• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ২৮ মাঘ ১৪৩০, ১২ শা'বান ১৪৪৬

কোরবানির গুরুত্বপূর্ণ কিছু শর্ত


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ১৫, ২০২১, ০২:২২ পিএম
কোরবানির গুরুত্বপূর্ণ  কিছু শর্ত

আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য পশু কোরবানি করে ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা।  রোজার সময় যেমন মুসলিম ধর্মালম্বীরা আল্লাহ্ র সন্তষ্টির জন্য সাওম বা রোজা পালন করেন তেমনি কুরবানির সময় কুরবানি দেন।পবিত্র কোরআন শরীফে আল্লাহ তাআলা একাধিক স্থানে শুধু তার জন্য কোরবানি বা ত্যাগের বহিঃপ্রকাশ করেছেন এভাবে-

 فَصَلِّ لِرَبِّكَ وَانْحَرْ
‘অতএব আপনার পালনকর্তার উদ্দেশ্যে নামাজ পড়ুন এবং কেরবানি করুন।’ (সুরা কাউসার : আয়াত ২)

 قُلْ إِنَّ صَلاَتِيْ وَنُسُكِيْ وَمَحْيَايَ وَمَمَاتِيْ للهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ
‘(হে রাসুল! আপনি) বলুন, অবশ্যই আমার নামাজ, আমার কোরবানি, আমার জীবন, আমার মৃত্যু বিশ্বজগতের প্রতিপালক আল্লাহর জন্যই।’ (সুরা আনআম : আয়াত ১৬২)

কোরবানি বিশুদ্ধ হওয়ার কিছু শর্ত রয়েছে। এর মধ্যে প্রধান দুইটি শর্ত হলো- কোরবানির জন্য প্রয়োজন ইখলাস তথা একনিষ্ঠতা অর্থাত্ কোরবানি হবে শুধুমাত্র আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য এবং কোরআন-সুন্নাহর দিকনির্দেশনা অনুযায়ী হওয়া। কোরবানিতে একনিষ্ঠতার প্রয়োজনীয়তা কতবেশি তা কুরআনের বর্ণনা থেকেই সুস্পষ্ট। আল্লাহ তাআলা বলেন-

আল্লাহর কাছে কখনো ওগুলির (কোরবানির জন্তুর) গোশত পৌঁছে না এবং রক্তও না; বরং তাঁর কাছে পৌঁছে তোমাদের তাকওয়া (সংযমশীলতা); এভাবে তিনি ওগুলিকে তোমাদের অধীন করে দিয়েছেন যাতে তোমরা আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা কর এই জন্য যে, তিনি তোমাদেরকে পথ প্রদর্শন করেছেন। আর তুমি সুসংবাদ দাও সৎকর্মশীলদেরকে। (সুরা হজ : আয়াত ৩৭)'

অন্যদিকে আল্লাহ তাআলা ও তাঁর রাসুলের নির্দেশিত বিধান অনুযায়ীই কোরবানি করতে হবে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যে তার প্রতিপালকের সাক্ষাৎ কামনা করে, সে যেন সৎকর্ম করে এবং তার প্রতিপালকের ইবাদাতে কাউকে শরিক না করে। (সুরা কাহফ : আয়াত ১১০)'

কোরবানি কারা দিবে-

১০ জিলহজ ফজর থেকে ১২ জিলহজ সূর্যাস্ত পর্যন্ত যে প্রাপ্ত বয়স্ক সুস্থ মস্তিষ্কসম্পন্ন পুরুষ ও নারীর কাছে প্রয়োজনের অতিরিক্ত ৭ ভরি সোনা অথবা সাড়ে ৫২ তোলা রূপা বা এর সমপরিমাণ সম্পদ থাকবে তার ওপর কোরবানি করা ওয়াজিব। টাকা-পয়সা, সোনা-রূপার অলঙ্কার, ব্যবসায়িক পণ্য, প্রয়োজনের অতিরিক্ত জমি, সৌখিন বা অপ্রয়োজনী আসবাবপত্র এসব কিছুর মূল্য কোরবানির নেসাবের ক্ষেত্রে হিসাবযোগ্য।

কোরবানির করার বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ কিছু শর্তাবলী-

  • ইসলামী শরিয়ত অনুযায়ী উট, গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা কোরবানি দেওয়া যাবে।

  • পশুর উপর কোরবানি দাতার পরিপূর্ণ মালিকানাসত্ত্ব থাকতে হবে।
  • কোরবানির উদ্দেশ্যে কেনা পশু শারীরিকভাবে সুস্থ থাকতে হবে।
  • কোরবানির পশু হৃষ্টপুষ্ট, অধিক গোশত সম্পন্ন, নিখুঁত ও দেখতে সুন্দর হওয়া উত্তম।
  • কোরবানির পশু পরিপূর্ণ বয়সের হতে হবে। উটের সর্বনিম্ন ৫ বছর, গরু-মহিষের ২ বছর, ছাগল-ভেড়া-দুম্বার ১ বছর হতে হবে।
  • কোরবানি পশু কোরবানি ছাড়া অন্য কোনো কাজে ব্যবহার করা যাবে না।
  • পশুর মালিক যদি মারা যায়, তবে তার ওয়ারিশরা কোরবানি দিবে।
  • পশু থেকে কোনো ধরনের উপকার ভোগ করা যাবে না।
  • পশুর পশম বা চামড়া সদকা দেওয়া যাবে। নিজের কোনো কাজে ব্যবহার করা যাবে না।
  • কোরবানির নিয়তে পশু কেনা ও জবেহ করতে হবে।
  • অবহেলা বা অযত্নের কারণে পশু চুরি বা হারিয়ে গেলে আবারও পশু কিনে কোরবানি দিতে হবে।
Link copied!