েছে এবং মুসলমানরাও সবাই বিশ্বাস রাখে আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফেরেশতাদের প্রতি, তাঁর গ্রন্থসমুহের প্রতি এবং তাঁর পয়গম্বরগণের প্রতি। তারা বলে আমরা তাঁর পয়গম্বরদের মধ্যে কোন তারতম্য করিনা। তারা বলে, আমরা শুনেছি এবং কবুল করেছি। আমরা তোমার ক্ষমা চাই, হে আমাদের পালনকর্তা। তোমারই দিকে প্রত্যাবর্তন করতে হবে।

২৮৬. আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যাতীত কোন কাজের ভার দেন না, সে তাই পায় যা সে উপার্জন করে এবং তাই তার উপর বর্তায় যা সে করে। হে আমাদের পালনকর্তা, যদি আমরা ভুলে যাই কিংবা ভুল করি, তবে আমাদেরকে অপরাধী করো না। হে আমাদের পালনকর্তা! এবং আমাদের উপর এমন দায়িত্ব অর্পণ করো না, যেমন আমাদের পূর্ববর্তীদের উপর অর্পণ করেছ, হে আমাদের প্রভূ! এবং আমাদের দ্বারা ঐ বোঝা বহন করিও না, যা বহন করার শক্তি আমাদের নাই। আমাদের পাপ মোচন কর। আমাদেরকে ক্ষমা কর এবং আমাদের প্রতি দয়া কর। তুমিই আমাদের প্রভু। সুতরাং কাফের সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদের কে সাহায্যে কর। (আমিন)

সাহাবি আবু মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘সূরা বাকারার শেষে এমন দুটি আয়াত রয়েছে, যে ব্যক্তি রাতের বেলা আয়াত দুটি তিলাওয়াত করবে, তার জন্য এ আয়াত দুটোই যথেষ্ট। অর্থাৎ রাতে কোরআন মজিদ তিলাওয়াত করার যে হক রয়েছে, কমপক্ষে সূরা বাকারার শেষ দুটি আয়াত তিলাওয়াত করলে তার জন্য তা যথেষ্ট।’

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বর্ণনা করেন যে রাসুলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেন, ‘যখন আমাকে সিদরাতুল মুনতাহায় নিয়ে যাওয়া হয়, তখন তিনটি জিনিস দান করা হয়। ১. পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, ২. সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত, ৩. উম্মতের মধ্যে যারা শিরক করে না, তাদের কবিরা গুনাহ মাফ হওয়ার সুসংবাদ।’

পবিত্র কোরআন মজিদ মানব জাতীর জন্য আল্লাহ পাকের রহমত। পবিত্র কোরআন এর প্রতিটি সূরা প্রতিটি আয়াতই ফজিলতপূর্ণ। বিশেষ করে সূরা বাকারা এর আলোচিত শেষ দুটি আয়াত। কাজেই অযথা সময়ক্ষেপন না করে আল্লাহর দেয়া ফজিলতপূর্ণ এই দুটি আয়াত রাসুলুল্লাহ সাঃ এর নির্দেশ মোতাবেক আমল করে দুনিয়া ও আখিরাতের সব মুসিবত, বিপদ-আপদ, রোগ-শোক অতিক্রম করে শান্তিময় ও সুখের জীবনলাভে স্বচেষ্ট হই। আমিন!

Link copied!